প্রামাণ্য চিত্রটির নাম দেয়া হয়েছে অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান। বলা হচ্ছে আল-জাজিরা অনুসন্ধান। প্রামাণ্য চিত্রটির ব্যাপ্তি এক ঘণ্টা ২১ সেকেন্ড। বাংলাদেশ সরকার নিয়ে কিছু ‘চাঞ্চল্যকর’ তথ্য উন্মোচনের দাবী করা হয়েছে এই প্রামাণ্য চিত্রে। কিন্তু প্রামাণ্য চিত্রটি একটু গভীর ভাবে দেখলে দেখা যাবে, এর পরতে পরতে অসঙ্গতি, বিভ্রান্তি এবং মিথ্যাচার। বিপুল ব্যায়ে নির্মিত এই প্রামাণ্য চিত্রের কোথাও দেখানো হয়নি, দুর্নীতি হয়েছে।
কোন ব্যাংক একাউন্ট দেখানো হয়নি, যেখানে অস্বাভাবিক ভাবে টাকা ঢুকেছে। কোন ব্যক্তি নেই, যিনি বলেছেন যে, হারিছ বা তার সংশ্লিষ্ট কাউকে ঘুষ দিয়েছেন। বায়বীয় এক প্রামাণ্য চিত্রে, কিছু অভিযোগের বৃত্তান্ত উপস্থাপিত হয়েছে, সেই অভিযোগ গুলো যে মনগড়া এবং প্রতিহিংসার গর্ভে জন্ম নেয়া তা ঐ প্রতিবেদনেই ফুটে উঠেছে।
আসুন দেখে নেই এই তথা কথিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের অসঙ্গতি, বিভ্রান্তি এবং মিথ্যাচার গুলো:
১. সাইকো প্যাথ কিভাবে তথ্যের উৎস হন: এক ঘণ্টার এই প্রতিবেদনে কথিত দুর্নীতির একমাত্র সাক্ষী হলেন ‘হারিছ’। প্রতিবেদনের শুরুতেই যাকে পরিচয় করা হয়েছে একজন সাইকো প্যাথ হিসেবে। একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির কথাতেই এতো দেশ ঘুরে এই প্রতিবেদন।
২. তাসনিম খলিল এবং ডেভিড বার্গম্যান কেন: এই প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব পেয়েছেন যুদ্ধাপরাধীদের লবিস্ট, তারেকের উপদেষ্টা ডেভিড বার্গম্যান। তিনি এই অনুসন্ধানে ছিলেন না, তার এবং নেত্র নিউজের তাসনিম খলিলের উপস্থিতির মাধ্যমেই এই প্রতিবেদনের অসঙ্গতি প্রকাশিত হয়েছে।
৩. কে এই সামি: পুরো প্রতিবেদনে অভিযোগকারী হলো সামি। সামির চেহারা দেখানো হয়েছে। এমনকি হারিছের ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবেও তাকে উপস্থাপিত করা হয়েছে। কিন্ত তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। সামি কে দিয়েই এই প্রতিবেদনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। অথচ এই সামির পুরো নাম সামিউল আলম। যে আসলে হাওয়া ভবনের পরিচিত মুখ। ২০০৭ সালে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ হিসেবে তালিকাভুক্ত। এখন তারেকের বিজনেস পার্টনার।
৪. কোথায় দুর্নীতি হলো: মিথ্যাচারের ভরপুর এই প্রতিবেদনে দেখানো হয়নি কোথায় দুর্নীতি হয়েছে। কে টাকা দিলো, কে টাকা পেলো। বলা হয়েছে, এমপি নির্বাচনের সময় নাকি কোটি টাকা মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দিয়েছে। কোন মনোনয়ন প্রত্যাশী টাকা দিলো, কাকে দিলো, এসব নেই। কেবল কিছু কল্পিত কথা, কিছু ভাড়াটে লোকের মুখ দিয়ে বলানো হয়েছে।
৫. ব্যাংক একাউন্টের হদিস নেই: মিথ্যাচারের এই প্রতিবেদনটিতে ঘুষ বা দুর্নীতির টাকার কোন তথ্য উপাত্ত নেই। যাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, তার ব্যাংক একাউন্ট কোন হিসেবও নেই। শুধু মনগড়া কিছু মিথ্যাচার দিয়ে চরিত্র হননের এক কাল্পনিক প্রয়াশ মাত্র।
অপ সাংবাদিকতার একটা বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে আল-জাজিরার এই প্রতিবেদনটি।