নজরুল ইসলাম,কুতুবদিয়া(৩১ ডিসেম্বর) :: কুতুবদিয়া ভূমি অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নাজির কাম অফিস সহকারী নিতাই দাশের ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছে।
ভিডিও-তে এই অফিসের কয়জনকে ঘুষ দিতে হয়? কাকে কত টাকা দিতে হয়? তার হিসাব দিয়ে নির্ধারিত ফি.এর অতিরিক্ত সব টাকা গুনে বুঝে নিতে দেখা যায় নিতাই দাশকে। গ্রাহকের প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত টাকা কেন দিতে হয় তাও বলে দেন এই কর্মচারী। ভিডিও-তে নিতাই দাশকে ষ্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায় এবং তাদের কথোপোকথনও শুনতে পাওয়া যায়?
দীর্ঘদিন ধরে ওই কর্মচারী বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ থাকলেও ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তার মুখোশ উন্মুচন হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তার নিয়োগকৃত দালাল সুকুমারের মাধ্যমে লেনদেন না করলে ফাইল পর্যন্ত গায়েব করে ফেলতো এই কর্মচারী। এমনকি বিভিন্ন অযুহাতে ফাইল বাতিল করারও ভয় দেখাতেন এ কর্মচারী।
শাহাবউদ্দিন, পারভেজ, নজরুল, মিনহাজ, আবুল কালাম, আবদুল করিমসহ একাধিক ভুক্তভোগী জানান, কুতুবদিয়া ভূমি অফিসের নাজির কাম অফিস সহকারী নিতাই বাবু ও তৎকালীন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) গিয়াস উদ্দিনের ঘুষ বাণিজ্যের কারনে কুতুুবদিয়া ভূমি অফিসে নামজারি খতিয়ান সৃজনের জন্য নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে তাদের। তাদের একছত্র ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল দ্বীপের সাধারণ জনগণ।
জানা যায়, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজের কারণে তাদের একজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার পাশাপাশি পাশর্^বর্তী উপজেলা মহেশখালীতে এবং অন্যজনকে কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বদলীমূলক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের জানান, একই অফিসে দীর্ঘদিন ধরে চাকুরীর সুবাধে স্থানীয় কিছু দালালের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের এক প্রকার জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভূমি অফিসের এসব অসৎ কর্মচারী। অন্যদিকে এসব অসৎ কর্মচারীর কারনে সুনাম নষ্ট হচ্ছে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের।
উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবদুছ ছত্তার বলেন, এসিল্যান্ড সুপ্রভাত চাকমা কুতুবদিয়া ভূমি অফিসকে ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন এবং তাঁর এ উদ্যোগ সর্বমহলে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ও প্রশংসা কুড়িয়েছে।
যে সব অসৎ কর্মচারী এই মহৎ উদ্দেশ্যকে ব্যহত করতে ঘুষ ও দুর্নীতিতে লিপ্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুপ্রভাত চাকমা বলেন- ‘আমি যোগদানের পর থেকে কুতুবদিয়া ভূমি অফিসকে দুর্নীতি, ঘুষ ও দালাল মুক্ত করার জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করেছি এবং সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রমাণসহ অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
Posted ১১:২৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta