কক্সবাংলা রিপোর্ট(৭ ফেব্রুয়ারি) :: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবারের রায়কে কেন্দ্র করে অনেকটা আঁচ করা যাচ্ছে নিশ্চিত দণ্ডিত হতে যাচ্ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এ কারণে পর্যটন জেলা কক্সবাজারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি মাঠে নামানো হয়েছে ৫ প্লাটুন বিজিবিও(প্রতি প্লাটুনে ৩৫ জন) । যদিও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘ভয় নেই’ বলা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের এত আশ্বাসের পরেও জেলাজুড়েই অজানা আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
আর রায়কে ঘিরে জেলার সরকারদলীয় নেতাদের মাঠে থাকার ঘোষণায় এ আতঙ্ক আরও বেড়েছে। তবে সাধারণ মানুষের মতে, বিএনপি নেতাকর্মীদের আটকের পরেও পুলিশ মাঠ ফাঁকা করতে পারেনি। ফলে নেতিবাচক রায়ে যেকোন সময় দলবেঁধে মাঠে নেমে যেতে পারে বিএনপি ও তার সমর্থকরা।
কিন্তু প্রশাসনের প্রস্তুতি ও আশ্বাসের পরেও সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও ভীতি-আতঙ্ক দেখা গেছে। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে অনেকেই বাড়ি বসে থাকার আগাম প্রস্তুতিও নিয়েছেন। অনেককে বলতে শোনা গেছে-‘কাল বেরই হবো না, টিভিতে সব দেখে নেব। কী দরকার বাইরের ঝামেলার।বুধবার শহরের বেশ কিছু সাধারণ মানুষ, পরিবহন নেতা, রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এ অজানা আতঙ্কের কথা জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির শীর্ষ এক নেতা বলেছেন, যদি রায় দেয়া হয় তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিবাদ করা হবে। বেগম খালেদা জিয়া বংলাদেশের তিন বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ও জনগণের প্রিয় নেত্রী। তার সাথে দেশের জনগণ রয়েছে। এ কারনে বিএনপি’র নেতাকর্মীদেরকে কোনভাবেই দমানো যাবে না। আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে কক্সবাজারের রাজপথে অবস্থান নিবো।
এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেছেন- খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি জামায়াত দেশব্যাপী ২০১৪ সালের ন্যায় নাশকতা সৃষ্টির পায়তারা চালাচ্ছে তাদের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা কক্সবাজারের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি আরও বলেন,বৃহস্পতিবার আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে যার যার এলাকায় অবস্থান করবো। তবে সিনিয়র নেতারা থাকবেন পার্টি অফিসে। যদি কেউ বিশৃংখলা করতে চায়, তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিহত করা হবে।
অপরদিকে কক্সবাজারের ৮ উপজেলার প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,কড়া নিরাপত্তার চাদরে পুরো জেলাকে যেন ঢেকে দেয়া হয়েছে। র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি বিজিবিও মাঠে থাকছে। বাড়তি নিরাপত্তা, বাড়তি আয়োজন ও প্রস্তুতিও রয়েছে পুলিশের। ইতিমধ্যে জেলা পুলিশের অভিযানে নাশকতাসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার চেষ্টার অভিযোগে এ পর্যন্ত ২৮ জনকে আটক করা হয়েছে। যার মধ্যে ২২ জনই বিএনপি এবং ৬ জন জামায়াত নেতাকর্মী রয়েছেন।
আর জেলা পুলিশের দাবি, রায় পরবর্তী সহিংসতা হতে পারে এমনটি বিবেচনায় রেখে সম্ভাব্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। যেসব জায়গায় সহিংসতা হতে পারে সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি কারা এগুলো ঘটাতে পারে তাদেরও একটি সম্ভাব্য তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ওই তালিকা আইন প্রয়োগকারী প্রতিটি সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার ড.এ এইস এম ইকবাল হোসেন জানান,৮ ফেব্রুয়ারির রায়কে কেন্দ্র করে জেলার সার্বিক আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তৎপর রয়েছে সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যে কোন বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা ঠেকাতে পুলিশ টহল বৃদ্ধি, বিভিন্ন স্থানে চেক পোষ্টসহ বিভিন্ন প্রদক্ষেপ গ্রহন করেছে পুলিশ।প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে তারা।
Posted ২:৩৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta