কক্সবাংলা ডটকম(১৬ নভেম্বর) :: প্রতিটি শেয়ারের বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর থেকে ১০ শতাংশ কমে ব্লক মার্কেটে শেয়ার বিক্রি করা যাবে, এই নির্দেশনা জারির পরদিন পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান হলো।
বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কায় বাংলাদেশের অর্থনীতি গিয়ে গুজব-গুঞ্জনে টালমাটাল পুঁজিবাজারে সপ্তাহের আগের তিন কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর প্রধান সূচক পড়েছিল ১৩৫ পয়েন্ট। বাজারে আতঙ্কের মধ্যে বুধবারও একপর্যায়ে ১৭ পয়েন্ট পতনে বিনিয়োগকারীর হতাশা আরও বাড়ার শঙ্কা দেখা দেয়।
তবে ক্রয় চাপে শেষ পর্যন্ত সূচক ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় লেনদেন। দিনের সর্বনিম্ন অবস্থান থেকে বেড়েছে ৫২ পয়েন্ট।
দিন শেষে সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫২ পয়েন্ট, যা গত সোমবারের সমান।
গত ৩১ জুলাই বেঁধে দেয়া ফ্লোর প্রাইসে তিন শ কোম্পানির ক্রেতাশূন্যতার মধ্যে মঙ্গলবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এই দরের চেয়ে কমে শেয়ার বিক্রির সুযোগ দেয়। তবে মূল বাজার নয়, ব্লক মার্কেটে ফ্লোর প্রাইসের ১০ শতাংশ কমে শেয়ার বিক্রি করা যাবে।
এই নির্দেশনা নতুন নয়। ২০২০ সালে করোনার সময় ফ্লোর প্রাইসেও যখন বিপুলসংখ্যক কোম্পানির শেয়ারের ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছিল না, তখনও এই সুযোগ দেয়া হয়। তারপরেও চাপে থাকা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এই নির্দেশনা নতুন করে উৎকণ্ঠার জন্ম দেয়। তবে যা ভাবা হয়েছিল, তার বিপরীত আচরণ করেছে পুঁজিবাজার।
আগের দিন ২৪টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছিল ৬১ কোম্পানির দর। সোমবার ১৮টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর কমে ৬৮ কোম্পানির। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ২৫টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ৮৭টি।
বুধবার বেড়েছে ৭৬ কোম্পানির শেয়ারদর, কমেছে ১১টির। আগের দিনের দরে ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছে ২৩৪টি কোম্পানি। আর ৬৮ কোম্পানির কোনো ক্রেতা ছিল না।
ছয়টি কোম্পানির দর বেড়েছে ৯ শতাংশের বেশি, চারটির দর বাড়ে ৮ শতাংশের বেশি। আরও ৫টি করে কোম্পানির দর ৭ ও ৬ শতাংশ, ৫টির দর ৫ শতাংশ, ১০টির দর ৪ শতাংশ, ৯টির দর ৩ শতাংশ, ১১টির দর বাড়ে ২ শতাংশ।
এসব কোম্পানির বেশির ভাগ গত কয়েকদিন ধরে দর হারাচ্ছিল ঝড়ের বেগে।
তবে শেয়ারদর বাড়লেও লেনদেন আরও কমে পাঁচ শ কোটির নিচে নেমেছে। হাতবদল হয়েছে কেবল ৪৬৮ কোটি ৫১ লাখ ৫৬ হাজার টাকার শেয়ার। গত ২৪ অক্টোবর কারিগরি জটিলতায় কয়েক ঘণ্টা লেনদেন বিঘ্নিত হওয়ার দিনটি বাদ দিলে ৩১ জুলাই ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের পর এটি সর্বনিম্ন লেনদেন।
সূচক ছয় হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যাওয়ার পর ২৮ জুলাই বিএসইসি দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস দেয়ার ঘোষণা দেয়। সেদিন লেনদেন ছিল ৪৪১ কোটি ৭৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর দর বৃদ্ধির শীর্ষে সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
জানা গেছে, কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ফলে ডিএসইর শীর্ষ দশ তালিকার প্রথম অবস্থানে রয়েছে সিনোবাংলা।
দরবৃদ্ধি তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ার দর কমেছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ।
তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা ইজেনারেশন লিমিটেডের শেয়াদর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হলো-চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, এপেক্স ফুডস লিমিটেড, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, আইটি কনসালট্যান্টস লিমিটেড এবং দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর দর পতনের প্রথম শীর্ষে আছে সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
জানা গেছে, বুধবার (১৬ নভেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ফলে ডিএসইর টপটেন লুজারের তালিকার প্রথম অবস্থানে রয়েছে সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেডের শেয়াদর কমেছে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ।
ক্ষতির তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হলো- প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লাস্টিক লিমিটেড।
Posted ৪:৫০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta