শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

গ্যাসের দাম বৃদ্ধি : ১০ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ভোক্তার ঘাড়ে, বিক্ষোভ-হরতালে যাচ্ছে বামজোট

রবিবার, ৩০ জুন ২০১৯
208 ভিউ
গ্যাসের দাম বৃদ্ধি : ১০ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ভোক্তার ঘাড়ে, বিক্ষোভ-হরতালে যাচ্ছে বামজোট

কক্সবাংলা ডটকম(৩০ জুন) :: নতুন অর্থবছরের পরিকল্পনা অনুযায়ী এলএনজি আমদানিতে ১৮ হাজার ২৭০ কোটি টাকার ঘাটতি তৈরি হবে। এই ঘাটতি মেটাতে ভোক্তার পকেট থেকে ১০ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা তোলা হবে। আর সরকার ভর্তুকি দেবে ৭ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কার্যালয়ে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।সব মিলিয়ে গ্যাসের দাম গড়ে ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়িয়েছে কমিশন, যা আগামীকাল ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্যাসের দাম বাড়ানোয় গ্রাহকের কাছ থেকে পাওয়া যাবে ৮ হাজার ১৬০ কোটি টাকা। বাকি ২ হাজার ৪২০ কোটি টাকা জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গ্রাহকের গ্যাসের বিল থেকেই একটা অংশ জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল ও গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে যায়। এরমধ্যে জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিলের টাকা সরকার এলএনজি আমদানিতে বিনিয়োগ করছে।

এবার ৭ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা এলএনজি আমদানিতে ভর্তুকি দেবে সরকার। যদিও এলএনজি আমদানি পর্যায়ে ১৫ ভাগ ভ্যাট এবং ২ ভাগ অগ্রিম পরিশোধযোগ্য উৎসে কর রয়েছে। জ্বালানি বিভাগ এই কর প্রত্যাহারের আবেদন করলেও অর্থ বিভাগ তা আমলে নেয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বিইআরসি চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম জানান, ভোক্তার জন্য সুখবর এটুকুই—তারা আগে গ্যাস পেতো না, এখন তারা গ্যাস পাবে। তবে শিল্প গ্রাহকেরা দাম দিলেও সঠিক গ্যাস পাচ্ছেন না— এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা এজন্য মিনিমাম চার্জ তুলে দিচ্ছি। একই সঙ্গে সব শিল্প গ্রাহক ইভিসি মিটার যেন পান সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

গ্যাসের বর্ধিত দাম অনুযায়ী এক চুলার জন্য গ্রাহকদের ৭৫০ টাকার স্থলে ৯২৫ টাকা এবং দুই চুলার গ্রাহকদের ৮০০ টাকার স্থলে ৯২৫ টাকা করে গুনতে হবে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে দাম বাড়ানো হয়েছে ২২ ভাগ। এছাড়া আবাসিকের প্রি-পেইড মিটারে গ্যাসের দাম ৩৮ ভাগ বাড়িয়ে ৯ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৬০ পয়সা করা হয়েছে। পাশাপাশি সিএনজির দাম ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গ্যাসের গড় দাম ঘনমিটারে ৭.৩৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯.৮০ টাকা করা হয়েছে।

এর বাইরে প্রতি ঘনমিটার বিদ্যুতের জন্য গ্যাসের দাম ৩ টাকা ৬১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪ টাকা ৪৫ পয়সা। অর্থাৎ দাম বেড়েছে ৪১ ভাগ। ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ উৎপাদনের (ক্যাপটিভ পাওয়ার) জন্য প্রতি ঘনমিটার ৯ টাকা ৬২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা করা হয়েছে। অর্থাৎ ৪৪ ভাগ বেড়েছে। সার কারখানায় ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটারে ২ টাকা ৭১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৪৫ পয়সা করা হয়েছে (৬৫ ভাগ বৃদ্ধি)।

এছাড়াও শিল্পে ব্যবহারের জন্য প্রতি ঘনমিটার ৭ টাকা ৭৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা ৭০ পয়সা (৩৮ ভাগ বৃদ্ধি); চা বাগানে ব্যবহারের জন্য প্রতি ঘনমিটারে বাড়ানো হয়েছে ৪৪ ভাগ। এখন থেকে এই খাতে গ্যাসের দাম হবে ১০ টাকা ৭০ পয়সা। বাণিজ্যিক খাতে হোটেল-রেস্তোরাঁয় ৩৫ ভাগ বেড়ে হয়েছে ২৩ টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে কমিশন জানায়, শুধু ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়ায়নি কমিশন। তাদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৭ টাকা ৪ পয়সাই রয়েছে।

এদিকে বর্তমানে যে ন্যূনতম চার্জ রয়েছে তা প্রত্যাহার করেছে কমিশন। আবাসিক বাদে অন্য গ্রাহকদের ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটারে মাসিক অনুমোদিত লোডের বিপরীতে শূন্য দশমিক ১০ টাকা হারে ডিমান্ড চার্জ আরোপ করেছে কমিশন। সিএনজির দামের ক্ষেত্রে যে দাম বাড়ানো হয়েছে তার মধ্যে ফিড গ্যাসের মূল্যহার ৩৫ টাকা এবং অপারেটর মার্জিন ৮ টাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে কমিশন জানায়।

গত ফেব্রুয়ারিতে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো কমিশনের কাছে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। তারা গড়ে ১০২ ভাগ বাড়ানোর প্রস্তাব করে। এরপর মার্চে গণশুনানি করে কমিশন। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়। ওই বছরের মার্চ ও জুলাই থেকে দুই ধাপে তা কার্যকর করার কথা থাকলেও মার্চে কার্যকর হয়। আর জুলাই মাসের দাম হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত করা হয়।

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-হরতাল ডাকবে বামজোট

গ্যাসের দাম ৩২.৮ শতাংশ বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে পারে বাম রাজনৈতিক দলগুলো। রবিবার (৩০ জুন) গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পরই দলগুলো প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে, অনৈতিকভাবে সরকার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। অনতিবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে এ সপ্তাহেই হরতাল দিতে পারে, এমন কথা জানিয়েছেন একাধিক বাম নেতা।

বাম নেতারা জানান, আগামী (১ জুলাই) সোমবার রাজধানীতে বিক্ষোভ করবে কয়েকটি দল। এর মধ্যে গণসংহতি আন্দোলন বিকাল সাড়ে চারটায় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করবে। বিস্তারিত কর্মসূচি ঠিক করতে সোমবার সকাল ১১টায় বৈঠকে বসবে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এ জোটে সিপিবি-বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টিসহ আটটি দল রয়েছে। এ বৈঠক থেকেই কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে, এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন জোটের দুই অন্যতম নেতা।

জোটের শরিক বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানো করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে যে গণশুনানি হয়, সেটিও ‘তামাশায়’ পরিণত করা হয়েছে। বিতরণ সংস্থা এবং গ্যাসের সরবরাহ যারা করে, তারা কোনও যুক্তি দেখাতে পারেনি কেন গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে আমরা হরতালসহ কঠোর কর্মসূচির কথা ভাবছি। কাল (সোমবার) আমাদের জোটের বৈঠক রয়েছে। সেখানেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ সাইফুল হক জোর দিয়েই বলেন, ‘সরকারকে এ ব্যাপারে ব্যাক করতে হবে।’

এর আগে, রবিবার বিকালে (৩০ জুন) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশন জানায়, গ্যাসের দাম ৩২.৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ১ জুলাই থেকে এই দাম কার্যকর হবে। এই দাম অনুযায়ী এক চুলার জন্য গ্রাহকদের ৭৫০ টাকার বদলে ৯২৫ টাকা এবং দুই চুলার গ্রাহকদের ৮শ’ টাকার বদলে ৯৭৫ টাকা করে গুনতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আবাসিকে প্রিপেইড মিটারে প্রতি ঘনমিটার ১২.৬০ টাকা, এক চুলার গ্যাসের দাম ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯২৫ টাকা ও দুই চুলার গ্যাসের দাম ৮শ’ টাকা থেকে ৯৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইতোমধ্যে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে গিয়ে বিক্ষোভ করেছে বাসদ। আগামীকাল সাড়ে চারটার দিকে প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ডেকেছে গণসংহতি আন্দোলন।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘গ্যাসের এমন দাম বাড়ানো অযৌক্তিক ও সরকারের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত। দেশের মাটি ও সাগরের নিচের গ্যাস উত্তোলন ও অনুসন্ধান না করে, দুর্নীতি ও সিস্টেম লস বন্ধ না করে, বেশি দামি ও আমদানি নির্ভর এলএনজির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ানো হচ্ছে এবং এলএনজি ব্যবসায়ীদের সুবিধা করার জন্য গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ১০২ ভাগ মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় বিতরণ কোম্পানিগুলো। এরপরেই মার্চ মাসে বিইআরসি গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর জন্য গণশুনানির আয়োজন করে। সেখানে মূল্য বাড়ানোর পক্ষে যৌক্তিক কারণ তারা উত্থাপন করতে পারেনি। সমস্ত যুক্তি-তর্ক-মতামত-বিশ্লেষণকে ঠেলে ফেলে দিয়ে অত্যন্ত স্বেচ্ছাচারী কায়দায় আজ বিকালে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

 

208 ভিউ

Posted ১১:০৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ৩০ জুন ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com