মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া :: হবে হবে করেও হলোই না কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল। গত ১০ বছর আগে উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন হলেও এরমধ্যে আর কোন সম্মেলন অনুষ্টিত হয়নি।
কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ সর্বশেষ সম্মেলনের দুটি তারিখ নির্ধারন করলেও, ওই সময়ে সম্মেলন করতে ব্যর্থ হয়েছে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ। এতে তৃণমুলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মাঝে বাড়ছে হতাশা। আদৌ কি সম্মেলন কবে হবে তাও নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা !
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মিজবাউল হক বলেন, ২০১২ সালের ২৩ ফেব্রæয়ারি চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামীলীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্টিত হয়। প্রায় ১০ বছর অতিবাহিত হতে চলছে এই কমিটির মেয়াদ।
এরমধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে ২০২২ সালের ২রা মার্চ চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন আয়োজনের নির্দেশ দেন। ওই নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন আয়োজনে ব্যর্থ হয়।
পরে চলতি বছরের ২রা মার্চ কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এম.পি’র কার্যালয়ে যায় কক্সবাজার ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের এই নেতা চলতি বছরের ২৩ মে সম্মেলন আয়োজনের জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু তাও আয়োজন করতে ব্যর্থ হয় চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা।
তিনি আরও বলেন, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের অধিনে পৌরসভা আওয়ামীলীগসহ ১২টি ইউনিয়ন রয়েছে। এসব ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন যথাক্রমে-ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা, সুরাজপুর-মানিকপুর ও বরইতলী সম্মেলন শেষ করতে পারেনি উপজেলা আওয়ামীলীগ। এছাড়াও চকরিয়া পৌরসভার সম্মেলনও অনুষ্টিত হয়নি। ৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার সম্মেলন শেষ করতে না পারায় সম্মেলন আয়োজন করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আশা করেছিলাম কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহামুদ স্বপন এমপি নির্দেশ অনুযায়ি সর্বশেষ ২৩ মে উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্টিত হবে। কিন্তু এই সম্মেলন আয়োজন করতে ব্যর্থ হয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতারা। এরমধ্যে চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি নিয়েও রয়েছে বিতর্ক।
গত পৌরসভা নির্বাচনের সময় চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা জাহেদুল ইসলাম লিটু নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করায় তাকে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি-সম্পাদক কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নির্দেশে বহিষ্কার করেন। ওই বহিষ্কার আদেশ নিয়েও চলছে নানা বিতর্ক। চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলা হলেও তা নিয়েও ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি-সম্পাদকের মধ্যেও নানা বিষয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। সব মিলিয়ে কখন সম্মেলন হবে তা বলা মুষকিল।
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও চলতি কমিটির সিনিয়র সদস্য পরিচ্ছন্ন রাজরনীতিবিদ এ.এস.এম আলমগীর হোছাইন বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর পর সম্মেলন করার নিয়ম থাকলেও তা হয়নি গত ১০ বছরেও।
সর্বশেষ ২৩ মে সম্মেলনের কথা থাকলেও ৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার সম্মেলন বাকি রয়ে গেছে। তাছাড়া চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও চকরিয়া-পেকুয়া (কক্সবাজার-১) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম উমরা হজ্ব পালন করতে বর্তমানে স্বস্ত্রীক সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। সব মিলিয়ে ২৩ মে সম্মেলন হচ্ছেনা সেটা নিশ্চিত। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা কি সিদ্বান্ত নেয় তার উপর নির্ভর করছে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সস্মেলন ও কাউন্সিল।
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার সম্মেলন বাকি থাকার কারণে সম্মেলন আয়োজন করতে পারিনি। আশা করছি আগামী মাসে অর্থাৎ চলতি বছরের জুন মাসে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন ও কাউন্সিলর আয়োজন করতে পারবো।
Posted ১:৩৬ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৫ মে ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta