এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া(১২ নভেম্বর) :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চকরিয়া-পেকুয়া আসনে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা পোষন করেছেন নবীন-প্রবীণ একাধিক প্রার্থী। কয়েকদিন ধরে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমাদানের উৎসব চলছে রাজধানী ঢাকাস্থ দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে। এ উৎসবে সামিল হয়েছেন চকরিয়া-পেকুয়া আসনে সম্ভাব্য বিপুল পরিমাণ নেতা।
অভিযোগ উঠেছে, বেশিরভাগ নেতা দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীর পক্ষে জনমতের পালা ভারী করতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। আবার অনেকে নিয়েছেন প্রতিপক্ষের সঙ্গে আঁতাত করে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন অন্য দলের হাতে তুলে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে। গোজামিলের এসব চক্রান্তের ভেতরেও সত্যিকার অর্থে নৌকাকে বিজয়ী করার বাসনা নিয়ে দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন দলের মনোনয়নে চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের পরপর তিনবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আজিমুল হক আজিম।
তিনি বলেন, আমি ২০০৩ সালে বিএনপি জামায়াত জোট আমলে শত প্রতিকুল পরিবেশ অতিক্রম করে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে প্রথমবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। অথচ একদিন অনুষ্ঠিত কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে তাঁর বড়ভাই চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক নুরুল হকের নিশ্চিত জয় ছিনতাই করা হয়। এরপর ২০১১ ও সর্বশেষ ২০১৬ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে জনগনের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি জামায়াত জোট আমলে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্র ক্ষমতায় নিজের দল আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ছিলনা, সেই কারনে এলাকার উন্নয়ন কর্মকা- তরান্বিত করতে বেগ পেতে হয়েছে। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসলে স্থানীয় মহিলা সাংসদ আলহাজ সাফিয়া খাতুনের সহযোগিতায় এলাকার উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তাতে বেশ সফলও হয়েছি। ইউনিয়নের প্রতিটি জনপদে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। এরপর ২০১৬ সালে ততৃীয় মেয়াদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন।
আজিমুল হক বলেন, শুধু ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নয়, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নবাসি বিপুল ভোটে আওয়ামীলীগের প্রার্থী তথা নৌকাকে বিজয়ী করেছেন। প্রতিটি নির্বাচনে বিএনপি নিকটতম হয়েছে। পাশাপাশি পাশের কাকারা ইউনিয়নেও বিপুল ভোটে প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বিজয়ী হন। তিনটি সংসদ নির্বাচনে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বিজয়ী হন। তারমধ্যে সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন একটি।
আজিমুল হকের দাবি, ভোটার হওয়ার পর থেকে আমি ও আমার পরিবারের প্রতিটি সদস্য অনুষ্ঠিত প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়েছে। চকরিয়া উপজেলার যে কটি আওয়ামী পরিবার আছে তারমধ্যে আমাদের পরিবার একটি। টানা ১৫বছর ধরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগনের কাজ করছেন আজিম চেয়ারম্যান। এরআগে তাঁর বড়ভাই প্রয়াত চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক নুরুল হক চেয়ারম্যান জনগনের জন্য আমৃত্যু কাজ করে গেছেন।
দীর্ঘদিনের জনসেবার অনুপ্রেরণা থেকে তিনি আরও বড়পরিসরে জনগনের সেবা করতে চান। সেইজন্য একাদশ নির্বাচনে চকরিয়া-পেকুয়া (কক্সবাজার-১) আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে দাখিল করেছেন। তিনি দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছেন।
চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা ও লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের তিনটি অঞ্চলের একমাত্র প্রার্থী দাবি করে আজিমুল হক চেয়ারম্যান বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছি। যদি জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এ পদে সুযোগ দেন তা হলে আমার চ্যালেঞ্চ হবে, ১৯৭৩ সালের পর যতগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে সেই থেকে চকরিয়া-পেকুয়া আসনে আওয়ামীলীগ কোনটিতে বিজয়ের স্বাদ পায়নি। সেই ব্যর্থতা কাটিয়ে ইনশাল্লাহ আমি এই আসনটি জনগনের বিপুল ভোটে নৌকাকে বিজয়ী করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে সক্ষম হবো।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ থেকে আমাকে মনোনয়ন দেয়া না হলেও কোন দু:খ নেই। তবে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে চকরিয়া-পেকুয়বাসির পক্ষে আবেদন জানাই এখানে দলের নেতাকর্মীদের মনোবাসনা পুরণ ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামীলীগ থেকে যে কোন একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হোক। বর্তমানে একাদশ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক। তাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা যাচাই করে একজন যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হলে আমি ও আমার পরিবার আগের মতো সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ তথা নৌকাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবো।
তবে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ইতোমধ্যে যারা মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলবো, আমি ঘোষনা দিয়েছি সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ তথা নৌকাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবো। আর আপনারাও ঘোষনা দেন মনোনয়ন না পেলেও নিজের এলাকায় (ইউনিয়ন বা পৌরসভা) একাদশ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে অকুন্ঠ চিত্রে নৌকাকে বিজয়ী করবেন। যদি এই যোগ্যতা না থাকে তা হলে প্রতিযোগিতা করে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা কী প্রয়োজন!।
Posted ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta