বুধবার ২৭শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ২৭শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

চকরিয়া বিএমচরে শতবছরের পুকুর দখলে চেষ্ঠা, এলাকাবাসির বিক্ষোভ-মানববন্ধন

রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১
229 ভিউ
চকরিয়া বিএমচরে শতবছরের পুকুর দখলে চেষ্ঠা, এলাকাবাসির বিক্ষোভ-মানববন্ধন

এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নে শতবছরের প্রাচীন একটি পুকুর দখলে নিয়ে মাটি ফেলে ভরাট চেষ্ঠার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর পুকুরটি ভরাট চেষ্ঠার খবর শুনে আতঙ্কে ভুগছেন ওই এলাকার অন্তত তিন শতাধিক পরিবার। এ ঘটনায় কয়েকদিন আগে ভুক্তভোগী এলাকাবাসি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। তবু দখলচেস্টা অব্যাহত থাকায় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসি তাদের শতবছরের ব্যবহৃত পুকুরটি রক্ষায় শনিবার ১৩ ফেব্রুয়ারী বেলা ১১টার দিকে বিএমচর ইউনিয়নের বহদ্দারকাটা স্টেশনে বিক্ষোভ পরবর্তী পুকুরে গিয়ে মানববন্ধন করেছে এলাকার দুই শতাধিক বিক্ষুদ্ধ নারী-পুরুষ।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন স্থানীয় বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জিয়াদুল ইসলাম সেলিম, এলাকাবাসি শওকত ওসমান, জাহেদুল ইসলাম বাদল, আক্তার আহমদ সওদাগর, আবুল কালাম মাঝিসহ অনেকে। মানববন্ধনে একাত্বতা প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, শিক্ষক, সমাজকর্মী এবং এলাকাবাসি।

মানববন্ধনে এলাকাবাসি ও বক্তারা বলেছেন, উপজেলার ভেওলা মানিকচর মৌজার বিএস ২১২ খতিয়ানের বিএস ১২২০ দাগের ২৫ শতক এবং ১২২১ দাগের ২৮শতক জমি মুলত পুকুর শ্রেণীর। উল্লেখিত পুকুর ছাড়াও আরও বেশ কিছু পরিমাণ এজমালী সম্পত্তির মালিক লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলার বাসিন্দা আবদুর রহমান চৌধুরী এবং বিএমচরের উত্তর বহদ্দারকাটা গ্রামের মাহমুদা বেগম, আরিফুল ইসলাম, নুর নাহার, আলমগীর, সেলিম উদ্দিন, আবু বক্কর ও নুরুল আলমসহ মোট ১২জন মালিক।

এলাকাবাসির দাবি, উল্লেখিত এজমালি সম্পত্তির মধ্যে মসজিদ, গ্রামের রাস্তা এবং ‘চেরাইঙ্গা পুকুর’ নামের শতবছরের একটি পুকুর বিদ্যমান। ১২জন মালিকের অনাপত্তিতে সেই ৮যুগের বেশি সময় ধরে ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের উত্তর বহদ্দারকাটা এলাকার চারশত পরিবারের মধ্যে অন্তত তিনশত পরিবার উল্লেখিত এজমালি সম্পত্তিতে স্থাপিত মসজিদে নামাজ আদায়, রাস্তা দিয়ে চলাচল এবং পুকুরে গোসল ছাড়াও প্রাত্যহিক কাজে ব্যবহার করে আসছেন। প্রায় ২০বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে পুকুরটির দুই দিকে জনসাধারণের ব্যবহারের সুবিধার্থে দুইটি জলসিঁিড়ও নির্মাণ করা হয়েছে।

মানববন্ধনে স্থানীয় আক্তার সওদাগর ও আবুল কালাম মাঝি বলেন, উল্লেখিত এজমালি সম্পত্তির ১২জন মালিকের মধ্যে ১১জন স্থানীয়। তাদের পরিবারও উল্লেখিত মসজিদ, রাস্তা এবং পুকুরটি এলাকাবাসির সঙ্গে ব্যবহার করে আসছেন। সেইকারণে জনগনের জন্য উন্মুর্থ করে দেওয়া সম্পত্তির অংশ কোনদিন ফেরত দাবি করেননি উল্লেখিত ১১জন মালিক।

এলাকাবাসির অভিযোগ, ১১জন মালিক এলাকাবাসির সঙ্গে থাকলেও অপর একজন মালিক লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলার বাসিন্দা আবদুর রহমান চৌধুরীর ওয়ারিশ (মেয়ে) রফিকুন্নেছা প্রকাশ রাফেয়া বেগম কাছ থেকে গোপনে পুকুরের অংশের জমি কিনে নিয়েছেন উত্তর বহদ্দারকাটার মৃত আবদুল খালেকের ছেলে নুরুল আমিন প্রকাশ মনু সওদাগর। এরপর ওই জমির বিপরীতে নামজারি খতিয়ানও সৃজন করেছেন অভিযুক্ত মনু সওদাগর। ঘটনাটি জানতে পেরে ২০২০ সালে এলাকাবাসি সৃজিত ওই খতিয়ানটি বাতিলের আবেদন জানিয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দপ্তরে একটি আপীল মামলাও (নং ১৭৪/২০) দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসি মানবন্ধনে অভিযোগ তুলেছেন, জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দপ্তরে আপীল মামলাটির রায় নিস্পত্তি না হলেও কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে অভিযুক্ত মনু সওদাগর পুকুরটি দখলে নিয়ে সেখানে মাটি ফেলে ভরাটের অপচেষ্ঠা চালাচ্ছেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জিয়াদুল ইসলাম সেলিম বলেন, এলাকার সববয়সের মানুষ জানে ‘চেরাইঙ্গা পুকুরটি’ শতবছর ধরে শান্তিপুর্ণভাবে তাঁরা ব্যবহার করছেন। মালিকরাও পুকুরের জমি এলাকাবাসির স্বার্থে ছেঁেড় দিয়েছেন। আর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জনগনের জন্য পুকুরে দেওয়া হয়েছে দুটি জলসিঁিড়।

তিনি বলেন, আমরা চাই জনগনের সম্পদ জনগনের কাছে থাকুক, যাতে কেউ দখল করতে না পারে। সেইজন্য চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাংসদ আলহাজ জাফর আলম, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে আমরা ন্যায় বিচার চাই।

বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম জাহাংগীর আলম। তিনি বলেন, ‘চেরাইঙ্গা পুকুরটি’ উত্তর বহদ্দারকাটা গ্রামের অন্তত তিনশতাধিক পরিবার শতবছর ধরে ভোগদখল করছেন। পুকুরের মালিকপক্ষের অংশিদার যারা তাঁরাও এলাকাবাসিকে পুকুরটি ব্যবহারে সুযোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, গ্রামের ভেতরে গোসল ছাড়াও প্রাত্যহিক কাজে পুকুরটি যে জনগনের একমাত্র অবলম্বন তা পরিষদ থেকে একটি প্রত্যায়নপত্রও দেওয়া হয়েছে।

আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নুরুল আমিন প্রকাশ মনু সওদাগর। তিনি বলেন, বৈধ মালিক আবদুর রহমান চৌধুরীর ওয়ারিশ (মেয়ে) রফিকুন্নেছা প্রকাশ রাফেয়া বেগম কাছ থেকে ২০০৫ সালে রেজিস্ট্রিমুলে এক একর ১২শতক জমি ক্রয় করি। তৎমধ্যে দুটির দাগে ৫৩ শতক জায়গা পুকর ও পাশের জমি পড়েছে। এরপর উপজেলা ভুমি অফিস আমার নামে নামজারি খতিয়ানও দিয়েছে। সেই থেকে আমি ভোগদখলে আছি। সেখানে দখলের অভিযোগ কেন আসবে।

তিনি বলেন, ১৫বছর আগে আমি পুকুর জমি কিনলেও এখনো এলাকার জনগন পুকুরটি ব্যবহার করছেন। আমি কাউকে ব্যবহারে বাঁধা দিইনি। ভবিষ্যতেও দেবনা। আর পুকুরটি ভরাটে আমার কোন পরিকল্পনা নেই। তবে আমি পুকুরে মাছ চাষ করি। মুলত আমাকে হয়রাণি করার জন্য এলাকার কিছু মানুষ এইধরণের মিথ্যাচারে নেমেছে।

 

229 ভিউ

Posted ১২:৫৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com