কক্সবাংলা ডটকম :: আঠারো বসন্ত আগে (২০০৩ সালের মে) অ্যান্টিগায় এমনই একটা দিন উপহার দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টেস্টের সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া করে জয় ছুঁয়েছিল। অজিদের বিপক্ষে সেটা ছিল ব্রায়ান লারা, শিবনারায়ন চন্দ্রপাল, রামনরেশ সারওয়ানদের দল। চট্টগ্রামে তেমনই একদিন ফিরিয়ে আনল অনভিজ্ঞ ওয়েস্ট ইন্ডিজ; অভিষিক্ত কাইল মায়র্স। তার ডাবল সেঞ্চুরির কাছে আত্মসমর্পন করেছে ‘টাইগার ইলেভেন’। ৩৯৫ রানের লিড দিয়েও হেরেছে ৩ উইকেটে।
অভিষিক্ত কাইল মায়ার্স ২১০ রান করে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে ফিরেছেন। তার সঙ্গে চতুর্থ ইনিংসে ২১৭ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের সাহস দেন এনক্রুমাহ বোনার। তিনি করেন ৮৬ রান। তারা এশিয়ার মাটিতে অভিষিক্ত জুটি হিসেবে চতুর্থ ইনিংসে গড়েন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। এছাড়া অভিষেকে চতুর্থ ইনিংসে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন কাইল মায়ার্স। আর চতুর্থ ইনিংসে ডাবল হাঁকানো পঞ্চম ক্রিকেটার তিনি। গড়েছেন এশিয়ার মাটিতে সর্বোচ্চ রান (চেন্নাইয়ে ৩৮৭ রান) তাড়া করে জয়ের রেকর্ড।
এর আগে রোববার সকালে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শুরু হয়। জয়ের জন্য ৩৯৫ রানের লক্ষ্যে নেমে চতুর্থদিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ১১০ রান তোলে সফরকারীরা। চট্টগ্রামের ভেঙে যাওয়া উইকেটে টাইগার স্পিন ত্রয়ীর সামনে পঞ্চমদিন বাকি রান তোলা ছিল অসাধ্য সাধন। কিন্তু সেটাই ক্যারিবীয়রা করে দেখিয়েছেন। আলগা ফিল্ড সেটিং, ক্যাচ মিস আর আক্রমণের অভাবে হারের লজ্জায় ডুবেছে বাংলাদেশ।
বুধবার শুরু হওয়া চট্টগ্রাম টেস্টে টস জিতে ব্যাট করে প্রথম ইনিংসে ৪৩০ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে ১০৩ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন মেহেদি মিরাজ। লোয়ার মিডল অর্ডারে তার ওই রানেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। এছাড়া নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হয়ে ফেরা ও ইনজুরিতে টেস্টের মাঝেই ছিটকে যাওয়া সাকিব আল হাসান করেন ৬৮ রান। তার আগে ওপেনার সাদমান ইসলামের ব্যাট থেকে আসে ৫৯ রান।
জবাবে ২৫৯ রানে থামে ক্রেগ ব্রাথওয়েটদের প্রথম ইনিংস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে প্রথম ইনিংসে ৭৬ রান করেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক ব্রাথওয়েট। এছাড়া ৪০ রান করেন কাইল মায়ার্স। পরে ৯৯ রানের জুটি আসে জার্মেইন ব্লাকউড ও জসুয়া ডি সিলভার ব্যাট থেকে। কিন্তু হুট করেই ছয় রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধসে যায় তারা। ব্লাকউড ফিরে যান ৬৮ রান করে। জসুয়া ডি সিলভা করেন ৪২ রান।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস থেকে পায় ১৭১ রানের বড় লিড। দ্বিতীয় ইনিংসে আবার বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ২২৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। ইনজুরিতে সাকিব আল হাসানের ব্যাট করতে না পারা এবং পাঁচ সেশন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাতে দিয়ে ওই ইনিংস ঘোষণাই কাল হয়েছে বাংলাদেশের। কঠিন হয়ে ওঠা উইকেটে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে অধিনায়ক মুমিনুল হক চাপের মুখের খেলেন ১১৫ রানের ইনিংস। তার সঙ্গে ১৩৩ রানের জুটি গড়ার পথে লিটন দাস করেন ৬৯ রান। টপ অর্ডার ও লোয়ার অর্ডারে আর কেউ রান পাননি।
বল হাতে প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৪ উইকেট নেন জোমেল ওয়ারিকান। সেঞ্চুরি করা মিরাজ প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিবীয়দের ধসিয়ে দেন। এছাড়া মুস্তাফিজুর রহমান, নাঈম হাসান ও তাইজুল ইসলাম নেন দুটি করে উইকেট। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে রাকিম কর্নওয়াল ও ওয়ারিকান তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংসে মিরাজ নেন ৪ উইকেট। তাইজুল ইসলাম পান দুই উইকেট।
Posted ৮:৩৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta