শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

চেরাপুঞ্জিতে ১২২ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত : ভয়াবহ বন্যায় পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ

শনিবার, ১৮ জুন ২০২২
133 ভিউ
চেরাপুঞ্জিতে ১২২ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত : ভয়াবহ বন্যায় পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ

কক্সবাংলা ডটকম(১৮ জুন) :: গত তিন দিনে বাংলাদেশের উজানে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ওই বৃষ্টির পানি ঢল হয়ে বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের সব কটি জেলায় প্রবেশ করেছে। সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস বলছে, আগামী তিন দিন উজানে ভারতীয় অংশে ও বাংলাদেশ অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। অন্যদিকে দেশের

উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুত বাড়ছে। এরই মধ্যে তিস্তা অববাহিকার ৪টি জেলার নি¤œাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে পারে বলে মনে করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ব্রহ্মপুত্রের পানি যমুনা দিয়ে নামার সময় বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল পর্যন্ত বন্যার পানি চলে আসতে পারে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের চেরাপুঞ্জি বিশ্বের সবচেয়ে বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা জুন মাসে ১২২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আর গত তিন দিনে সেখানে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এটিও গত ২৭ বছরের মধ্যে তিন দিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।

পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ

পূর্বাঞ্চলে পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ। বন্যার পানি থেকে বাঁচতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে দুর্গতরা। বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ায় সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। টেলিফোন নেটওয়ার্ক অকার্যকর হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে ও দুর্ঘটনা এড়াতে পুরো সিলেটের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। ওসমানী বিমানবন্দর তিন দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে সিলেট বিভাগ কার্যত সারাদেশ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে নেমেছে সেনাবাহিনী।

স্থগিত করা হয়েছে এসএসসি পরীক্ষা। সব দোকানপাট প্লাবিত হয়ে নিত্যপণ্য ও ওষুধসহ নানা পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। সবমিলিয়ে সহযোগিতা পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে মানুষের জন্য। এই অবস্থায় নৌবাহিনীকেও কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মূলত, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নদনদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়ছে। ফলে, এই দুই জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। গত তিন দিনে বাংলাদেশের উজানে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ওই বৃষ্টির পানি ঢল হয়ে সিলেট বিভাগের সব কটি জেলায় প্রবেশ করেছে।

সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস বলছে, আগামী তিন দিন উজানে ভারতীয় অংশে ও বাংলাদেশ অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। শুক্রবার সকাল থেকে সিলেট বিভাগের সব কটি নদনদীর পানি ও উত্তরাঞ্চলে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে।

শুক্রবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার, সিলেটে ৭০ সেন্টিমিটার এবং সুনামগঞ্জে ১২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছিল।

অন্যদিকে দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুত বাড়ছে। এরই মধ্যে তিস্তা অববাহিকার ৪টি জেলার নি¤œাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

আশ্রয়কেন্দ্রের আশায় সিলেট-সুনামগঞ্জের দুর্গতরা : ভারতের মেঘালয়-আসামে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে চলতি মওসুমের তৃতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেট অঞ্চলে। সুনামগঞ্জের শহরে এখন একতলা কোনো বাড়িতে পানি উঠতে বাকি নেই। সদরের পাশাপাশি দোয়ারাবাজার, ছাতক, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জামালগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলা ভাসছে বন্যায়। পানি ঢুকেছে সিলেট শহরেও। জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও সদর উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা এখন পানির নিচে।

এদিকে সুনামগঞ্জের সঙ্গে সারাদেশের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সুনামগঞ্জ শহরের ৯০ ভাগ বসতঘরে বানের পানি ঢুকে পড়েছে। সুনামগঞ্জ ও ছাতক পৌর এলাকার প্রধান সড়কে হাঁটুপানি থেকে কোমরপানিতে ডুবে আছে। শহরের প্রধান সড়কগুলোতে অনায়াসে নৌকা চলাচল করছে। ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পাঁচ স্থান কোমরপানিতে ডুবে থাকায় সুনামগঞ্জের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্কও কাজ করছে না। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে নেমেছেন জানিয়ে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মোশাররফ হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী নৌবাহিনীকেও কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আকস্মিক এই বন্যা আমাদের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনছে। শুধু জেলা শহর নয়, ৬টি উপজেলা এখন পানির নিচে। মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসাসহ সহায়তায় কাজ করছে প্রশাসন। কিন্তু পরিস্থতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র নাদের বখত বলেন, শহর পুরোটাই ডুবে গেছে। মানুষ বাড়িঘরে আটকা পড়েছে। আমরা সাধ্যমতো তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে প্রচুর নৌকা প্রয়োজন। শহরের সব রাস্তাঘাট ও বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় আশ্রয় নেয়ার জায়গাও খুব একটা নেই। দুর্গতদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় স্বেচ্ছসেবীরাও। কিন্তু সব রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় খুব বেশি কিছু তারাও করতে পারছেন না

বিশ্বম্ভরপুরের স্কুল শিক্ষক শ্যামল দেবনাথ বলেন, আমার ৫১ বছরের জীবনে সুনামগঞ্জে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখিনি। সব এলাকা প্লাবিত। মানুষ কোথাও আশ্রয় নিতে পারছে না। এখন ত্রাণের চেয়ে আশ্রয় জরুরি।

হাসননগরের বাসিন্দা ঊষা তালুকদার বলেন, এমন দুর্যোগের মধ্যে সুনামগঞ্জবাসী আগে কখনো পড়েনি। শহরে কোথাও আর শুকনো জায়গা মিলছে না।

এদিকে পানিবন্দি রয়েছেন সিলেট নগরীসহ পাঁচ উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। আড়াইশর বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে; বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ জানান, শুক্রবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার এবং সিলেট পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সারি নদীর পানি বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে। পানির উচ্চতা বেড়েছে কুশিয়ারা ও লোভা নদীরও। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপরে বইছে। সিলেট নগরীর ঘাসিঠুলা, কলাপাড়া, শামীমাবাদ, তালতলা, কালিঘাট, সোবহানীঘাট, শাহজালাল উপশহর, সাদিপুর, বোরহানবাগ, শিবগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমার কদমতলিসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক পানিতে ডুবে গেছে।

এসব এলাকার অনেক বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। শাহজালাল উপশহর এলাকার বাসিন্দা পলাশ ইসলাম জানান, বুধবার দুপুরেই উপশহরের বেশির ভাগ সড়ক তলিয়ে যায়। রাতের দিকে বাসায় পানি ঢুকে পড়ে। পানি এখনো বাড়ছে। বিদ্যুৎ নেই, সঙ্গে খাবার পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, ১৯৮৮ সালের দুর্যোগ ছাড়িয়েছে এবারের বন্যা। দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন লোকজন। বিশেষ করে সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাটসহ বেশ কিছু অঞ্চলের মানুষজনের বাড়িতে এখন গলা সমান পানি। পরিস্থিতি এত ভয়াবহ যে, এখন ত্রাণের চেয়ে প্রাণ বাঁচানো জরুরি হয়ে পড়েছে।

নগরের শেখঘাট এলাকার রশিদ আহমদ বলেন, এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বাবের মতো বাসায় পানি ঢুকেছে। আমরা গরিব মানুষ। বারবার এভাবে ঘরে পানি ঢুকে জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যায়। অনেক কষ্ট করতে হয়। এদিকে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সিলেট নগরে ৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে সিলেট সিটি করপোরেশন।

সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে সিলেট মহানগরীতে ৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখনো অনেকেই নিজেদের আসবাবপত্র রেখে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেন না। তবে বন্যাকবলিত সবাইকে আমরা নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার চেষ্টা করব।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, জেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের জন্য ৪৪৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে; দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে।

এদিকে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে সিলেটের কুমারগাঁওয়ের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রেও। কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সুরঞ্জিত সিংহ বলেন, কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি উপকেন্দ্রের সুইচ ইয়ার্ডে পানি প্রবেশ করেছে। যে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে কন্ট্রোল রুমে পানি প্রবেশ করতে বেশি সময় লাগবে না। যদি কন্ট্রোল রুমে পানি প্রবেশ করে তাহলে এই গ্রিড উপকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে। এই গ্রিড বন্ধ করলে পুরো সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। অবশ্য কুমারগাঁও বিদ্যুৎ গ্রিড উপকেন্দ্র রক্ষা করতে কাজ শুরু করেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। দুপুর ১২টার দিকে গ্রিড উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ বন্ধ করতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুপুর ১২টা থেকে জিও ব্যাগ ফেলে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করছেন। তাদের সঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মীরা কাজ করছেন।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। যাতে সিলেট শহরে অন্তত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যায়। এরই মধ্যে সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। তবে সিলেট শহরকে কত সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যাবে বলা যাচ্ছে না।

ওসমানী বিমানবন্দর তিন দিন বন্ধ ঘোষণা : রানওয়েতে পানি ওঠায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তিন দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বিকাল ৪টার দিকে বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে দুপুরে বন্যার পানি রানওয়ে স্পর্শ করায় বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ বলেন, বিমানবন্দরের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বন্যার পানি থেকে রক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিমানবন্দরের বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। আপাতত এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিষয়টি জানানো হবে।

ভয় নেই, আমরা পাশে আছি : শুক্রবার ফেসবুক লাইভে এসে সিলেট এলাকায় আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দিদের উদ্ধারে নৌকা ও স্পিডবোট পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, অনেকেই পানিবন্দি হয়ে আছেন। তাদের উদ্ধারে আমরা আর্মি নিয়োগ করেছি। নৌকা ও স্পিডবোট সংগ্রহ করা হচ্ছে। সবাইকে দ্রুত উদ্ধার করে আশ্রয়স্থলে নিয়ে যাওয়া হবে। ধৈর্য ধরুন, সবাইকে উদ্ধার করব। ভয় নেই, আমরা আপনাদের পাশে আছি।

তিনি বলেন, শুক্রবার রাত ও আজ সকাল থেকে সিলেটের নেতাকর্মীরা কন্টিনিউয়াসলি আমাকে জানাচ্ছেন, সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, সুনামগঞ্জ, ছাতক, সদরের জালালাবাদ, হাটখোলা, কান্দিরগাঁও, মোংলাগাঁও টোকেরগাঁও- সব এলাকায় যথেষ্ট পানি উঠেছে। এ নিয়ে আমাকে ডিসি, মেয়র ও সহকর্মীরা জানিয়েছেন। এটা জানার পর যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছি।

ফেসবুক লাইভে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানার পরপরই প্রধানমন্ত্রী, আমাদের কেবিনেট সেক্রেটারি, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, সংশ্লিষ্ট আর্মি অফিসার, দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি। আমাদের রিলিফের কোনো অভাব নেই। যথেষ্ট রিলিফ দেয়া হয়েছে। নগদ টাকা দেয়া হয়েছে। আর শুকনো খাবারও দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে সিলেটে ২০০ টন চাল, নগদ ৩০ লাখ টাকা, ৮ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে আরও পাঠানো হবে। এ সময় মন্ত্রী স্থানীয় নেতাকর্মীদের খাবার রান্না করে নিয়ে বানভাসিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। ড. মোমেন বলেন, ইতোমধ্যে এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ইলেকট্রিসিটির সমস্যাও সমাধান করা যায়নি। পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির ফলে এ সমস্যা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী সার্বক্ষণিক এগুলো নিয়ে কাজ করছেন। আপনাদের ভয় নেই, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমাদের সব প্রশাসন কাজ করছে। আপনারা বিশ্বাস রাখতে পারেন, আওয়ামী লীগ সরকার যতদিন আছে আপনাদের সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাবে।

133 ভিউ

Posted ২:০৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৮ জুন ২০২২

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com