কক্সবাংলা ডটকম(২৪ সেপ্টেম্বর) :: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে তৎপরতা শুরু করেছেন পশ্চিমা কূটনীতিকরা। নির্বাচনের প্রস্তুতি ও রাজনৈতিক পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতে ঢাকায় অবস্থান করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক টিম।
সোমবার তারা নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এর আগে শুক্রবার পাঁচ দিনের সফর শেষে ঢাকা ত্যাগ করে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল।
পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, হাইকমিশন ও মিশনপ্রধানরা।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সে লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে ইসি।
তবে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পিআর, গণপরিষদ এবং আওয়ামী লীগ ও তার সঙ্গে জোটবদ্ধ দলগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়।
একই সময়ে ঢাকা সফরে আসেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ও মানবাধিকারবিষয়ক উপকমিটির চেয়ার মৌনির সাতুরির নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের পার্লামেন্ট প্রতিনিধিদল।
সফরের প্রথম দিনই দলটি বড় দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতার সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, নির্বাচনব্যবস্থা ও নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ইইউ প্রতিনিধিদল।
পাঁচ দিনের সফর শেষে শুক্রবার ঢাকা ত্যাগ করেন তাঁরা। এর আগে এক সাক্ষাৎকারে প্রতিনিধিদলের প্রধান মৌনির সাতুরি বলেন, ‘অবশ্যই আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে হতে হবে এবং নির্বাচনের ফলাফলের প্রতি সবার শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত। বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।’
ইইউ পার্লামেন্ট প্রতিনিধিদলের সফরের দুই দিনের মাথায় ঢাকায় আসেন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক টিম। ‘
ইলেকশন এক্সপ্লোরেটরি মিশন’ নামে আট সদস্যের এ প্রতিনিধিদল সোমবার নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই ধাপে বৈঠক করে। বৈঠকে নির্বাচনের আগে দেশে রাজনৈতিক পরিবেশ, ইসির প্রস্তুতি ও নির্বাচনে ইইউ পর্যবেক্ষক টিম পাঠাবে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া ১ সেপ্টেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী বছরের শুরুর দিকে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের রূপরেখা নির্ধারণ করতে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে সমর্থন করবে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা চাই বাংলাদেশের আসন্ন সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হোক।’
নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক। চলতি সেপ্টেম্বরে জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তত ছয়জন শীর্ষ কূটনীতিক।
তাঁরা হলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জি. খোজিন, পাকিস্তানের হাইকমিশনার ও সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার।
নির্বাচনের অগ্রগতি জানতে বরিশালে রাষ্ট্রদূতরা : বাংলাদেশে একটি টেকসই গণতান্ত্রিক নির্বাচনব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে কাজ করছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। এজন্য তারা একটি প্রকল্পও গ্রহণ করেছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অগ্রগতি জানতে বরিশাল বিভাগের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতের মতবিনিময় সভা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ।
গতকাল বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ের সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ব্রিটিশ হাইকমিশনার এম এস সারাহ কুক, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরালড গুলব্র্যান্ডসেন, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার, অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার আসিফ কাশেম, ইউএনডিপির সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক, নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ, বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার মো. ফরিদুল ইসলামসহ ছয় জেলার ও সব উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
Posted ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta