কক্সবাংলা রিপোর্ট :: কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ১নং ইউনিয়নে কাটাখালী চাকমা পল্লীর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও বিহারের রান্নাঘরে আগুন সংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা।
এসময় ৭ জন চাকমা নারী ও পুরূষ আহত হয়েছে।
২৪ অক্টোবর রবিবার বিকাল ৪টায় এ ঘটনাটি ঘটে। আবারও হামলার আশংকায় ঘটনার পর থেকে স্থানীয় চাকমারা আতংকে রয়েছেন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন কাটাখালীর মহলং চাকমা, উমতি চাকমা,ভূবণ চাকমা,বিজলী চাকমা,রিকি চাকমা,অপূর্ব চাকমা, ও টিপন চাকমা।
আহত মহলম চাকমা জানান,প্রবারণা পূর্ণিমার পর কাটাখালী চাকমা পল্লীর অরণ্য বৌদ্ধ বিহারের’ নলকূপে কয়েকজন চাকমা তরুণী হাড়ি-পাতিল ও থালা ধোয়ার কাজ করছিলেন। এ সময় বৌদ্ধ বিহারটির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় স্থানীয় নুরুল আমিন,সেলিম,আব্দুছালাম,কায়সার,তোফায়েল,মামুন সহ কিছু যুবক ওই তরুণীদের উত্ত্যক্ত ও কটুক্তি করে।
এসময় চাকমা পল্লীর তরুণীরা প্রতিবাদ ও চিৎকার করলে স্থানীয় কয়েকজন চাকমা যুবক ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বাঙালি ও চাকমা যুবকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে বিকালে এ ঘটনার জেরে ৪০ থেকে ৫০ জন বাঙালি বৌদ্ধ বিহারটির ঝুপড়ির আদলের তৈরি রান্নাঘরে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর চালায়। এ সময় হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র,বন্দুক ও লাঠি দিয়ে চাকমা লোকজনের উপর হামলা চালায়।
এতে চাকমা পল্লীর ৭ জন আহত হয়।আহতদের রাত সাড়ে ৮টায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তী করা হয়।এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
ইউএনও পারভেজ চৌধুরী বলেন, রোববার বিকেলের দিকে কয়েকজন স্থানীয় যুবক ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এক তরুণীকে ইভ টিজিং করেন। এর প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০ থেকে ১২ জন আহত হন। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে কক্সবাজারের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়।তিনি আরও বলেন, ‘খবর পেয়ে টেকনাফ থানা–পুলিশ ও র্যাবের একটি দলকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বৌদ্ধবিহারের পার্শ্ববর্তী একটি রান্নার ঘর আগুনে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে, কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে এখানে আগুন দিয়েছে, তদন্তের মাধ্যমে বের করা হবে।’
এদিকে ঘটনার পরে খবর পেয়ে আহতদের দেখতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ছুঁটে যান বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত,জেলা সভাপতি এড,দীপংকর বড়ুয়া পিন্টু,সা: সম্পাদক অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন,সহ সম্পাদক চঞ্চল দাশগুপ্ত,এড বাপ্পী শর্মা।
এসময় রানা দাশগুপ্ত কাটাখালী চাকমা পল্লীর ঘটনা সম্পর্কে আহতদের কাছ থেকে অবগত হন এবং এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।সেই সাথে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবী জানান। আগামী মঙ্গলবার চাকমা পল্লীতে ঘটে যাওয়া ঘটনা সরেজমিন পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।
টেকনাফ থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান জানান, রোববার বিকালে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কাটাখালী এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Posted ২:২৬ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৫ অক্টোবর ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta