হুমায়ূন রশিদ,টেকনাফ(৪ সেপ্টেম্বর) :: টেকনাফে সম্প্রতি সরকারী প্রাইমারী স্কুলের পতিত জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি বাগানের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে। তাই সবজি উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে-কলমে ধারণা দিতে অবশিষ্ট স্কুলের পতিত জমিতে আরো সবজি বাগান সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সহযোগী সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্র জানায়, টেকনাফে ৬৪টি সরকারী প্রাইমারী স্কুল রয়েছে। চলতি বছর ইতিমধ্যে প্রায় ৩০টি সরকারী প্রাইমারী স্কুলের পরিত্যক্ত থাকা জমিতে শসা, মিষ্টি কুমড়া, পুঁই শাক, পালং শাক, লাল শাক, ঢেড়ঁশ, চিচিঙ্গা, বরবটি, বেগুন, টেমেটো এবং পেঁপের চাষাবাদ করা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসের সুপারিশক্রমে বিশ^ খাদ্য সংস্থা এবং মুসলিম এইডের আর্থিক ও কারিগরী সহায়তায় স্কুলের শিক্ষকদের উৎসাহে ছাত্র-ছাত্রীরা সময়মত এসব বাগানের পরিচর্যাও করছেন।
এদিকে বর্ষাকাল ও শাক-সবজি বনায়নে প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় স্কুলের সবজি বাগান সমূহ বেশ সুন্দর হয়েছে উঠেছে। এসব বাগানে সবজি ফলন খুব ভাল হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা পড়া-লেখার পাশাপাশি বিনোদনের অংশ হিসেবে এসব স্কুলের পতিত জমিতে সবজি বাগান করতে পেরে নিজেরাই আনন্দিত বলে জানান।
শিক্ষার্থী শাহরিয়ার রহমান আজাদ, তাহসিন হোসেন এবং সুমাইয়া বলেন, বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত জমিতে সবুজ সবজি বাগান স্কুলের পরিবেশ সুন্দর করেছে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের পেছনের পরিবেশ স্বাস্থ্যকর এবং সৌন্দর্য্য বর্ধন করেছে। স্কুলের পড়াশুনার পাশাপাশি বাড়িতে গিয়েই গাছের চারা রোপণ এবং পরিচর্যা বিষয়ে উৎসাহিত হয়ে খুব ভাল লাগছে।
রঙ্গিখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়ে সবজি বাগান এটি এক ধরণের শিক্ষা। এতে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা বীজ, অংকুররোদগম, পরিচর্যাসহ যাবতীয় কিছু শিখছে।
বিদ্যালয়ের পেছনে সাধারণত ময়লা এবং আবর্জনা থাকে। স্কুলের পেছনের ময়লাযুক্ত জমি সারা বছর পরিত্যক্ত থাকে এবং রোগবাহী মশা-মাছির জন্মস্থানে পরিণত হয়। উপজেলা শিক্ষা অফিসের উদ্যোগে স্কুলের পেছনের খালি জমিতে সবজি বাগানের মত উদ্যোগ প্রশংসনীয় দাবী করেন।
এতে বিদ্যালয় সমুহে অনেকটা স্বাস্থ্যসম্মত চেহারা ফুটে উঠছে। বিদ্যালয় ভিত্তিক এসব সবজি বাগানে আর্থিক ও কারিগরী সহায়তাকারী সংস্থা দুটি পর্যায়ক্রমে টেকনাফ উপজেলার প্রত্যেক প্রাইমারী স্কুলের পরিত্যক্ত জমিতে সবজির আবাদে এগিয়ে আসবেন।
স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামের ফিল্ড মনিটর বশির আহমদ জানান, স্কুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং ছাত্র-ছাত্রীদের নিজ নিজ বাড়িতে গাছের চারা রোপণে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে এই মহতি উদ্যোগ। আগামীতে উপজেলার সব প্রাইমারী স্কুলকে সবজি বাগানের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ এমদাদ হোছাইন চৌধুরী জানান, বিদ্যালয়ে সবজি বাগানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। বীজ বপন, পরিচর্যা, অংকুর রোদ গমন,পোকার আক্রমণ দমনসহ সবকিছু ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে কলমে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। যাতে করে শিক্ষার্থীরা বাড়ীতে গিয়ে পতিত জমিতে সবজি বাগান এবং অন্যান্য চারা রোপনে উদ্ধুদ্ধ হয়। তিনি এভাবেই উপজেলার সব সরকারী-বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং এবতেদায়ী মাদ্রাসা সবজি বাগানের আওতায় নিয়ে আসতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
Posted ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta