হুমায়ূন রশিদ,টেকনাফ(৩০ জানুয়ারী) :: টেকনাফে রাস্তায় শিশুদের খেলার বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের গুলিবর্ষণে পথচারী শিশু নিহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে আরো একজন। স্থানীয় জনতার সহায়তায় ঘাতককে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যায়,৩০ জানুয়ারী বিকাল পৌনে ৪টারদিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী লামার পাড়ায় একটি গ্রামীণ রাস্তায় শিশুরা খেলা করছিল। এক পর্যায়ে পাশ^বর্তী ঘেরা-বেড়ায় পড়লে বাড়ির মহিলা ফাতেমা
গালি-গালাজ করে বেরিয়ে আসে। এদিকে খেলারত এক শিশুর মা নুর আয়েশাও বের হলে উভয়ের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক এবং ঝগড়ার সৃষ্টি হয়।
এতে এক পর্যায়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে স্থানীয় স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী ও ইয়াবার চালান লুটপাটকারী গ্রুপের সদস্য কবির আহমদের পুত্র বেলাল উদ্দিন (৩০) স্বশস্ত্র অবস্থায় বের হয়ে নুর আয়েশার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে এবং এক পর্যায়ে গুলিবর্ষণ করলে পাশে খেলারত কাদির হোছনের পুত্র মোহাম্মদ সাদেক (৭) ও প্রবাসী বেলাল উদ্দিনের পুত্র মোজাহেদ (১০) গুলিবিদ্ধ হয়।
এতে ঘটনাস্থলেই সাদেক মারা গেলে ঘাতক বেলাল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন স্থানীয় জনসাধারণ তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।
টেকনাফ মডেল থানার এসআই মহির উদ্দিন খান উজ্জ্বল ও জয়নাল আবেদীন বিশেষ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর শিশুর লাশ উদ্ধার করে পোস্ট মর্টেমের জন্য এবং ঘাতক বেলালকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এই ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিন খান বলেন,পুলিশ মূল ঘাতককে আটক করেছে। আমি নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রয়েছি। আটক আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং নিহত শিশুর লাশ পোস্ট মর্টেমের জন্য প্রেরণ করা হচ্ছে। ধৃত আসামীকে আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।
এদিকে উক্ত এলাকার মেম্বার দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে থাকায় আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি লেগেই আছে। একটি মহল মনে করছেন অত্র এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি স্বশস্ত্র দু‘টি গ্রুপ বিরাজমান ছিল।
একটি গ্রুপ দূর্বল হয়ে গেলে প্রতিপক্ষ অপর একটি গ্রুপ ইয়াবা চোরাচালান করে বিপূল টাকার মালিক হয়ে কতিপয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় সংগঠিত হয়ে পুরো এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলছে।
যার ফলে উক্ত এলাকায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সুন্দরী রোহিঙ্গা নারী ধর্ষণ, অপহরণ করে মুক্তিপণ বাণিজ্য, নিরীহ মানুষকে জিম্মি করে ইয়াবা ও অস্ত্রের চালান মওজুদের সময় পুলিশ দিনের বেলায় অভিযান চালিয়ে আটক করতে সক্ষম হয়। কিন্তু টাকার প্রভাবে রহস্যজনক কারণে ধরা-ছোয়ার বাইরে রয়ে যায়।
এই কারণে চিহ্নিত অপরাধীরা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই গুলিবর্ষণকারী আগে ইয়াবার চালান খালাস, জমা রাখা ও ভাগ-বাটোয়ারার বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের কারণে তুচ্ছ বিষয়ে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুত্রপাত বলে মনে করেন।
Posted ১০:৩৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta