হেলাল উদ্দিন,টেকনাফ :: কক্সবাজারের টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির) সঙ্গে ইয়াবা কারবারিদের বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিজিবি।
নিহত দুজন হলেন- টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল কালাম ওরফে লেড়ু ছেলে মোহাম্মদ রুবেল (২০) ও একই এলাকার মোহাম্মদ বাবুলের ছেলে মো ইউনুছ আলম (৩৫)।
এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এনামুল হক।
বিজিবি’র দাবি, নিহত দুইজনই ইয়াবা কারবারি ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা বড়ি, একটি দেশীয় অস্ত্র এলজি ও একটি লম্বা কিরিস উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার গভীর রাত দেড়টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের আলুগোলার মৎস্য খামার এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি ঘটেছে।
এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ ২ বিজিবির ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান।
এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপ অধিনায়ক মেজর রুবাইয়াত কবির ও অপারেশন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মুহতাসিম বিল্লাহ ।
সাংবাদিক সম্মেলনে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান বলেন, সোমবার গভীর রাতে বিজিবি সদস্যরা জানতে পারেন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকা দিয়ে ইয়াবার একটি বড় চালান মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচার হতে পারে এমন তথ্য পায় বিজিবি।
ওই তথ্যের ভিত্তিতে নাজিরপাড়া সীমান্ত চৌকির একটি বিশেষ দল ওই এলাকার আলুগোলার মৎস্য খামার নামক নাফনদীতে অবস্থান গ্রহণ করে। রাতে পাঁচজন ব্যক্তিসহ একটি নৌকা বাংলাদেশের প্রবেশ করতে দেখে টহল দল। তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করলে বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা অতর্কিত গুলি বর্ষণ করতে থাকেন ।
এতে বিজিবির দুজন সদস্য আহত হয়। এসময় বিজিবি সদস্যরা সরকারি সম্পদ ও নিজেদের জানমাল রক্ষার্থে কৌশলগত অবস্থানের অংশ নিয়ে পাল্টা গুলি বর্ষণ করেন।
উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় ৪-৫ মিনিট গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে । এসময় ৩জন ইয়াবা কারবারি নদীতে লাফ দিয়ে সাঁতরিয়ে মিয়ানমারের দিকে পালিয়ে যায় এবং দুজন ব্যক্তি নৌকাটি নিয়ে গুলি করতে করতে নাফ নদীর বাংলাদেশের তীরবর্তী কেওড়া জঙ্গলের আড় ব্যবহার করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
গোলাগুলির শব্দ থামানোর পর টহল দলের সদস্যরা কেওড়া জঙ্গল থেকে দুজন ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে । গুলিবিদ্ধ আহত দুইজনকে উদ্ধার করে দ্রুত টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে ৩লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি দেশীয় তৈরি অস্ত্র এলজি ও একটি ধারালো কিরিস উদ্ধার করা হলেও তাৎক্ষণিক নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
টেকনাফ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শুভ্র দেব বলেন, রাতে বিজিবি চারজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তারমধ্যে অজ্ঞাত পরিচয়ে দুইজন সাধারণ লোক ও দুইজন বিজিবি সদস্য ছিলেন। হাসপাতালে আনার আগেই সাধারণ লোক দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে তাদের শরীরের তিনটি করে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে । আহত দুই বিজিবি সদস্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । লাশ দুটি থানা পুলিশ কর্তৃক উদ্ধার করা হয়েছে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো হাফিজুর রহমান বলেন, নিহত দুজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে বিকেল পাঁচটার দিকে লাশ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এঘটনায় বিজিবি বাদী হয়ে মামলা প্রক্রিয়া চলছে।
Posted ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৯ মার্চ ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta