হেলাল উদ্দিন,টেকনাফ :: মালচিং পেপার ও বাঁশের মাচা পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ (বেক সুইট) প্রথম বারের মতো চাষ করা হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া’তে। দেখা মিলল তরমুজ গাছ গুলোতে শত শত তরমুজ ফল ধরেছে। তবে, কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুুর্যোগ না ঘটলে আগামী তিন সপ্তাহ পরে এসব তরমুজ বিক্রি করে চাষী সুফল পেতে পারেন।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তরমুজ ক্ষেতের সার্বক্ষণিক পরিদর্শন ও চাষীকে সু-পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া গ্রামে ১ একর ৬০ শতক ফসলি জমিতে রুহুল কাদের রুবেল নামের এক চাষী গ্রীষ্মকালীন তরমুজ (বেক সুইট) চাষ করেছে । ইতিমধ্যে গাছে ফুল ও তরমুজ ফল ধরেছে।
মোঃ রুুহুল কাদের রুবেল কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের চাঁদমিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি টেকনাফের দমদমিয়ার স্থানীয় মোঃ আয়ুব হইতে ১ একর ৬০ শতক জমি ৩০ হাজার টাকা দিয়ে এক সিজনের জন্য লাগিয়ত নিয়ে তরমুজ চাষ শুরু করেন। গত জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ হইতে জমিতে চাষ কাজের শুরু করেন। জমিতে চারা রোপণ উপযোগী করে কালো পলিথিন দ্বারা ডেকে দেওয়া হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখের দিকে চারা রোপণ শুরু করেছিলেন।
১০ এপ্রিল শনিবার সরেজমিন গিয়ে দেখে গেছে, পুরো এক একর ৬০ শতক জমি সবুজে চেয়ে গেছে। বাঁশের মাচায় দেখা যায় হলুদ বর্ণের ফুল আর ফুল, কালো বর্ণের ছোট ছোট তরমুজ। তরমুজ গুলো মাচায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। গাছ ও ফলের পরিচর্যা করছেন ।
এসময় চাষী মোঃ রুুহুল কাদের রুবেলের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, গ্রীষ্মকালীন তরমুজ (বেক সুইট) এর চাষ ইউটিউবে দেখে তার ভাল লাগা। সেখানে তরমুজ ফল এর চাষ দেখে নিজেই উদ্ভুদ্ধ হন। তখন থেকেই সেই চিন্তা আসে কোথায় চাষ করা যায়। চাষ যোগ্য ভাল জমি পাওয়া যাবে। এক পর্যায়ে হ্নীলার দমদমিয়ার মোঃ আয়ুুব থেকে ১ একর ৬০ শতক জমি লাগিয়ত নিয়ে কাজ শুরু করেন। চাষের জন্যে বগুড়া থেকে ৩ হাজার চারা নিয়ে আসেন। এর মধ্যে ৫’শ চারা রোদে নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি আরো জানান, জানুয়ারি থেকে এ পর্র্যন্ত ৮০ জন শ্রমিক কাজ করেছে। এছাড়া একজন নিয়মিত শ্রমিক রয়েছেন। এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে যেভাবে ফল ধরেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে দ্বিগুন লাভের আশাবাদী তিনি।
তবে শংকায় রয়েছেন পোকা মাকড়ে ক্ষেত যেন নষ্ট হয়ে না যায় । এ থেকে পরিত্রাণের জন্য টেকনাফ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে উপ-সহকারি কৃষি অফিসার শফিউল আলম ও মোঃ আনোয়ার সার্বক্ষণিক পরিদর্শন ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, গ্রীষ্মকালীন তরমুজ (বেক সুইট) গাছে এ পর্যন্ত জৈব সার, ইউরিয়া, পিএসপি, এমওপি ও বোরন সার ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে নতুন ধরনের এ তরমুজ ক্ষেতটি কক্সবাজার-টেকনাফ প্রধান সড়ক ঘেষা হওয়ায় স্থানীয় লোকজন ফলন দেখতে নিয়মিত ভীড় জমায়। স্থানীয় সচেতনমহল মনে করেন, এধরনের নতুন পদ্ধতি চাষের ভাল ফলন হয়েছে। চাষী সাবলম্বীর পাশাপাশি স্থানীয় ভাবে ফলের চাহিদা এবং দেশের কৃষি ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগীতার আমুল পরিবর্তন আসতে পারে।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর উপ-সহকারি কৃষি অফিসার শফিউল আলম কুতুবী ও মোঃ আনোয়ার জানান, টেকনাফে এই প্রথম বারের মতো মালচিং পেপার ও মাচা পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ (বেক সুইট) চাষ করা হয়েছে। এজন্য চাষীকে উদ্ভুদ্ধ করার পাশাপাশি বিভিন্ন পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিনিয়ত কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে ক্ষেত পরিদর্শন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ভাল ফলন হয়েছে। আগামী তিন সপ্তাহ পরে ফল বিক্রিয় করা যেতে পারে । আশা করছি চাষী লাভবান হবেন। তার দেখা দেখা এভাবে মানুষ আরও কৃষিকাজে এগিয়ে আসবেন এই আশাবাদী।
Posted ৬:৪৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta