হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ :: কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের বিজিবির সঙ্গে ইয়াবা কারবারি সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাত পরিচয় (আনুমানিক বয়স ৫০ বছর) একজন ইয়াবা কারবারি নিহত হয়েছেন বলে করেছেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)।
বিজিবি দাবি, নিহত ব্যক্তি ইয়াবা কারবারি ছিলেন। তবে তার কোনো পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে ৫২ হাজার পিস ইয়াবা বড়ি, একটি দেশীয় অস্ত্র ও একটি খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির মিয়ানমারের নাগরিক হতে পারে।
মঙ্গলবার ভোররাত তিনটার দিকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ পূর্ব ও দক্ষিণ জালিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।
এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ ২ বিজিবির ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান।
তিনি বলেন, রাতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন সদরের সার্ভার রুমের সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম দ্বারা উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত চৌকির’র বিআরএম-৪ থেকে ৭০০ গজ দক্ষিণে নৌকাঘাট বরাবরে হস্তচালিত নৌকাযোগে মিয়ানমার থেকে কতিপয় ব্যক্তিকে আসতে দেখে । তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রন কেন্দ্র থেকে ওই এলাকার বিশেষ টহল কমান্ডারকে বিষয়টি অবগত করা হলে বিজিবি’র টহলদল ওই স্থানে গমন করেন । রাত আনুমানিক ৩টার দিকে টহলদল দূর থেকে দুইজন সন্দেহজনক ব্যক্তিকে হস্তচালিত কাঠের নৌকা যোগে নাফনদীর শুন্যরেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেখে ।
এ সময় বিজিবি’র সদস্যরা তাদের চ্যালেঞ্জ করলে বিজিবি’র উপস্থিতি টের পেয়ে সশস্ত্র ইয়াবা পাচারকারীরা বিজিবি সদস্যদের উপর অতর্কিতভাবে গুলি বর্ষণ করতে থাকেন । এতে একজন বিজিবি সদস্য আহত হয়। পরে বিজিবির টহলদল কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে সরকারী সম্পদ এবং নিজেদের জান ও মাল রক্ষার্থে পাল্টা গুলি বর্ষণ করেন। বিজিবি’র টহলদলের গুলি বর্ষণে একজন ইয়াবা কারবারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নৌকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং একজন ইয়াবা কারবারী নদীতে ঝাপ দিয়ে সাঁতরিয়ে শুন্য রেখা দিয়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পালিয়ে যান।
পরে মঙ্গলবার ভোররাত আনুমানিক ৫টা ১০ মিনিটের দিকে গোলাগুলির শব্দ থামার পর নৌকাটি তল্লাশি করে ৫২ হাজার পিস ইয়াবা বড়ি, একটি দেশীয় অস্ত্র ও একটি খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। পরে সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে শাহপরীরদ্বীপ জালিয়াপাড়া বিজিবি পোষ্টের টহল সদস্যগণ স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারে, নাফ নদীর পাড়ে একজন মৃত ব্যক্তির লাশ পড়ে আছে।
তখন বিজিবি টহল দল ওই স্থানে গিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজন মৃত ব্যক্তির লাশ এবং একটি কার্তুজের খালী খোসা (গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির পরিহিত কাপড়ের সাথে) দেখে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ওই ব্যক্তি কয়েক ঘন্টা পূর্বে বিজিবি টহল দলের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে নদীতে পড়ে গিয়ে পরবতীতে মৃতদেহটি ভেসে আসে । পরে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করেছে।
টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ) আব্দুল আলিম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার আনুমানিক বয়স ৫০ হতে পারে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে ।
এর আগে রবিবার মধ্যরাতে উখিয়ার সীমান্তবর্তী উখিয়া সীমান্তের গর্জনবনিয়া পাহাড়ি জঙ্গলেসশস্ত্র রোহিঙ্গা ইয়াবা পাচারকারীদের সঙ্গে সীমান্তরক্ষী বিজিবির বন্দুকযুদ্ধে উখিয়ার কুতুপালং লাম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১ এর বি/৩ ব্লকের ফোরকান আহমদের পুত্র জোবায়ের (২৮) ও একই ক্যাম্পের সি-ব্লকের মৃত আমীর হামজার পুত্র দীল মোহাম্মদ (২৫) নিহত হয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ১ লাখ ইয়াবা টেবলেট, দেশীয় তৈরি একনলা বন্দুক ২ টি, তাজা কার্তুজ ৪ টি ও খোসা ২ টি জব্দ করা হয়।
Posted ১২:০৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta