হুমায়ূন রশিদ,টেকনাফ(৮ ফেব্রুয়ারী) :: টেকনাফ সীমান্তের সাগর উপকূলীয় পয়েন্টে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবে ৩ রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে আরো এক শিশু। তবে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা খাদ্য সংকটের কারণে চলে আসছে বলে জানান।
জানা যায়,৮ফেব্রুয়ারী ভোরে মিয়ানমারে চরম খাদ্য সংকটের কারণে পালিয়ে আসা বুচিদং থানার ওলাফে গ্রামের একদল রোহিঙ্গা চোরাইপথে ইঞ্জিন নৌকায় করে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের ক্ষুরেরমুখ পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় কুয়াশার কারণে চরের সাথে ধাক্কা লেগে নৌকা উলটে যাওয়ার উপক্রম হলে অসাবধানতাবশত নৌকায় অবস্থান করা রোহিঙ্গা নারীদের কোলে থাকা শিশু মোঃ ইয়াছিনের মেয়ে উম্মে সালমা (৪মাস), আব্দুল আজিজের পুত্র মোঃ আইয়ুব (৭মাস) ও আব্দুল হাদীর পুত্র আব্দুল নবী (৯মাস) সাগরে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় আরো এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে। উদ্ধারকৃত শিশুদের মৃতদেহ সাবরাং ইউপির সহায়তায় স্থানীয়ভাবে দাফন করা হয়েছে। টেকনাফ থানার (ওসি) মাইন উদ্দীন খান,৩ শিশুর মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় নিহত শিশুদের খুরের মুখে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে রোহিঙ্গারা জানায়,গত কয়েকদিন ধরে নতুন করে মিয়ানমারে খাদ্য সংকটের কারণে তারা বাংলাদেশে আসার জন্য ডংখালী সীমান্তে জড়ো হয়ে একটি ইঞ্জিন নৌকায় করে টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। সাবরাং খুরের মুখ পয়েন্টে পৌঁছলে কুয়াশার কারণে নৌকাটি চরের সাথে ধাক্কা খেলে উল্টে যায়। এসময় রোহিঙ্গা নারীদের কোলে থাকা শিশুরা সাগরে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে এবং একজন নিখোঁজ হয়ে যায়।
অবশিষ্টরা কিনারায় উঠলে বিজিবি জওয়ানেরা হেফাজতে নেয়। অপরদিকে টেকনাফ সদরের মিঠাপানিরছড়া সৈকত পয়েন্ট দিয়ে আরাকান রাজ্যের বুচিদং থানার হান্দং, উলাফে ও সিন্দিপ্রাংয়ের আরো অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা এপারে ঢুকেছে। থানা পুলিশের বিশেষ টহল দল তাদের তালিকাভূক্ত করে শরণার্থী ক্যাম্পে প্রেরণের জন্য হারিয়াখালী সেনা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়।
অনুপ্রবেশকারী আবদুল জব্বার (৮৫) বলেন, সহিংসতা শুরু হলে তাদের ফেলে ৩ ছেলে ও স্ত্রীরা এপারে চলে আসে। তবুও তারা সেখানে কোন প্রকারে ভিক্ষা করে চললেও শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে বাংলাদেশে চলে আসে।
তার পুত্রদের খোঁজ না পেলেও এখন সাথে স্ত্রী হোছন বানু (৭৫) ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধি মেয়ে নুর আয়েশা (৫৫) রয়েছে। একই এলাকার ছৈয়দ হোসেন (২৬) তীব্র খাদ্য সংকটের কারনে নিজ দেশ ছেড়ে এপারে চলে এসেছে বলে জানান।
তার পরিবারের ৫জনসহ আরো ৭ পরিবার একই সাথে বের হয়ে নাইক্ষ্যংদিয়া সীমান্ত হয়ে ডংখালী সীমান্ত থেকে রাত ১১ টারদিকে ফিশিং বোট করে ভোরে এপারে আসতেই এই দূঘর্টনার কবলে পড়েন।
Posted ১০:৪৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta