হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ :: বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত টেকনাফে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ২৬ অক্টোবর সোমবার সাড়ে তিনটার দিকে বিজয়া দশমীতে প্রতীমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও হ্নীলার নাটমুরা পাড়া, হ্নীলা কালীবাড়ি, হোয়াইক্যং রাধাকৃষ্ণ মন্দির তাদের পার্শ্ববর্তী নাফনদীতে ও বাহার ছড়া দূর্গা মন্দির পাশের সমুদ্র সৈকতে একযোগে প্রতীমা বিসর্জন দেয় হিন্দু ধর্মের ভক্ত-অনুরক্তরা।
টেকনাফ কেন্দ্রীয় বিষু মন্দিরের প্রতিমা ও ডেইল পাড়ার দূর্গা মন্দিরের প্রতীমা ২টিকে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়।
মহাষষ্ঠীতে দোলায় চড়ে এসেছিলেন দুর্গা। আর গজে (হাতি) চড়ে কৈলাশে ফিরছেন। টেকনাফ উপজেলায় এবার ৬ টি মণ্ডপে প্রতিমা পূজা হয়েছে।
বিজয়া দশমীর দুর্গোৎসবকে ঘিরে সমুদ্রসৈকতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছিল ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যে কারণে বিসর্জন শেষ হওয়া পর্যন্ত কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
বিসর্জন ঘিরে অন্যান্য বছরের মতো আয়োজন না থাকলেও উলুধ্বনি, শঙ্খ ও ঢোল বাজিয়ে পানিতে প্রতিমাকে বিসর্জন দেওয়া হয়। তবে, করোনাকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য বিধি মানার জন্য নির্দেশনা থাকলেও অধিকাংশে তার ব্যত্যয় ঘটেছে। বিসর্জন উৎসবে মাস্ক ব্যবহারী লোকের সংখ্যা খুব কমই চোখে পড়েছে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ‘মা দুর্গা’ বিসর্জনের সময় আনন্দের পাশাপাশি বিষাদের ছাপও ছিল।
টেকনাফ সমুদ্র সৈকতের উন্মুক্ত মঞ্চে প্যান্ডেল তৈরী হলেও এবার বিজয়া সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। সৈকতের বালিয়াড়িতে হয়নি বিদায় অঞ্জলি প্রদান অনুষ্ঠান। তবু বেলা সাড়ে ৩ টার দিকে সব প্রতিমা ধর্মীয় রীতি মেনে সৈকতে দেয়া হয় বিসর্জন।
টেকনাফ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শিব পদ ভট্টাচার্য জানান, ৩টি মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে টেকনাফ ও শামলা পুর সমুদ্র সৈকতে। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিজয়া সম্মেলন না হলেও বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্য বছর সৈকতে প্রতিমার বিদায় অঞ্জলি প্রদান করা হলেও এবার ট্রাকের তোলার আগে মণ্ডপে ওই অঞ্জলি শেষ করা হয়। ফলে ট্রাক থেকে সোজা সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে।
টেকনাফ কেন্দ্রীয় বিষ্ণু মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সন্তোষ কুমার শীল জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভার সিদ্ধান্তের আলোকে ৭ দফা নির্দেশনা এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের পুজোকালীন সময়ে করণীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনামূলক ২৬ দফা মেনে এবারের দুর্গোৎসব শেষ হয়েছে।
সোমবার ২৬ অক্টোবর দুপুর আড়াই টার দিকে ট্রাকযোগে প্রতীমা আনা হয় । এরপর ভক্তদের কাঁধে চড়ে সৈকতে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বিসর্জনের জন্য।
প্রতীমা বিসর্জনে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস বাহিনী ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। সৈকতের পয়েন্টগুলোতে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা।
হিন্দু সম্প্রদায়ের মতে, টানা পাঁচদিন মৃন্ময়ীরূপে মন্ডপে মন্ডপে থেকে ফিরে গেছেন কৈলাশে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে। দূর কৈলাশ ছেড়ে মা পিতৃগৃহে আসেন দোলায় চড়ে। সোমবার বিজয়া দশমীতে বিদায় নিয়েছেন ঘোড়ায় চেপে।
Posted ১:১৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta