কক্সবাংলা ডটকম(২৫ মার্চ) :: ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ১১টি দেশ। রোববার সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে দেশগুলোর প্রতিনিধিরা বৈঠক করে এ আপত্তি জানান।
বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সুইডেন, ডেনমার্ক, কানাডা, ফ্রান্স, স্পেন, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে।
তিনি আরও জানান, আপত্তির কথা ১১টি দূতাবাস জানালেও বৈঠকে ৯টি দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘ঢাকায় অবস্থিত ১১টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমার সঙ্গে বৈঠকের একটি আবেদন করেছিলেন। আবেদনে তারা ডিজিটাইল সিকিউরিটি আইন নিয়ে কথা বলতে চেয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আজকে বৈঠকে আইনটি নিয়ে তাদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা হয়েছে। আইনের কয়েকটি ধারা সম্পর্কে তারা তাদের বক্তব্য পেশ করেছেন। আমরা তাদের বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে শুনেছি।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সব বক্তব্য শুনে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেসব ধারা সম্পর্কে প্রস্তাবনা এসেছে, তা নতুন করে ভেবে দেখা হবে। প্রয়োজনে আমরা বৈঠক করব।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের ধারা ২১, ২৫, ২৮ এবং ৩৫ নিয়ে কূটনীতিকরা আপত্তি জানিয়েছেন। এই ধারাগুলো নিয়ে তাদের আপত্তি লিখিতভাবে আইসিটি বিভাগে পাঠানো হবে।’
উল্লেখ্য, সমালোচনার মুখে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বিলুপ্ত করে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের খসড়া চূড়ান্ত করেছে সরকার।
তবে নতুন আইনের খসড়া নিয়েও বিতর্ক দেখা দেয়। বিশেষ করে গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।
আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে- ‘কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদান করা হয়, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ।’
এর শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা জরিমানা। এ ধারার অপরাধ জামিনঅযোগ্য। এ বিধান হয়রানিমূলক এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা তথা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী হওয়ায় ধারাটি বাতিলের দাবি করেন গণমাধ্যম কর্মীরা।
পরে ৫৭ ধারা বাদ দিয়ে নতুন আইন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের খসড়া অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। খসড়ার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এতেও আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারার অনুরূপ বেশকিছু বিষয় ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে রাখা হয়েছে।
৫৭ ধারায় অপরাধের ধরনগুলো উল্লেখ ছিল একসঙ্গে, কিন্তু নতুন আইনে সেগুলো বিভিন্ন ধারায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে।
Posted ৫:০৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৫ মার্চ ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta