কক্সবাংলা ডটকম :: শেষ পর্যন্ত কি পঞ্জশির দখল করে ফেলল তালিবানরা? সোমবার তালিবানদের তরফে এমনই দাবি করা হয়েছে। আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজের তরফেও এই খবরের সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে। এমন কি, চিনের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমও তালিবানদের পঞ্জশির দখলের খবর ফলাও করে প্রকাশ করা হয়েছে।
যদিও পঞ্জশির এখনও পুরোপুরি হাতছাড়া হয়েছে বলে মানতে রাজি নন তালিবান বিরোধী নেতা প্রয়াত আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ। এ দিনও তালিবানি শাসনের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার জন্য আফগানিস্তানের মানুষের কাছে আবেদন করেছেন মাসুদ। তাঁর আরও দাবি, পঞ্জশির পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন কৌশলগত ভাবে সুবিধাজনক জায়গাগুলি নর্দান অ্যালায়েন্সের বাহিনীর দখলেই রয়েছে। যদিও আফগানিস্তানের স্বঘোষিত উপরাষ্ট্রপতি আমরুল্লাহ সালেহ তাজিকিস্তানে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে খবর।
এতদিন গোটা আফগানিস্তানে দখল করে ফেললেও পঞ্জশিরে গিয়ে থমকে গিয়েছিল তালিবান যোদ্ধারা। এ দিন অবশ্য তালিবানদের তরফে পঞ্জশির দখল করার জোরালো দাবি করা হয়েছে। এমন কি, পঞ্জশিরে তালিবানরা নিজেদের পতাকা তুলছে, এমন ভিডিও-ও সামনে এসেছে। তালিবানদের প্রধান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘এই জয়ের সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের দেশ যুদ্ধের কবল থেকে মুক্ত হল।’
পঞ্জশির শেষ পর্যন্ত সত্যিই দখলে চলে এলে এবার আফগানিস্তানে তালিবান সরকার গঠনেও গতি আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে। গত ৩১ অগাস্ট আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তার পরেও পঞ্জশির গলার কাঁটার মতো বিঁধে ছিল তালিবানদের কাছে। তালিবানদের তরফে দাবি করা হয়েছে, চিন, পাকিস্তান, রাশিয়া, তুরস্ক, ইরানের মতো দেশগুলি নতুন তালিবান সরকারের পাশে থাকবে। তালিবান সরকারের শপথেও এই দেশগুলিকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বলেই খবর।
গোটা আফগানিস্তান এখন তালিবানদের কব্জায়। চলছে সরকার গঠনের প্রয়াস। তালিবানদের এই দাপটে কী অবস্থায় রয়েছেন পাঞ্জশিরে তালিবানদের প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা আহমেদ মাসুদ? কোথায় দেশের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা তালিবান বিরোধী আমিরুল্লাহ সালেহ? তার জবাব দিলেন তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। তাঁর দাবি, এই দু’জনেইপ্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে পালিয়েছেন।
যদিও এক টুইট বার্তায় পাঞ্জশিরের প্রতিরোধ বাহিনীর নেতা মাসুদ জানিয়েছেন যে, তিনি নিরাপদেই রয়েছেন। তবে এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
এদিকে, কাবুলে তালেবানের দাপট বাড়তেই প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি আপগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যান। সেই সময় আমিরুল্লাহ সালেহ নিজেকে সেদেশের প্রেসিডেন্ট বলে ঘোষণা করেন। তিনি জানিয়েছিলেন, তালিবানদের ভয়ে তিনি পালাবেন না বা আত্মসমর্পণ করবেন না। মাটি কামড়ে লড়াই চালাবেন। যদিও তালিবানদের দাবি শেষ পর্যন্ত প্রাণ ভয়ে প্রতিবেশী দেশেই পালিয়েছেন তিনি।
বিশ্বের কাছে নিজেদের উন্নত প্রশাসক হিসাবে তুলে ধরতে মরিয়া তালিবানরা। জার্মানদের তালিবানদের তরফে বার্তা, বার্লিনের তরফে আফগানিস্তানে যেকোনও ধরণের বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হবে। তালিবান মুখপাত্র বিল্ড নিউজ-কে দেওয়া সাক্ষাত্কারে এি দাবি করেছেন বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ। ইউরোপীয় ইউনিয়ান পোক্ত করতে জার্মানদের ভূমিকারও প্রশংসা করেছেন এই তালিবান নেতা।
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাঞ্জশির এখন তালিবানদের দখলে। মাসুদের বাড়ি থেকে মূল প্রাদেশিক প্রশাসনিক ভবন এখন জেহাদিদের কব্জায়। পাঞ্জশিরের আকাসে উড়ছে তালিবান পতাকা। পুরো আফগানিস্তান দখলের পর পরই যুদ্ধ শেষ বলে দাবি করেছেন তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। তাঁর দাবি, এবার আফগানিস্তান ধীরে ধীরে সর্বক্ষেত্রে স্থিতীশীল ও উন্নত দেশ হয়ে উঠবে। দেশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় তালিবান যোদ্ধাদের সঙ্গে গত ২০ বছর ধরে প্রশিক্ষিত নিরাপত্তাককর্মীদেরও নিয়োগ করা হবে।
ذبیح الله مجاهد، سخنگوی طالبان، در یک کنفرانس خبری در کابل میگوید که جنگ در کشور ختم شده است و آنان امیدوار است پس از این افغانستان به یک کشور با ثبات مبدل شود.#طلوعنیوز pic.twitter.com/6fAwoyWunB
এখনও আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠন করেনি। শোনা যাচ্ছে তালিবানদের অভ্যন্তরের দ্বন্দ্বই এর মূল কারণ। যদিও এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন তালিবান মুখপাত্র। দ্রুত তালিবান সরকার গঠনের কথা বললেও তা কবে সে সম্পর্কে কিছি মুখ খুলতে চাননি ওই তালিব নেতা।
Posted ৭:২৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta