শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দুর্বল বিএনপির পেছনে কেন লেগেছে আওয়ামী লীগ?

বুধবার, ০৪ এপ্রিল ২০১৮
380 ভিউ
দুর্বল বিএনপির পেছনে কেন লেগেছে আওয়ামী লীগ?

কক্সবাংলা ডটকম(৪ এপ্রিল) :: সত্যি কথা বলতে কি, বাংলাদেশের প্রায় সবাই মনে করে যে ধনীরা অসৎ। অবশ্যই সবাই অসৎ নন, কিন্তু এরা খুবই বিরল ব্যতিক্রম। যেহেতু অধিকাংশ ধনীই তাদের বর্তমান সম্পদ রক্ষা বা ভবিষ্যৎ অর্জনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে জড়িত, তাই সাধারণ মানুষের ধারণা হলো অনেক রাজনীতিবিদও দুর্নীতিগ্রস্ত।

যেহেতু জনগণের সাধারণ ধারণাটা অতি প্রবল এবং সবাই এটাকে একরকম মেনে নিয়েছে, তাই দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও কোন রাখঢাক নেই। ক্ষমতা কাঠামোর মধ্যে দুর্নীতিকে প্রায় বৈধ উপজীব্য হিসেবে দেখা হয়। অনেকেই মনে করেন রাজনীতিতে যোগ দিলে দ্রুত কাঁচা টাকা রোজগার করা যায়। কারণটা সহজ। পুলিশ ও আইনি বাধা থেকে এখানে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। তাই কেউ যদি দ্রুত ধনী হতে চায় এবং দীর্ঘসময় ধনী থাকতে চায়, তাহলে রাজনীতি মোটামুটি নিরাপদ জায়গা। কিন্তু সেটা পেতে হলে বিরোধী দলের সাথে থাকলে চলবে না।

বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে এবং তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই নেতাদের অনেকেই বিশাল পুজিপতি। যদিও বিএনপি বলছে যে, নির্বাচনের বছরে তাদের দলের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্যই এটা করা হচ্ছে, কিন্তু এমনটা হবে বলে মনে হয় না কারণ এই দেশে দুর্নীতি করাটা প্রায় স্বাভাবিক ব্যাপার।

এমনকি খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে জেলে রাখা এবং জামিন ঝুলিয়ে রাখার পরও তাকে দুর্নীতিগ্রস্থ মনে করে না মানুষ। বরং তিনি রাজনৈতিক হয়রানির শিকার বলে মনে করা হয়। তাই সব বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আনার উদ্দেশ্য তাদের অর্থনৈতিক লেনদেনকে পরিস্কার করা নয়, বরং নির্বাচনের আগ দিয়ে শীর্ষ নেতাদের চাপের মধ্যে রাখাই এর উদ্দেশ্য।

দুর্নীতি দমন কমিশন কি বলির পাঁঠা?

এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (এসিসি) বিরুদ্ধে যথারীতি সমালোচনা শুরু হয়েছে যেহেতু তারা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন বলেছে যে তারা এ ধরনের তথ্য ও অভিযোগ পেয়েছে যে এই নেতাদের ব্যাংক একাউন্ট থেকে ‘অস্বাভাবিক লেনদেন’ হয়েছে। হয়তো এটা সত্য হতে পারে। এগুলোর খোঁজ-খবর করা যেতে পারে। কিন্তু এর মানে কি এই যে দুর্নীতি দমন কমিশন শুধু বিএনপি নেতাদের তথ্যই পেয়েছে? এটা এই নেতাদের ব্যাংক একাউন্টের পেছনে গোপন নজরদারির চেয়েও আসলে অস্বাভাবিক।

জনগণ আসলে এ ধরনের ব্যাংক একাউন্ট নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না, কারণ বর্তমান রাজনীতিতে যে খরচ, সেখানে কোন বড় নেতাকেই খুব একটা সৎ মনে করা হয় না। শুধু আশা করা হয় যাতে তাদের অর্জনের একটা ভাগ তাদের অনুসারী আর সমর্থকদের দেন তারা। তাই যদি বিএনপি নেতাদের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্য থাকে, তাতে কাজ হবে না। বাংলাদেশে দুর্নীতির কারণে সুনাম ক্ষুণ্ণ হয় না। এটা আসলে কোন ব্যাপারই না যে, কেউ এখন দুর্নীতিগ্রস্থ কি না।

আসলে বিএনপি নেতারা যে অভিযোগ করছেন যে দুর্নীতি দমন কমিশন সরকারের রাজনৈতিক আদেশ মেনে কাজ করছে, তাতেও দুর্নীতি দমন কমিশনের সুনামের কিছু হয় না। কেউই আশা করে না যে দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতির বিরুদ্ধে নাটকীয় কিছু একটা করবে। এটাকে মূলত শক্তিহীনই মনে করা হয়। যাদের পেছনে কমিশন ছুটছে, তারা মূলত ছোট-খাটো ব্যক্তি। কমিশনের আইন, নীতিমালা, পদ্ধতি, আইনজীবী, কর্তৃপক্ষ এবং রাজনৈতিক প্রভাব- সব দিক থেকেই সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের শক্তি থাকলে এতদিনে ব্যাংকিং খাতে তারা তৎপর হতো, কিন্তু সেটা হয়নি। আসলে ব্যাংকিং খাত এতটাই শক্তিশালী যে এ অঞ্চলে এ খাতকেই সবচেয়ে অ-স্বচ্ছ মনে করা হয়। তারা সম্প্রতি এটাও দাবি করেছে যে ব্যাংকের দুর্নীতি নিয়ে গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে। দায়মুক্তি চাওয়ার মাধ্যমে তারা নিজেদেরকে নজরদারির উর্ধ্বে বলে মনে করছে।

এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকিং খাতের প্রধানদের ডিনারের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন যেটা থেকে বোঝা যায় বাংলাদেশে কাদের গুরুত্ব আছে আর কারা গুরুত্বহীন..

কিন্তু বিএনপির পেছনে কেন?

সবচেয়ে কৌতুহল উদ্দীপক প্রশ্ন হলো আওয়ামী লীগ কেন এত উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে অকার্যকর করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। যেমনটা হওয়ার কথা, বিএনপির নেতাকর্মীদের ঘাড়ে যে বহু বহু মামলার বোঝা, সেগুলোর কারণে নির্বাচনে কার্যকরভাবে সংগঠিত হওয়াটাই বিএনপির জন্য কঠিন হয়ে গেছে। সর্বোপরি খালেদা জিয়া রয়েছেন কারাগারে এবং শীর্ষ নেতাদের আরও অনেকেই শেষ পর্যন্ত সেখানে যেতে পারেন। এতে করে আরও অকার্যকর হয়ে পড়বে বিএনপি। যদি সেটা হয়, ভোট আসা পর্যন্ত নির্বাচনী শক্তি হিসেবে তাদেরকে গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই।

কিন্তু মূল বিষয় হলো, ভোটারদের কি হবে। আওয়ামী লীগের গত পাঁচ বছর তার আগের পাঁচ বছরের মতো অত আরামদায়ক ছিল না। আগের মেয়াদে তাদের যে জনপ্রিয়তাটুকু ছিল পরের মেয়াদের সহিংসতা কোন্দলের কারণে সেটা কমে গেছে। তাদের জনপ্রিয়তা কতটুকু আছে তা নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। আওয়ামী লীগ বিরোধীরা দাবি করছেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জিততে পারবে না, যদিও অনেকে এ মতের বিরোধিতাও করেন।

যদি ক্ষুব্ধ ভোটাররা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ভোট দেয়, যেটা বাংলাদেশে হয়ে থাকে, তাহলে দেখা যাবে দলীয় তৎপরতা ছাড়াই বিএনপি ভালো করছে। আর আওয়ামী লীগের সেটা পছন্দ হবে না। আওয়ামী লীগ এটাও ভালোভাবেই জানে কিন্তু এই অখুশী ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্য আওয়ামী লীগ কি করতে পারে, সেটাও এখনও অনিশ্চিত।

যদি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অনেক মানুষ ভোট দেয়, তাহলে দলের পরিকল্পনা কি হবে, সেটাও এখন নিশ্চিত হওয়ার উপায় নেই। বিএনপি অবশ্যই শক্ত করে বসে থাকবে এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ বিরোধী ভোটারদের সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের ধারণার চেয়েও বেশি ভোটার যদি তাদের বিরুদ্ধে চলে যায়, তাহলে আওয়ামী লীগ কি করবে?

নিশ্চিতভাবে একটা মজার পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।

380 ভিউ

Posted ৭:০১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৪ এপ্রিল ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com