সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: জাসদ সভাপতি ও সাবেক সফল তথ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসানুল হক ইনু এমপি বলেছেন- বাংলাদেশকে সামনে এগুতে হলে, একদিকে রাজাকারের ধারা ধ্বংস করতে হবে, অপরদিকে ঘর কাটা ইঁদুর দুর্নীতিবাজ, দখলবাজ ও লুটেরাদের ধরাও ধ্বংস করে দিতে হবে।
১২ মার্চ বিকাল ৪টায় জাতীয় বীর কাজী আরেফ আহমেদ মিলনায়তনে জেলা জাসদ কর্তৃক আয়োজিত ও জেলা জাসদের সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী টুটুল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাসদ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তথ্যমন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক সফল তথ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসানুল হক ইনু প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন- “ইবলিশ ফেরেশতার পদ ছেড়ে যেমন দোজখের ঠিকাদারী নেয়, ঠিক তেমনি জিয়া সহ কিছু চেতনাচ্যূত মুক্তিযোদ্ধা রাজাকারীর ঠিকাদারী নিয়েছে। বীর উত্তম জিয়ার প্রধানমন্ত্রী রাজাকার শাহ আজিজুর রহমান ছিল, তাই তাকে নিয়ে আজকে প্রশ্ন উঠাই স্বাভাবিক।”
স্বাধীনতার ৫০ বছরের মাথায় সাড়ে সাত কোটি থেকে ১৬ কোটি মানুষ হলেও, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে হত্যা সহ বার বার শামরিক শাসনের ছোবলে দেশ ক্ষত বিক্ষত হলেও জঙ্গী-উগ্র সাম্প্রদায়িক চক্রের দেশ বিরোধী অর্ন্তঘাত, সন্ত্রাস হলেও বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন একেবারেই কম নয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা আজো টিকে থাকা নিঃসন্দেহে সবচাইতে বড় অর্জন। মোট জাতীয় আয়, মাথাপিছু গড় আয়, মোট আভ্যন্তরীন উৎপাদন সহ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিশ^ পরিসরে আজ বিস্ময়কর হিসেবে বিবেচ্য। গত ২৬ ফেব্রুয়ারী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুনেত্রীত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হয়েছে।
তিনি আরও বলেন- বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাঙলাদেশ নামক রাষ্ট্রের ৫০ বছর এবং জাসদের ৫০ বছর এই বৃত্তে গাঁথা জমজ সন্তান তুল্য।
বঙ্গবন্ধু হত্যাসহ যুদ্ধাপরাধের বিচার অনেক পদক্ষেপ দেশকে বিচারাহীনতার অপসংস্কৃতি থেকে বের করতে বলিষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিরোধ করেছে সামরিকতন্ত্র এবং জঙ্গীতন্ত্র।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ আমাদেরকে কিছুই দেয়নি যারা আজ বলছে, তারা আসলেই দেশকে পেছনের দিকে টেনে ধরার অপশক্তি। তারা হচ্ছে- রাজাকার-জঙ্গী-সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানপন্থার চক্র। যারা আজ বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জড়িয়ে বাংলাদেশ বিরোধী চক্রান্ত ধারাবাহিকভাবে চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন- দেশের ৫০ বছরের মাথায় আজ চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আরেকটা জাতীয় উল্মফনের মাধ্যমে দেশকে আরেক ধাপ উপরে তোলা।
৫০ বছরের মাথায় আমরা দেখি সামরিক শাসক জঙ্গী-জামায়াত-বিএনপি কর্তৃক ধামাচাপা দেয়া ইতিহাস পূনরুদ্ধার হচ্ছে। অনেক সূত্রে প্রকাশ পাচ্ছে যেমন- অনেক শয়তানকে ফেরশতা এবং অনেক অসুরকে দেবতা বানানো হয়েছিল। সেইসব ধামাচাপা দেয়া সত্য সব আজ প্রকাশ পাচ্ছে। যা ঐ সামরিক-সাম্প্রদায়িক চক্রের অপশক্তিরা মানতে পারছে না। তাই আজ বাংলাদেশকে সামনে এগুতে হলে, এই অপশক্তির পিছুটান ঝেড়ে ফেলে দিয়েই এগোতে হবে।
সামরিক শাসক-জঙ্গী-বিএনপির পাথর চাপা ইতিহাস যখন আলোতে আসছে, তখন বিএনপি-জামায়াত চক্র গোস্সা করছে। কিন্তু ইবলিশ ফেরেশতার পদ ছেড়ে যেমন দোজখের ঠিকাদারী নিয়েছিল, ঠিক তেমনি জিয়া সহ কিছু চেতনাচ্যূত মুক্তিযোদ্ধা রাজাকারীর ঠিকাদারী নিয়েছে।
বীর উত্তম জিয়ার প্রধানমন্ত্রী রাজাকার শাহ আজিজুর রহমান ছিল, তাই তাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠাই স্বাভাবিক। ইবলিশের মত ভোল পাল্টানো চেতনাচ্যূত ও তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারের সাথে ঘর করছে, রাজাকারী করছে, পাক পন্থার অনুসারী হয়েছে।
গণতন্ত্রের রাজনীতিতে বিএনপি ফেরৎ আসাতে চাইলে সামরিক শাসক জিয়াকে বাদ দিয়েই আসতে হবে। সামরিক শাসন মৃত্যুদন্ডযোগ্য অপরাধ তা স্বীকার করেই আসতে হবে।
তাই বাংলাদেশকে সামনে এগুতে হলে, একদিকে রাজাকারের ধারা ধ্বংস করতে হবে, অপরদিকে ঘর কাটা ইঁদুর দুর্নীতিবাজ, দখলবাজ ও লুটেরাদের ধরাও ধ্বংস করে দিতে হবে।
৫০ বছরের মাথায় বাংলাদেশকে আরেক ধাপ উপরে তুলতে জাসদ রাজাকারের ধারা ও দুর্নীতিবাজদের ধারা ধ্বংস করে সুশাসন ও সমাজতন্ত্রের পথে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও জাতীয় নারী জোট সভাপতি আফরোজা হক রীনা বলেন- বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচন, গড় আয়ু বৃদ্ধি, মাতৃমৃত্যু, শিশু মৃত্যু হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী-পুরুষের বৈষম্য ইত্যাদি বিবিধ সামাজিক সূচকেও বাংলাদেশের সাফল্য অনেক বড় এবং আরো সুশৃংখলভাবে এগিয়ে নিতে হবে। বিদেশীর পরামর্শের বাইরে সাবলম্বি অর্থনীতি গড়ার উদ্যোগও যুগান্তকারী।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জাসদ কক্সবাজার জেলা সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদ, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ হোসাইন মাসু, সাংগঠনিক এডভোকেট রফিক উদ্দিন চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য রূপনাথ চৌধুরী নাচ্চু, লস্কর আলী, শফিউল আলম, শহর জাসদ সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ, সহ-সভাপতি সাংবাদিক আমান উল্লাহ আমান, জাতীয় যুব জোট কক্সবাজার জেলা সভাপতি অজিত কুমার দাশ হিমু, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম সিকদার, সহ-সভাপতি জাকের হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, মোঃ আমান উল্লাহ আমান, শ্রমিক জোট বাংলাদেশ, কক্সবাজার জেলা সভাপতি আবদুল জব্বার, কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ দাশ, সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক আসাদ, মৎস্য নারী জোট সভাপতি, সম্পাদক, লোড আনলোড শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সবুজ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মাসুদ আহমেদ, কক্সবাজার জেলা সভাপতি আবদুর রহমান প্রমুখ।
Posted ১১:০৭ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ মার্চ ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta