কক্সবাংলা ডটকম(১৬ মে) :: কেনা এবং উপহার মিলিয়ে দেশে আসা এক কোটি দুই লাখ ডোজের মধ্যে বর্তমানে মজুত রয়েছে ছয় লাখ ৮০ হাজার ৫ ডোজ ভ্যাকসিন। এদিকে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার বাকি রয়েছে ১৪ লাখের বেশি মানুষ, যারা এরিমধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন।
রবিবার (১৬ মে) স্বাস্থ্য অধিদফতরের টিকা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, দেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরুর পর থেকে আজ (১৬ মে) পর্যন্ত করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩৭ লাখ ৮৩ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬৭৫ আর নারী ১৩ লাখ ২১ হাজার ৪০৮ জন।
অপরদিকে দেশে এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৯১২ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৩৬ লাখ আট হাজার ৯৭৯ আর নারী ২২ লাখ ১০ হাজার ৯৩৩ জন।
দুই ডোজ মিলিয়ে মোট টিকা নিয়েছেন ৯৫ লাখ ১৯ হাজার ৯৯৫ জন। সে হিসেবে দেশে বর্তমানে টিকার মজুত রয়েছে ছয় লাখ ৮০ হাজার ৫ ডোজ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম আজ নিয়মিত বুলেটিনে জানিয়েছেন, যে পরিমাণ অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন মজুত আছে তাতে করে প্রথম ডোজ নেওয়া ব্যক্তিদের শতভাগকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে না।
ভ্যাকসিন কার্যক্রম বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালগুলোতে কী পরিমাণ মজুত আছে তার ওপর নির্ভর করে কবে নাগাদ বন্ধ হতে পারে। আমাদের কাছে যে পরিমাণ মজুত আছে তাতে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ চলতে পারবো বলে ধারণা। তবে এটি প্রতিষ্ঠানভেদে এক-দুইদিন কম বেশি হতে পারে।
কারও যদি আজকে মজুত শেষ হয়ে যায়, তাহলে কালকে কাউকে আর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে না। মজুত শেষ হয়ে গেলে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা নতুন করে সংগ্রহ করতে না পারি। যারা অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রেজেনেকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন তাদের অন্য কোম্পানির ভ্যাকসিন দিয়ে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সুযোগ নেই।’
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দেশে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৭২ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৯ জন।
দেশে টিকা উৎপাদনের জন্য এখনও কাউকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান।
রবিবার (১৬ মে) তিনি বলেন, টিকা তৈরির জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে কোনও কোনও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এটা ভুল নিউজ।
এদিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরও।
এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসকে চীনা সিনোফার্ম টিকা উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। প্রকৃতপক্ষে টিকা উৎপাদনের অনুমতি এখনও কাউকে দেওয়া হয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে এ ধরনের খবর প্রকাশ করে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি না করার অনুরোধ করা হয়।
প্রসঙ্গত, আজ বেশ কিছু গণমাধ্যমে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের বরাতে বলা হয়, দেশে চীনের সিনোফার্ম টিকা উৎপাদনের জন্য দেশীয় কোম্পানি ইনসেপটাকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এটি সঠিক খবর নয় বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। তবে দেশের তিন ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা যাচাই চলছে বলেও জানিয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে সভাপতি করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক-২, অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে সদস্য সচিব করে গঠিত হওয়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা সংগ্রহ বিতরণ বিষয়ক আন্তমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির সভায় দেশের তিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানির সক্ষমতা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়।
কোম্পানি তিনটি হচ্ছে, ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত বলে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৩৬৩ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮০ হাজার ১৫৯ জন।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫ হাজার ৪৩০টি। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৭ লাখ ৭ হাজার ৭১৬টি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা আক্রান্ত থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬০১ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ৭ লাখ ২২ হাজার ৬৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এছাড়া শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যু হার ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া ২৫ জনের মধ্যে পুরুষ ১৮ জন, বাকীরা নারী।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হন। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
Posted ৯:৪০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৬ মে ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta