মঙ্গলবার ২৬শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ২৬শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দেশে দ্রব্যমূল্যের রেকর্ড ঊর্ধ্বগতি : মাসে ৫০ হাজার টাকায়ও চলছে না সংসার

মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর ২০২১
297 ভিউ
দেশে দ্রব্যমূল্যের রেকর্ড ঊর্ধ্বগতি : মাসে ৫০ হাজার টাকায়ও চলছে না সংসার

কক্সবাংলা ডটকম(১৬ নভেম্বর) :: জীবিকা নির্বাহ করতে আহার্য, নিত্যকার জিনিসপত্রের জোগান ও সংগ্রহ প্রতিনিয়ত করতেই হয় মানুষকে। কিন্তু রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে ভালো বেতনধারী—সবাই আজ জীবন চালাতে চাপের মুখে পড়েছেন। আমরা জানতে পারছি, করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক ধাক্কায় নতুন করে দরিদ্রের সংখ্যা বেড়ে গেছে কয়েক কোটি। এমন পরিস্থিতিতে কোথায় যাবে সাধারণ মানুষ? অস্থির বাজারদর নিত্যপণ্যের। চাল, ডাল থেকে শুরু করে কাঁচাবাজারেও দ্রব্যমূল্য হু হু করে বেড়ে চলেছে।

আমি নিজেই সংসারের সদাইপাতি করি বিধায় প্রতিটি নিত্যপণ্যের মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধি ভালো করে বুঝতে পারি। নাজিরশাইল হাফ সেদ্ধ চাল আগে এক কেজি কিনতাম ৬৬ টাকায়। আর এখন কিনছি ৭৫ টাকা! ছোলা ৮৫ টাকা, চিনি ৮২ টাকা, ছোট দানা মসুর ডাল ১২০ টাকায়। অ্যাঙ্কর ডাল আর মুগ ডালেরও একই অবস্থা। ভোজ্যতেল ৫ লিটার কিনেছি ৭২০ টাকায়, যা আগে ছিল ৬৭০ টাকা। লাগামছাড়া এমন দাম দেখে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে আর ভাবছি না। কোনোরকম বেঁচে থাকাটাই এখন মুখ্য। দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকা, দেশি রসুন ১৬০ থেকে ২০০ টাকা।

দ্রব্যের দাম বাড়লে মুদ্রাস্ফীতিও বাড়ে সমানতালে। গেল দুই অর্থবছরে মুদ্রাস্ফীতি ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়ে ধাপে ধাপে তা ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ হয়েছে। নভেম্বর মাসে আরও বাড়ে মুদ্রাস্ফীতি। এ সবকিছুর দায় বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্যের ওঠা-নামার ওপর দিলেই হবে না কেবল; মধ্যস্বত্বভোগী ও ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের একটি দুষ্টচক্র হরহামেশাই সারা বছর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সমান দায়ী। অথচ ন্যূনতম মানবিকতাবোধের চর্চা যদি মানুষের থাকত, তাহলে আমাদের কাছে এই অশনিসংকেত মরণফাঁদ হয়ে সামনে দাঁড়াত না।

আমার পরিচিত বেলাল সাহেব পেশায় বেসরকারি চাকুরে। বেতন সর্বসাকল্যে পান ৫০ হাজার। এর ভেতর দুই বেডের বাসাভাড়া, গ্যাস, ইলেকট্রনিক বিলসহ ২২ হাজার চলে যায়। বাকি টাকা দিয়ে ৬ জনের একটি পরিবারের ৩০ দিনের আহার্য, সন্তানের লেখাপড়ার খরচ, বৃদ্ধ মা-বাবার চিকিৎসা খরচ, সাংসারিক অন্যান্য খরচ, নিয়মিত হাতখরচ, প্রতিদিনের যাতায়াতভাড়া—এসব মেটাতে মাস শেষে ধারদেনা করে চলতে হয়। নিজের জীবন রঙিন করে দেখার স্বপ্ন উবে গেছে বেলাল সাহেবের সেই কবে। আর এই সামান্য টাকায় কি মাথা গোঁজার জন্য জায়গা বা ফ্ল্যাট কিনবেন, ব্যাংকে কিছু সঞ্চয় রাখবেন, বুঝতে উঠতে পারেন না তিনি।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) খোলাবাজারে পণ্য বিক্রিতেও একই হাল। কয়েক দিন আগে দ্রব্যাদি কিনতে গিয়ে দেখা গেল, আগের চেয়ে দাম এখন কিছুটা বাড়তি। কোথায় গেলে সাধারণ মানুষের আহার্য জুটবে,এখন তা কেউ বলতে পারবে না। এমনই একটি ধোঁয়াশা সংকটের সময়কাল চলছে।

মানুষের আয় যতটা না বেড়েছে, তার চেয়ে খরচের পরিমাণ তিন গুণ বেড়ে চলেছে দিনকে দিন। বাংলাদেশ ব্যুরো খানা আয়-ব্যয় জরিপে ২০১৫ সালের জরিপে দেখা যায়, নিম্ন আয়ের মানুষের মাসিক গড় আয় ৪ হাজার ৬১০ টাকা, যা এর আগের তুলনায় ৫৩৯ টাকা কম। বিপরীতে সবচেয়ে উচ্চ আয়ের মানুষের মাসিক গড় আয় বেড়েছে ৪৫ হাজার ১৭২ টাকা। তবে এ বিষয়ে প্রকৃত তথ্য পাওয়া দুষ্কর।

ধাপে ধাপে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদির দাম বেড়েই চলেছে। সবজির বাজারে গেলে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজির নিচে একটি সবজিও পাওয়া যায় না। টমেটো ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় ওঠানামা করছে। সামান্য ধনেপাতা পর্যন্ত খাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে! অথচ প্রায় সব খাবারে ফরমালিন, ডিডি, নানা রকম কীটনাশক ব্যবহার কমছেই না। মাঝেমধ্যে মনে হয় খাবার নয়, জেনেশুনে বিষ খাচ্ছি বেঁচে থাকার তাগিদে।

একটি রাষ্ট্রের সুখ-শান্তি নির্ভর করে সরকারের যুগোপযোগী জনগণের কল্যাণে গৃহীত সফল পরিকল্পনা এবং তার যথাযথভাবে বাস্তবায়ন। সরকারের ক্লিন ইমেজ তৈরিতেও এটি বিরাট ভূমিকা পালন করে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগামিতা রোধকল্পে সরকারের উচিত ব্যবসায়ী, আড়তদারদের সঙ্গে বসে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা। প্রয়োজনে মাঠপর্যায়ে এখনই সাঁড়াশি অভিযান চালানো হোক, বাড়ানো হোক কড়া নজরদারি।

পেঁয়াজ পচে। সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। অথচ সাধারণ জনগণ খেতে পায় না। এ কেমন কথা? যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ানো হচ্ছে, সেভাবে তো কখনোই বেতন বাড়ানো হয় না! তাহলে মানুষ কীভাবে খেয়ে-পরে নিরাপদ বাসস্থানে বেঁচে থাকবে? সরকারের উচিত এখনই দ্রব্যমূল্যের নাগাল টেনে ধরার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের অন্তরায় চলতি কোনো ফাঁকফোকর থাকলে তা এখনই বন্ধ করা প্রয়োজন। সাধারণ মানুষকে স্বস্তিতে বাঁচতে দিন এবং জনজীবন সচল ও চলনসই রাখতে এখনই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানা সময়ের দাবি।

297 ভিউ

Posted ১০:৩৮ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com