কক্সবাংলা ডটকম(২০ ফেব্রুয়ারী) :: না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের গত শতকের আশি ও নব্বই দশকের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সাবা তানি। (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। সোমবার তাকে রাজধানীর উত্তরার বাসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর। তিনি মা, দুই ভাই, দুই বোন ও এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তবে এ সঙ্গীতশিল্পী কীভাবে মারা গেছেন তা তার পরিবারের কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। রাজধানীর উত্তরার বাসায় তিনি মাকে নিয়ে একা বসবাস করতেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৮ ফেব্রুয়ারি তার মা রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে সাবার বড় বোনের বাসায় বেড়াতে যান। রাতে তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন। কিন্তু সেদিন সন্ধ্যার পর থেকে সাবা কারও ফোন রিসিভ করছিলেন না।
সোমবার সকালেও ফোন রিসিভ না করায় পরিবারের লোকজন বাসায় এসে বাড়ির কেয়ারটেকারকে সঙ্গে নিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পান, বাথরুমের পাশে তিনি অসাড় অবস্থায় পড়ে আছেন।
এরপর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, রোববার রাতেই তিনি মারা গেছেন। সাবা তানির একমাত্র ছেলে আনিদ উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফিরলেই মায়ের দাফনের সব সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে। আপাতত এ সঙ্গীতশিল্পীর মরদেহ বারডেমের হিমাগারে রাখা হয়েছে।
গত শতকের আশি ও নব্বই দশকের পপসঙ্গীতশিল্পী হিসেবে সাবা তানি দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন। এ
সঙ্গীতশিল্পীর বাবা মরহুম শফিকুল ইসলাম চৌধুরী, মা মিসেস হাজেরা চৌধুরী। চিত্রনায়ক নাঈমের মা মালা মুরাদ পন্নী ও সাবাতানির মা মিসেস হাজেরা চৌধুরী আপন দুই বোন। খালাতো বোনের মৃত্যুর সময় নাঈম দেশের বাইরে ছিলেন। সোমবার রাতেই তার দেশে ফেরার কথা।
নাঈমের স্ত্রী শাবনাজের ছোট বোন অভিনেত্রী তাহমিনা সুলতানা মৌ জানান, ছেলে আনিদ এলেই সাবা তানি আপুর নামাজে জানাজা এবং দাফনের বিস্তারিত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তবে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলে গোড়াইতে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হতে পারে। সাবা তানির মৃত্যুতে সঙ্গীতাঙ্গনের অনেকেই শোক প্রকাশ করেছেন। ব্যান্ড তারকা লাবু রহমান ও সাবা তানি প্রায় একই সময়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন।
লাবু বলেন, আমার খুব ভালো একজন বন্ধু ছিল সাবা তানি। এভাবে তার চলে যাওয়াটা সত্যিই অনেক অনেক কষ্টের। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন।
সঙ্গীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, সাবা তানির হঠাৎ এই চলে যাওয়াটা বুকে প্রচণ্ড ক্ষত সৃষ্টি করে দিয়ে গেল। মৃত্যু কত সত্য, কত কঠিন তাই যেন সাবা তানি মনে করিয়ে দিয়ে গেল শেষ সময়ে। তার আÍার শান্তি কামনা করছি।
সাবা তানি ও রবি চৌধুরীর গাওয়া ‘ভালোবাসা বহুরূপী, তাকে চেনা তো যায় না’ গানটি একসময় শ্রোতা দর্শকের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিল।
রবি চৌধুরী বলেন, তার ব্যবহার এতই সুন্দর ছিল যে, সবাই অতি সহজেই তার খুব আপন হয়ে যেত। শাম্মী আখতারের পর আমরা আরেকজন ভালো মানুষকে হারালাম।
সঙ্গীতশিল্পী ফোয়াদ নাসের বাবু জানান, ১৮ ফেব্রুয়ারিও তার সঙ্গে কথা হয়েছিল সাবা তানির। বাবু বলেন, সাবা তানি একাধারে আমার সহকর্মী, বন্ধু এবং আমার শুভাকাক্সক্ষী। এভাবে হঠাৎ করে ও চলে যাবে, এটা আসলে মেনে নেয়া খুবই কঠিন।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও মঞ্চে গান গেয়ে জনপ্রিয় হন সাবা তানি। তার গাওয়া কিছু গজল ওই সময় খুব প্রশংসিত হয়েছিল। সাবা তানির জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘কোনো বৈশাখী রাতে যদি’ ও ‘কিছুক্ষণ’।
Posted ২:২৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta