বৃহস্পতিবার ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

নিউইয়র্কে সাড়াশি অভিযানে দুই বাংলাদেশি গ্রেফতার : স্বামীর পর রোজিনাকেও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হচ্ছে

শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
398 ভিউ
নিউইয়র্কে সাড়াশি অভিযানে দুই বাংলাদেশি গ্রেফতার : স্বামীর পর রোজিনাকেও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হচ্ছে

কক্সবাংলা ডটকম(১৭ ফেব্রুয়ারী) :: কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের ধরতে বাসা-বাড়ি ও কর্মস্থানে সাড়াশি অভিযানে নেমেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। এসব অভিযানে অসংখ্য অভিবাসী
গ্রেফতার হচ্ছেন। এই অভিযানে সম্প্রতি জ্যাকসন হাইটস থেকে গ্রেফতার হয়েছেন দুজন বাংলাদেশি। তাদের নাম মমিনুল ইসলাম ও রাশিদুল কবীর। গত সপ্তাহে তাদের গ্রেফতার করে নিউজার্সি ডিটেনশন সেন্টারে পাঠিয়েছে পুলিশ। জানা গেছে, তাদের এখন দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

সূত্র জানায়, বৈধ কাগজপত্র না থাকায় গত সপ্তাহে মুমিনুল ইসলামকে জ্যাকসন হাইটসে তার কর্মস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়। মমিনুল জানান, জ্যাকসন হাইটসে তিনি একটি ফেব্রিকের দোকানে কাজ করেন। সেখানে এসে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইস কর্মকর্তারা তার কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চায়।তিনি পরিচয়পত্র প্রদর্শনে ব্যর্থ হলে তাকে
গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে, একই দিনে জ্যাকসন হাইটস থেকে রাশিদুল কবীর নামে আরও এক বাংলাদেশিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে। এসব ঘটনায় কমিউনিটিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

আইস কর্মকর্তাদের সাড়াশি অভিযানে আনডকুমেন্টেড অভিবাসীরা সতর্ক চলাফেরা করছেন। কিন্তু কর্মস্থলে অভিযান চালানোর ফলে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। হাজার হাজার আনডকুমেন্টেড বাংলাদেশি পরিবারে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তার অন্ধকার।

সেইফেস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মাজেদা এ উদ্দিন  জানান, গত সোমবার নিউজার্সির ডিটেনশন সেন্টার থেকে মমিনুল ইসলাম নামে একজন তাকে ফোন করে তার পরিস্থিতির কথা জানায়।

তিনি বলেন, ‘মমিনুল জানান, আইস কর্মকর্তারা তাকে জ্যাকসন হাইটসে তার কর্মস্থল থেকে গ্রেফতার করেছে। আইস কর্মকর্তারা সরাসরি দোকানে প্রবেশ করে তার কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চায়।

তিনি পরিচয়পত্র দেখাতে অপারগ হলে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’ মাজেদা বলেন, মমিনুল তাকে জানিয়েছেন, নিউজার্সি ডিটেনশন সেন্টারে তার সাথে আরও একজন বাংলাদেশি রয়েছেন, তাকেও জ্যাকসন হাইটস থেকে গ্রেফতার করেছে আইস।

প্রসঙ্গত, গত মাসে গ্রেফতার হওয়া নিউইয়র্কের জ্যামাইকা এলাকার ব্যবসায়ী কমিউনিটির পরিচিত মুখ কাজী আজাদ আরজু ও নিউজার্সির ব্লুমফিল্ডে নিজ কর্মস্থল থেকে গ্রেফতারকৃত আমিনুল হকসহ ৭ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে আইস।

গত ১০ জানুয়ারি নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে ফেডারেল প্লাজায় নিয়মিত হাজিরা দেওয়ার সময় আরজুকে এবং ন্যুয়ার্ক থেকে আমিনুল হককে গ্রেফতার করে নিউজার্সির ডিটেনশন সেন্টারে পাঠায় আইস ও ফেডারেল পুলিশ। সেখান থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় লুজিয়ানায়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আইস অভিযান জোরদার হওয়ায় অনেকে বিপাকে আছেন। কেউ কেউ দৌঁড়াচ্ছেন আইনজীবিদের কাছে। কিন্তু সমস্যাগুলো সমাধানের মত পথও খোঁজে পাচ্ছেন না।

স্বামীর পর বাংলাদেশি রোজিনাকেও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হচ্ছে

নথিভুক্ত না হওয়া অভিবাসী তিন সন্তানের মা ৩৯ বছর বয়সী রোজিনা খাতুনকে বাংলাদেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার সাময়িকভাবে তাকে দুই মাসের জন্য সেখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম নর্থজার্সি.কম এই খবর জানিয়েছে। এর আগে গত সোমবার তার স্বামী আমিনুল হক বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।

ইমিগ্রেশন ও কাস্টম ইনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বিভাগের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার রোজিনাকে পিটার ডব্লিউ রোডিনো ফেডারেল ভবনে ডেকে পাঠান। নিজের ১৯ বছরের মেয়ে ও ১১ বছরের ছেলে এবং আইনজীবীকে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন তিনি।

দুই মাসের স্থগিতাদেশ পাওয়ার পর রোজিনার ১৯ বছরের মেয়ে ইভানা বলেন, বাড়ি ফেরার জন্য সময় পাওয়ায় তারা স্বস্তি বোধ করছেন। তিনি জানান, আরও বিকল্প খোঁজার চেষ্টা ছাড়াও ভবিষ্যতে বাংলাদেশে তার বাবার কাছে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে ভাবছেন।

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অপরাধে জড়িত অবৈধ অভিবাসীদের তালিকা ও ফেরত পাঠানোর নির্বাহী আদেশ দেন। ট্রাম্পের এই নির্দেশে অনথিভুক্ত ও অপরাধে জড়িতদের ফেরত পাঠানোর কথা বলা হলেও কোনও ধরনের অপরাধে জড়িত নয় কিংবা অভিযোগ থাকলেও সাজাপ্রাপ্ত নয় এমন অভিবাসীদেরও আটক করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এমনকি অভিবাসন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত সাক্ষাতের সময়ও তাদের আটক করা হচ্ছে।

রোজিনা ও তার স্বামী আমিনুলের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এ দম্পতি ২০০৪ সালে দুই সন্তানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। স্থানীয় বটসোয়ানায় একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করে পরিবারের ভরণপোষণ চালাতেন তারা।

ট্যুরিস্ট ভিসার মেয়াদ পার হয়ে গেলে তারা দেশে রাজনৈতিক সহিংসতাকে কারণ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন জানান। তাদের সেই আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। আপিল খারিজ করে দিয়ে ২০০৭ সালেই তাদের প্রত্যাবাসনের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। কয়েক বছর পর এই দম্পত্তির তৃতীয় সন্তান এরিকের জন্ম হয়। ১১ বছরের এই সন্তান এখন মার্কিন নাগরিক।

২০১০ সালে অভিবাসন কর্মকর্তারা আমিনুলকে আটক করেন। এলিজাবেথ কন্ট্রাক্ট ডিটেনশন সেন্টারে ১১ মাস আটক রাখা হয় তাকে। আর রোজিনার পায়ের গোড়ালিতে ট্র্যাকার ও নজরদারিতে রাখা হয়। কোনও রকম ব্যাখ্যা ছাড়াই ২০১১ সালের অক্টোবরে আমিনুলকে মুক্তি দেওয়া হয়। কয়েক মাস পর রোজিনার ট্র্যাকারও খুলে নেওয়া হয়।

এরপর সরকারি কর্মকর্তারা তাদের ফেরত যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকার অনুমতি দেন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত অভিবাসন কর্মকর্তাদের নিয়মিত সাক্ষাতে কখনও অনুপস্থিত হননি এই দম্পতি। প্রতি ছয় মাস অন্তর তাদের অভিবাসন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হতো। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তাদের বছরে একবার সাক্ষাৎ করার জন্য বলা হয়। কিন্তু গত বছর তাদের তিন ও ছয় মাস অন্তর সাক্ষাতের নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদেরকে দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য নতুন তারিখ  এবং কাজের অনুমতি নবায়ন করা হয়।

২০১৭ সালের নভেম্বরে অভিবাসন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত সাক্ষাতে গেলে তাদের ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এতো স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশে ফেরত যাওয়ার নির্দেশে আমিনুলের পরিবার হতভম্ব হয়ে পড়েন। ১৭ জানুয়ারি অভিবাসন কর্মকর্তারা বাসা থেকে আমিনুলকে তুলে নিয়ে যান। কয়েক ঘণ্টা পর তিনি পরিবারকে ফোনে জানান তাকে আটক করা করা হয়েছে। সোমবার তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি বাংলাদেশে পৌঁছান।

আইসিই’র এক মুখপাত্র এমিলিও ডাবুল জানান, রোজিনার বিষয়টি মামলার সুনির্দিষ্ট অবস্থার প্রেক্ষিতে পর্যালোচনা করা হবে। যেমনটা সব মামলার ক্ষেত্রে করা হয়ে থাকে।

 

398 ভিউ

Posted ১০:৪৩ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com