শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকই ভোটে নামতে পারে জামায়াত

শনিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৮
494 ভিউ
নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকই ভোটে নামতে পারে জামায়াত

কক্সবাংলা ডটকম(২৪ নভেম্বর) :: নির্বাচনের প্রতীক নিয়ে জামায়াতের আগের অবস্থান থেকে সরে আসার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। নিবন্ধন হারানো এ দলটি শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে নামতে পারে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে।

এর আগে জামায়াতে ইসলামীর সিদ্ধান্ত ছিল, স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন তাদের নেতারা। কিন্তু বিদ্যমান ‘পরিবেশ ও পরিস্থিতির’ কারণে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের চিন্তা চলছে। ২৭ নভেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন জামায়াত নেতারা।

জামায়াত বাদে ২০ দলীয় জোটের আট নিবন্ধিতসহ বাকি দলগুলো বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোটে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময়েই। বিএনপির আরেক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তিন নিবন্ধিত দল গণফোরাম, জেএসডি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থীরাও ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন। ঐক্যফ্রন্টের শরিকরা জামায়াতের সঙ্গে জোটের বিরোধী ছিল। তাই তারা বিএনপির ২০ দলে যোগ দেয়নি।

এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, জামায়াত ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করলে ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে? বিএনপি সূত্র নিশ্চিত করেছে, জামায়াত ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করলে ঐক্যফ্রন্ট শরিকরা আপত্তি করবে না। বিএনপিও চায় জামায়াত ধানের শীষ নিয়েই নির্বাচন করুক।

এটাকে বিএনপির ‘বিষয়’ হিসেবেই দেখছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী সমকালকে বলেছেন, জামায়াত ঐক্যফ্রন্ট নয়, ২০ দলের শরিক। ২০ দলের শরিকরা কে কোন প্রতীকে নির্বাচন করবে সেটা তাদের বিষয়। ঐক্যফ্রন্টের এ নিয়ে কোনো আপত্তি বা বক্তব্য নেই।

জামায়াতের প্রচার বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, জামায়াত নেতারা ৬৪টি আসনে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। স্বতন্ত্র পরিচয়ে, না বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবে; এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়ায় কেউ এখনও মনোনয়নপত্র জমা দেননি। জামায়াত

সূত্র জানিয়েছে, ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা দলীয় মনোনয়নের চিঠি সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে জামায়াতের প্রার্থীদের জন্য।

এদিকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার চিন্তা-ভাবনার কথা নিশ্চিত করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এহসানুল মাহবুব জোবায়ের। তিনি বলেছেন, স্বতন্ত্র পরিচয়ে নির্বাচন করার দলীয় সিদ্ধান্ত থাকলেও পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে তার বদল হতে পারে।

২০ দলীয় জোটের অন্য শরিকদের মতো জামায়াতও ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে পারে। এ বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা চলছে। বিএনপির সঙ্গেও আলোচনা হচ্ছে। ২৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হওয়ার আগেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত একজন নেতা জানিয়েছেন, দলীয় স্বকীয়তা রাখতে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতির কারণে ধানের শীষ প্রতীকেই ভোট করতে যাচ্ছে জামায়াত। বিএনপিও পরামর্শ দিয়েছে ধানের শীষ বেছে নিতে। জামায়াতের তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও চান ধানের শীষে নির্বাচন করতে।

জামায়াতের সিদ্ধান্ত বদলের এই চিন্তার পেছনে রাজনৈতিক পরিবেশ, কৌশল ও নানা আশঙ্কা কাজ করছে বলে জানিয়েছেন এ নেতা। সম্প্রতি বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে জামায়াত। সেখানে আলোচনায় উঠে আসে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করার নানা অসুবিধার কথা। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক সই থাকতে হয়।

তাদের ভোটার নম্বরসহ বিস্তারিত পরিচয় দিতে হয়। আসন ভেদে ভোটার সংখ্যা আড়াই থেকে পাঁচ লাখ। ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া এক জামায়াত নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটারের সমর্থনসূচক সই জোগাড় কঠিন বিষয় নয়। তাদের ভয়ের জায়গা হচ্ছে, যারা সমর্থনসূচক সই দেবেন, তাদের ওপর পুলিশ ও প্রশাসনের চাপ আসতে পারে।

সমর্থনকারীদের কাউকে চাপ দিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যদি বলানো হয়, জোর করে সই নেওয়া হয়েছে বা সই ভুয়া; তাহলে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যেতে পারে। দলীয় কর্মীদের ওপর আস্থা থাকলেও কেউ কেউ চাপের মুখে বাধ্য হয়ে এরকম যে করবেন না এমন ভরসা কোথায়?

রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেও জামায়াতকে ধানের শীষে ভোট করার সিদ্ধান্তের কথা ভাবতে হচ্ছে। ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর থেকেই ধরপাকড়ের মুখে রয়েছে তারা। যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকানোর ‘আন্দোলন’ করেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জামায়াতের হিসাবে, ওই কর্মকাণ্ডে চার শতাধিক নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। মামলার আসামি হয়েছেন সাত লাখের বেশি নেতাকর্মী। কেন্দ্রীয় থেকে তৃণমূলের নেতারা হয় জেলে, নয়তো আত্মগোপনে।

জামায়াতের একজন কর্মপরিষদ সদস্য জানান, তারা মনে করছেন ভোটের মাঠে বিএনপি প্রার্থীরা কিছুটা ছাড় পেলেও জামায়াতের কাউকে ছাড় দেবে না পুলিশ ও প্রশাসন। জামায়াতের মনোনয়নে নির্বাচনে নেমে ধরপাকড়ের শিকার হলেও দেশি-বিদেশি শক্তির সহানুভূতি পাওয়া যাবে না। যেমন পাওয়া যায়নি যুদ্ধাপরাধের বিচারবিরোধী আন্দোলনে নেতাকর্মীদের হতাহত হওয়ার ঘটনায়। তাই বিএনপির প্রতীকে নির্বাচন করলে কিছুটা হলেও ‘স্পেস’ পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন জামায়াত নেতারা।

জোটের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সংখ্যক আসন পেতেও জামায়াতকে ধানের শীষের কথা ভাবতে হচ্ছে। জামায়াতকে ২৫টির বেশি আসনে ছাড় দিতে রাজি নয় বিএনপি।

দলটির সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকে অংশ নেওয়া জামায়াতের একজন নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, তারা অন্তত ৩৫ আসন দাবি করেছেন। ২০০৮ সালে ৩৮ আসনে নির্বাচন করা জামায়াত ৩৩টিতে জোটের মনোনয়ন পেয়েছিল। এবার দুটি আসন বেশি চায়। জামায়াত ধানের শীষে নির্বাচন করলে এমপি ও ভোট বিএনপির ঘরেই যাবে। তাই বেশি সংখ্যক আসন ছাড়তে বিএনপি রাজি হবে বলে মনে করছেন জামায়াত নেতারা।

তাদের আরও একটি হিসাব হচ্ছে, জামায়াত নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে বিএনপির প্রার্থী বিদ্রোহী হিসেবে থেকে যেতে পারেন। কিন্তু জামায়াত ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করলে বিদ্রোহীরা তখন আর সুবিধা করতে পারবেন না। বিএনপি নেতাকর্মীরা ধানের শীষের পক্ষেই থাকবেন।

নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াত তাদের ৬৪ বছরের পুরনো প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ নিয়ে নির্বাচন করতে পারবে না। স্বতন্ত্র পরিচয়ে নির্বাচন করলে একেক আসনে একেক প্রতীকে ভোট করতে হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডিত হয়ে দলের ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীরা এবার ভোটে নেই। সাবেক এমপি অনেকেই প্রয়াত কিংবা বয়োবৃদ্ধ। নতুন প্রার্থীদের স্বতন্ত্র পরিচয়ে ভোটারের কাছে পরিচিত করানো কঠিন। তাই ধানের শীষে নির্বাচন করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।

২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের আপিল সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। ভোটের আগে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে জামায়াত আপিল বিভাগে আবেদন করতে পারে; এ সম্ভাবনার কথা শোনা গিয়েছিল।

জামায়াতের আইন শাখার নেতারা জানিয়েছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে এ আবেদন করা হচ্ছে না। ‘সুবিধাজনক’ সময়ে এ বিষয়ে আইনি লড়াইয়ের পক্ষে মতামত দিয়েছেন দলটির আইনজীবীরা।

494 ভিউ

Posted ৬:১৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com