কক্সবাংলা ডটকম(৬ সেপ্টেম্বর) :: টানা ১৪ কার্যদিবস বিরাহীনভাবে ছুটে চলেছে কোম্পানিটির শেয়ার। বাজারের বড় পতন হলেও শেয়ারটির গায়ে ন্যুনতম আচড়ও লাগছে না।
সোমবার শেয়ারবাজারে বড় পতন হলেও শেয়ারটি নির্বিকারভাবে ছুটেছে আকাশপানে। শেয়ারটির নাম ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড। ফার্মা খাতে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে আলোচিত কোম্পানির নাম।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ফার্মা খাতে বনেদি ও মৌলভিত্তির শেয়ার হিসাবে খ্যাত স্কয়ার ফার্মাকে অনেক আগেই ছাড়িয়ে গেছে ওরিয়ন ইনফিউশন। ৬০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দেয়া স্কয়ার ফার্মার শেয়ারদর ২১২ টাকার ঘরে। আর ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দেয়া ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারদর ছাড়িয়েছে ৩২৬ টাকা।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিটির এটি সর্বোচ্চ দর। সংবেদনশীল কোন তথ্য নেই কোম্পানিটির। তারপরও আকাশে উড়ছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিটি আকাশে উড়ছে বিনিয়োগকারীদের লাভবান করার জন্য নয়; তাদেরকে সর্বশান্ত করার জন্য। এর আগেও যেসব কোম্পানি এভাবে লাগামহীন হয়েছে, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সর্বশান্ত হয়েছে।
গত ১৪ আগস্ট অর্থাৎ ১৪ কার্যদিবস আগে কোম্পানিটি যখন উড়াল দিতে শুরু করে, তখন এর শেয়ারদর ছিল ১২৯ টাকা ১০ পয়সা। ১৪ কার্যদিবস পর আজ কোম্পানিটির শেয়ারদর হয়েছে ৩২৬ টাকা ৪০ পয়সায়। এই ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর এক দিনের জন্য পিছু হটেনি। প্রতিদিনই সামনে এগিয়েছে। এরমধ্যে একাধিক দিন বিক্রেতা সংকেটের শিরোপাও তুলে নিয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার নিয়ে একটি বড় চক্র কারসাজি করছে। কোম্পানিটির প্রায় সব শেয়ারই এখন ওই কারসাজি চক্রের দখলে। যার কারণে ইচ্ছেমতো তারা শেয়ারটির দর বাড়াচ্ছে। টানা লাগামহীন থাকায় কোম্পানিটি সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিটি হাউজেই শেয়ারটি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
কোম্পানিটির শেয়ারদর আরও অনেক দূর যাবে বলে বাজারে আওয়াজ তুলছে কারসাজি চক্র। এতে করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লোভে পড়ে শেয়ারটিতে বিনিয়োগও করছেন। আর এই সুযোগেই সেই কারসাজি চক্র নিজেদের কোডে থাকা শেয়ার ধীরে ধীরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ধরিয়ে দিতে শুরু করেছে-এমনটাই বলছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, কোম্পানিটির শেয়ারে নিঃসন্দেহে বড় কারসাজি চক্রের হাত পড়ছে। যে কারণে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারটির দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। তাঁরা বলছেন, সাম্প্রতিককালে এতো অল্প সময়ের মধ্যে কোন শেয়ারই এই রকম বাড়েনি। শেয়ারটি থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের যোজন যোজন দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
অন্যথায় লোভে সর্বস্ব হারাতে হবে বলে তাঁরা হুঁশিয়ারি করেছেন।
সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বলছেন, যখন কোন কারসাজি চক্র শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করে, তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। যখন কারসাজি চক্রটি শেয়ারটি থেকে মুনাফা তুলে নিরাপদে কেটে পড়ে, তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থার টনক নড়ে।
শুরু হয় নানা তোড়জোড়। গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। চলে লোক দেখানো তৎপরতা। তারপর নামেমাত্র দায়মুক্ত জরিমানা। এতে কারসাজি চক্র উল্লাস করলেও বলি হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা, যারা লোভে পড়ে চড়া দরে শেয়ারটি কিনেছেন।
Posted ১২:৫১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta