কক্সবাংলা ডটকম :: ইতিবাচক ধারায় থাকার পর চলতি সপ্তাহে হঠাৎ পুঁজিবাজারে বড় পতন দেখা দিয়েছে। সূচক ও লেনদেনের পাশাপাশি একযোগে হ্রাস পেতে শুরু করেছে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। এর জের ধরে হ্রাস পেতে শুরু করেছে বাজার মূলধনও।
গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসই ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পেতে দেখা গেছে সূচক, লেনদেন ও বাজার মূলধন। ফলে আবার বিনিয়োগকারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।
চলতি সপ্তাহের পুঁজিবাজার চিত্র পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, প্রথম দিন ছাড়া বাকি চার কার্যদিবস সূচকের পতন হয়েছে। পাশাপাশি কমে গেছে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। একইভাবে উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়েছে বাজার মূলধন।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের বাজার মূলধন ছিল পাঁচ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বাজার মূলধন স্থির হয়েছে পাঁচ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকায়। অর্থাৎ চার দিনে আট হাজার কোটি টাকা হ্রাস পেয়েছে বাজার মূলধন।
এদিকে টানা চার দিনের দর পতনে কিছুটা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বাজারে এ ধারা অব্যাহত থাকবে কি নাÑতা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন তারা। এদিকে বিষয়টি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
তাদের অভিমত, দীর্ঘদিন বাজার ভালো থাকার কারণে এখন মুনাফা তুলছেন বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী। এ কারণে বাজারে বিক্রয় চাপ তৈরি হয়েছে, যার জের ধরে সূচক নি¤œমুখী রয়েছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
এদিকে বৃহস্পতিবার বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আগের তিন কার্যদিবসের মতো গতকালও বাজারে শেয়ার ক্রয়ের চেয়ে বিক্রয় প্রবণতাই বেশি দেখা গেছে।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবারও অনেক কোম্পানির শেয়ার ক্রেতাশূন্য ছিল। বিক্রয় চাপ বৃদ্ধি ও ক্রেতা সংকটের ফলে সিংহভাগ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর কমে যায়। পতন হয় সব সূচকের। তবে গতকাল লেনদেন সামান্য বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে।
গতকাল দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক কমতে দেখা গেছে ২১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩১ শতাংশ। লেনদেন শেষে গতকাল সূচকের অবস্থান হয়েছে ৬ হাজার ৬৪১ পয়েন্টে। এদিকে সূচকের পাশাপাশি দর হ্রাস পেয়েছে লেনদেন হওয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে মোট ৩৮১টি কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হতে দেখা যায়। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৯৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। অন্যদিকে লেনদেন হওয়া সিংহভাগ শেয়ার ও ইউনিটদর অর্থাৎ ২৩০ কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পাওয়ার কারণে উল্লেখযোগ্যহারে কমে গেছে বাজার মূলধন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল টপটেন লুজার বা দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে ব্যাংক খাতের কোম্পানি উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড। ওইদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ বা ৪ টাকা কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ২৪ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল একই। দিনজুড়ে শেয়ারদর সর্বনি¤œ ও সর্বোচ্চ ২৪ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়। ওইদিন ৬৫ হাজার ৮০৪টি শেয়ার মোট ৭৮ বার হাতবদল হয়। যার বাজারদর ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ‘এ’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানি। অনুমোদিত মূলধন এক হাজার কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৫৬৪ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ৫৬ কোটি ৪৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৯টি শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৩০ দশমিক ৫৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ৩০ দশমিক ৬১ শতাংশ, বিদেশি শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।