নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(৩ ফেব্রুয়ারী) :: আর কয়টি মামলা দিলে ওরা ক্ষান্ত হবেন?। গ্রামবাসি বলছে মামলা নয়, যেন একজন মানুষের প্রতি নিপীড়ন। মামলার ছড়াছড়িতে নাকাল একজন উঠতি যুবক। এ পর্যন্ত ওই যুবকের বিরুদ্ধে রুজু করা হয়েছে একাধিক মামলা। বারবার জেলে যেতে হচ্ছে। কারাবরন করে বাড়িতে ফিরলে তার কপালে জুটে মামলা। মামলার গ্লানি নিয়ে লাগাম টানতে হতে হচ্ছে নিঃস্ব।
একদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা অন্যদিকে তাকে করানো হচ্ছে মানসিকভাবে দুর্বল। এখন গ্রামবাসির প্রশ্ন আর ক’টি মামলা দিলে থামবেন তারা। একটি ঘটনায় একই বাদি রুজু করেছে একাধিক মামলা। থানা ও কোর্টে রুজু করা মামলায় তাকে প্রায় সময় ছুটাছুটি করতে হচ্ছে আইনের দ্বারে। রং ছিটানো ঘটনা ও কাল্পনিক অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বাদিপক্ষ মামলা রুজু করে।
ঘটনা বর্হিভুত অনেক মামলায়ও করা হয়েছে এ যুবককে আসামি। এখন ফেরারী জীবন যাপন তার। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাইলেও আইনের কাছে ওই যুবক অপরাধী। মামলা যেহেতু আছে দোষ, গুন এসব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বাক-বিচার নয়। মামলা থাকলেই আসামি। আসামি মানে আইনের চোখে অপরাধী। অপরাধীকে তো পুলিশ পেলে ধরবে। এ ভয়ে তার স্বাভাবিক জীবন অন্তরায় হয়েছে। বাজার, ষ্টেশনে তার ঠাই মেলেনা।
অন্যসব নাগরিকের মত তার পথচলা স্বাভাবিক নয়। অস্বাভাবিক অবস্থায় তাকে দিনযাপন করতে হচ্ছে। না পরছে বাজারে আসতে, না পারছে বাড়িতে থাকতে। সবদিকে যেন অন্ধকার। আর কত মামলা দিলে একজন যুবকের পথচলা থেমে যাবে। এখন এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে মানুষের মাঝে। মামলাবাজদের খপ্পরে পরে সর্বনাশ হচ্ছে একজন উঠতি যুবকের স্বপ্ন। বিনাশ হচ্ছে তার গতি ও উন্নতি।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে আলমগীর নামক এক যুবককে ৫টি মামলায় আসামি করা হয়েছে। আলমগীর কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের পুর্ব পাহাড়িয়াখালী গ্রামের জাফর আলমের ছেলে। জাফর আলমের দু’সন্তান আছে। এর মধ্যে আলমগীর ছোট। তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম বারবাকিয়া ইউপির সদস্য। ২নং ওয়ার্ড় থেকে জনগন বিপুল ভোটে জাহাঙ্গীরকে মেম্বার নির্বাচিত করে।
স্থানীয় সুত্র জানায়, পাহাড়ি ছড়া থেকে বালি উত্তোলন নিয়ে আলমগীর ও একটি শক্তিশালী পক্ষের মধ্যে বিরোধের সুত্রপাত হয়। বালি উত্তোলন থেকে হঠাতে ওই পক্ষ তাকে মামলায় বারবার আসামি করছে। আবাদিঘোনায় ফসলি জমি নিয়ে গিয়াস উদ্দিন গং ও ধনিয়াকাটার আব্দু রহিম গংদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।
এ দু’পক্ষের মধ্যে একাধিকবার মারপিট হয়েছে। রহিমদাদ ওই ঘটনায় অন্তত ৪টি মামলা রুজু করে। এসব মামলায় আলমগীর ও তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলমকে আসামি করা হয়েছে।
গিয়াস উদ্দিন ও আলমগীর দুঃসর্ম্পকীয় আত্মীয়। মারপিটে এ দু’ভাইয়ের সরাসরি অংশ গ্রহন ও সম্পৃক্ততা না থাকলেও আসামি হতে হচ্ছে বারবার। আলমগীর জানায়, আমি ৫টি মামলার আসামি। ৪টি মামলায় জামিন আছে। আব্দু রহিম প্রকাশ রহিমদাদ প্রত্যেক মামলায় আমরা দু’ভাইকে আসামি করেছে। আমি জেলে ছিলাম।
আমার বড় ভাই জাহাঙ্গীর ওই ব্যক্তির মামলায় দু’বার জেলে গেছে। এমন কিছু মামলার আসামি হয়েছি কোথায় ঘটনা হয়েছে, কি কারনে আসামি হয়েছি আমি কিছু জানিনা। ঘটনা কাল্পনিক ও রং ছিটানো। এ সব মামলাও হয়রানিমুলক। ক্রসফায়ারে জলদস্যু নিহত হয়েছে। ওই মামলায় আমাকে করা হয়েছে আসামী। তখন আমি ছিলাম শিশু।
বন মামলা দিয়েছে আমি কিছুই জানিনা। আমরা ২ ভাই ডাকাতির বিরুদ্ধে রুখেছি। পাহাড়ে মানুষের পক্ষে প্রতিবাদ করেছি। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। মসজিদ, মক্তব দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষার প্রসার এ পাহাড়ে বেগবান করছি। ন্যায় বিচারের জন্য প্রতিবাদ করছি। এখন আমরা চোর ডাকাত বনে যাচ্ছি। কিছু মানুষ লেগে থেকেছে।
শুধু আমাদেরকে হয়রানি করতে। আমি মনে করছি এটি চুড়ান্ত ষড়যন্ত্র। রাষ্ট্রের কাছে নাগরিকের স্বাভাবিক চলাফেরা জীবন যাপনের অধিকার পেতে পারে। মানুষ হিসেবে আমারও বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার আছে। নাগরিকের ন্যায় সঙ্গত অধিকার ও আইনগত সহায়তা পেতে আমি রাষ্ট্রপক্ষ প্রশাসনযন্ত্র ও সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতা দাবী করছি। এর ন্যায় সঙ্গত সমাধান চাই। স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরার সুযোগ ও মৌলিক অধিকার চাই।
Posted ১:১২ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta