মো: ফারুক,পেকুয়া(১২ নভেম্বর) :: পেকুয়ায় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ওয়াকফ্ ষ্টেটের চাষীদের উপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৩ চাষী আহত হয়েছে। আহতরা হলেন, রাজাখালী ইউনিয়নের মৌলভী পাড়া এলাকার মোঃ আন্নর আলী (৫০), মোঃ জামাল (৩৫) ও আমান উল্লাহ(৫৫)। আহত মোঃ আন্নর আলী পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও অপর দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে রাজাখালী ইউনিয়নের এরশাদ আলী ওয়াকফ্ ষ্টেটে হামলার ঘটনাটি ঘটে। ঘটনা পরবর্তি পেকুয়া থানা পুলিশের এসআই শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আসা দূর্বৃত্তরা পালিয়ে যায় বলে নিশ্চিত করেন ওয়াকফ্ ষ্টেটের পরিচালক জালাল নামের এক ব্যক্তি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে ওয়াকফ ষ্টেটের পরিচালক মোঃ জালাল, গিয়াস উদ্দিন ও উকিল আহমদ বলেন, পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই ওয়াকফ ষ্টেটের অফিসিয়াল মোতায়াল্লী। ইজারাদার হচ্ছেন মোঃ হানিফ চৌধুরী।
হানিফ চৌধুরীর কাছ থেকে ১২৮ খানি জমি লাগিয়ত নেন জাহাঙ্গীর আলম, এম শহিদুল্লাহ ও মফিজুর রহমান। তাদের পক্ষে আমরা এরশাদ আলী ওয়াকফ্ ষ্টেটের ওই ১২৮ খানি জমির পরিচালক। ইজারাদারের পক্ষে ম্যানেজার বামুলা পাড়া এলাকার মৃত অলী উল্লাহর পুত্র গিয়াস উদ্দিন আমাদের জমিগুলো বুঝিয়ে দেয়।
সকালে এম শহিদুল্লাহ ও মফিজসহ চাষীদের নিয়ে জমি বুঝিয়ে দিতে গেলে চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুরের নেতৃত্বে বাদশা, আলম, আবুল কাশেম, আবুল বশর, বাদশা(২) ৪০/৫০ জনের একদল দূর্বৃত্ত অস্ত্র সজ্জিত হয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এসময় ৩জন চাষী আহত হয়। এমনকি চাষের জমিতে মহিলা নামিয়ে দিয়ে তান্ডব চালায় চেয়ারম্যান। ওই সময় অস্ত্র মহড়া দিয়ে প্রকাশ্যে বলেন জমিতে আবার নামলে প্রাণে হত্যা করা হবে।
ওয়াকফ্ ষ্টেটের ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিন বলেন, এরশাদ আলী ওয়াকফ্ ষ্টেটের ইজারাদার হানিফ চৌধুরী সাহেবের নিয়োগকারী ম্যানেজার আমি। জাহাঙ্গীর আলম, এম শহিদুল্লাহ ও মফিজুর রহমানকে ১২৮ খানি জমি চুক্তি মোতাবেক লাগিয়ত করি। কাচারী ঘোনা, আলিম উদ্দিন ঘোনায় ওই সমস্ত জমি তাদের আমরা বুঝিয়ে দিই। ঘটনার দিন তারা চাষাদের জমি বুঝিয়ে দিতে গেলে চেয়ারম্যান তাদেরকে বাধা প্রদান করেন। একপর্যায়ে শতাধিক মহিলা দিয়ে তান্ডব চালায় তারা।
এম শহিদুল্লাহ বলেন, বৈধ চুক্তি মোতাবেক আমরা হানিফ চৌধুরী থেকে ১২৮খানি জমি লাগিয়ত নিই। কোন কারণ ছাড়ায় চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী কায়দায় চাষীদের উপর আক্রমন করে আহত করে। তাৎক্ষনিকভাবে আমরা প্রশাসনকে এবিষয়ে অবগত করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেন ওসি জাকির হোসেন ভূইয়া। এ বিষয়ে আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুর বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে জমিগুলো আমি চাষ করছি। হঠাৎ তারা এসে জমি চাষ করার চেষ্টা করে। ওই সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। স্থানীয় মহিলারা তাদেরকে ধাওয়া দিলেও আহত হওয়ার খবর সত্য নয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পেকুয়া থানার এসআই শফিকুর ইসলাম বলেন, পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। বিরোধীয় জমি গুলো যেহেতু ওয়াক্ফ ষ্টেটের আওতাভুক্ত। তাই বিষয়টি ষ্টেটের মতোয়াল্লী ও পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহোদয় দেখবেন।
এব্যাপারে এরশাদ আলী ওয়াক্ফ ষ্টেটের মতোয়াল্লী ও পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহাবুব উল করিম বলেন, বিষয়টি সমাধান করতে খুব শীঘ্রই আমি ষ্টেটের ইজারাদার ও বর্গা চাষীদের সাথে বসবো।
Posted ১২:৩৮ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta