নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(৬ নভেম্বর) :: পেকুয়ায় গৃহবধূকে কুপিয়ে জখম করল দুবৃর্ত্তরা। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ভর্তি করে। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে ওই গৃহবধূ চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। ওই হাসপাতালের ৫ম তলায় ২৬ নং ওয়ার্ডের শয্যায় কঠিন মানবেতর দিনাতিপাত করছেন।
এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তার পায়ের গোড়ালিতে আঘাত করা হয়েছে। এতে করে ওই নারীকে চমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগে রেফার করা হয়েছে। তার অবস্থা এখনও শংকামুক্ত নয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত ৩০ অক্টোবর উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবুনিয়া সেগুনবাগিচা এলাকায় আমির হোসেন কালু ও আলী হোসেন গংদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। রিজার্ভ জায়গা নিয়ে ওই দিন সকালে আমির হোসেন কালুসহ কয়েকজন দুবৃর্ত্তরা আলী হোসেন গংদের বসতবাড়িতে হানা দেয়।
এ সময় তারা উত্তেজিত হয়ে দেশীয় অস্ত্র স্বস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে কয়েক জনকে জখম করে। এ সময় আলী হোসেন গংদের ইসমাইলের স্ত্রী সায়রা বেগম(৩৫) ও আবুল কাসেমের মেয়ে নাছিমা আক্তারকে (১৯)কে কুপিয়ে জখম করা হয়।
এ সময় ভাংচুর, লুটপাটসহ ব্যাপক তান্ডব চালানো হয়। এ দিকে ওই ঘটনার জের ধরে আলী হোসেন গংদের প্রতিপক্ষ আমির হোসেন কালু গং থানায় এজাহার দায়ের করে। জখমী হয়েছে প্রতিপক্ষ। কিন্তু হামলাকারীরা বিষয়টি গোপন রেখে থানায় এসে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এজাহার দেয়। তারা আঘাতপ্রাপ্ত কিংবা জখমী হননি। হাসপাতালে ভর্তি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকায় হাতিয়ে নেন জখমী সনদ।
গত ২ নভেম্বর পেকুয়া থানায় এজাহারটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করে। যার নং ০১/১৭ইং। মামলায় জখমী নারী সায়রা বেগমের নিকট আত্মীয়দের জড়িয়ে দেয়া হয়। অপরদিকে সায়রা বেগমকে যারা কুপিয়ে অমানবিক ও নিষ্টুরভাবে জখম করে তারা কৌশলে আইনী সহায়তা নিয়েছেন।
জখমী দুই নারীর স্বামী ও পিতা অত্যন্ত দরিদ্র। তারা অর্থের অভাবে পুলিশের কাছে গিয়ে আইনী সহায়তা নিতে সক্ষম হননি। এ সুবাধে হামলাকারীরা বিপরীত জখমীদের নিকট আত্মীয় স্বজনকে মামলা দিয়ে দেশ ছাড়া করে।
স্থানীয়রা জানায়, চমেক হাসপাতালে মেয়েটি নিদারুন কষ্ট ভোগ করছে। তার পায়ের গোড়ালীর হাড় দ্বিখন্ডিত হয়েছে। একজন নারীর প্রতি প্রভাবশালীদের নিষ্টুর নির্যাতন ও বর্বরতার এ ঘটনা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিমত প্রকাশ করেছেন। থানায় এমন মামলার ঘটনায় সাধারন মানুষ আইনী বৈষম্য নিয়েও পুলিশের বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না।
এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান জানায়, মামলা ও পরবর্তী তদন্তের বিষয়টি পুলিশ গভীরভাবে অনুসন্ধান করবে। কেউ নির্দোষ থাকলে অভিযোগপত্র গঠনের সময় অবশ্যই তাকে আইনী সহায়তা দেওয়া হবে।
Posted ১১:৩৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৬ নভেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta