নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া( ৩০ জানুয়ারী) :: পেকুয়ায় বিক্ষোভ করেছে উপকুলীয় মগনামা ইউনিয়নের লবণ চাষী। সাবমেরিন নৌঘাঁটিতে সাময়িক লবণ উৎপাদন অধিকার দাবীতে শত শত প্রান্তিক চাষী ও লবণ উৎপাদনকারী কৃষক বিক্ষোভে মিলিত হন।
৩০ জানুয়ারী মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে মগনামার লবণ চাষীরা পেকুয়ায় সদরে বিক্ষোভসহ মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করে। এ সময় তারা পেকুয়া উপজেলা প্রশাসনিক দপ্তরে যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত দাবী দাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি প্রেরন করে।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ে টনক নাড়াতে ও জেলা প্রশাসক কক্সবাজারকে দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে দরিদ্র এ সব প্রান্তিক চাষীরা উপজেলায় জড়ো হয়ে ইউএনওর কার্যালয়ে যায়।
এ সময় পেকুয়ার ইউএনও মাহাবুবউল করিম বরাবর স্মারকলিপি পৌছায়। সকালে মগনামা ইউনিয়নের পশ্চিম ও দক্ষিন অংশ থেকে প্রায় ৩শতাধিক লবণ চাষী সড়ক প্রদক্ষিন করে পেকুয়া সদরে পৌছে। ব্যানার নিয়ে তারা শান্তিপূর্ন ও অত্যন্ত বিনয়ের সাথে এ কর্মসুচীতে অংশ নেয়।
লবণ চাষীরা পেকুয়া চৌমুহনী এবিসি সড়কে কিছুক্ষন অবস্থান নেয়। তারা সারিবদ্ধ দাড়িয়ে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করে। এ সময় উপজেলার প্রশাসনিক কার্যালয়ের সামনে কিছুক্ষন অবস্থান নেয়।
লবণ চাষীরা জানায়, সাবমেরিন নৌঘাঁটিতে তারা অনুপ্রবেশ করে সেখানে লবণ উৎপাদন কার্য চলমান রাখেন। গত ২ মাস আগে তারা লবণ উৎপাদনে জমিতে নেমে যান। মাঠ প্রস্ততিসহ এ সব জমিতে লবণ উৎপাদন উপযোগী সময় হয়েছে মাত্র। শীতকালে রৌদ্রের তীব্রতা কম থাকে।
আর্দ্রতা হ্রাস থাকায় লবণ উৎপাদনের উপযোগী সময় নই। তবে আগামী ৩ মাস পর্যন্ত মৌসুম আছে। এ সময় টুকু তারা উৎপাদন সময় পেয়ে থাকলে মুখে হাসি ফুটবে। তারা জানায়, সরকার উন্নয়নের জন্য জমি অধিগ্রহন করে। আমরা উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে জমি সরকারকে দিয়ে দিয়েছি। তবে নৌবাহিনী এখনও উন্নয়ন কাজ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হননি।
বিশাল জমি পতিত রয়েছে। আমরা এসব জমিতে আবাদ উপযোগী করে লবণ উৎপাদন কাজে নেমে গিয়েছি। একদিকে দারিদ্র বিমোচন ও স্থানীয় অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব নিশ্চিত করতে আমাদের এ শ্রম। নৌঘাঁটিতে প্রায় ১ হাজার মানুষ জীবিকায় নিয়োজিত।
আমরা অত্যন্ত গরীব ও বেকার। অনন্য উপায় হয়ে জমিতে কায়িক শ্রম দিয়ে লবণ উৎপাদন কাজে জড়িয়ে গেছি। এখানে শ্রম, অর্থ, বিনিয়োগ কর্মজীবি সব কিছু জড়িত।
নৌবাহিনী বলেছেন, কয়েক দিনের মধ্যে জমি ছেড়ে দিতে। এই খবরে আমরা হতাশ হয়েছি। এ মুহুর্তে জমি থেকে বিতাড়িত হলে সর্বনাশ ডেকে আসবে আমাদের কপালে। আমরা উচ্ছেদ হলে যাব কোথায়। করব কি? খাব কি? বাপদাদার পেশা লবণ চাষ। সরকারকে আহবান করব আর জমিতে নামব না। আমরা জমি দিয়ে দিয়েছি। তবে এ মৌসুম টুকু শেষ করতে চাই। না হয় হাজার হাজার মানুষের অর্থনৈতিক দুরবস্থা সৃষ্টি হবে। অন্ধকার নেমে আসবে আমাদের কপালে।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুব উল করিম জানায়,তারা লবণ চাষ চালিয়ে যেতে ২-৩ মাস সময় চেয়ে একটি লিখিত দাবী উত্তাপন করে। আমি সেটি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের বরাবর পৌছাব। আসলে নৌবাহিনীর জমিতে কি করবে না করবে সেটি তাদেরই বিষয়।
Posted ১০:২৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta