মোঃ ফারুক,পেকুয়া(১৫ মার্চ) :: সারাদেশে বাংলাদেশ আ’লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতার বিতর্কিত কর্মকান্ডে সরকার যেমন বিব্রত তেমনি সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু আইনি প্রদক্ষেপ নিয়ে সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জন করেছেন। এরই মধ্যে বেশ কিছু নেতা সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে সুমানও অর্জন করেছেন। তেমন একজন পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আজমগীর (আজম)। তিনি পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মাতবর পাড়ার রমিজ আহমদের ছেলে।
অতিতের বেশ কিছু ভূল সিদ্ধান্তে তিনি পথভ্রষ্ট হলেও বিগত তিনবছর ধরে জড়িয়ে পড়েছেন সামাজিক কর্মকান্ডে। যেখানে অসহায় মানুষের সমস্যা সেখানে ছুটে যাচ্ছেন তিনি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েক অসহায় ও দুস্ত মানুষকে নিজ খরচে চিকিৎসা সেবা দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় নিজ ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে নেমে পড়েছেন কর্মসংস্থানে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গড়ে তুলছেন মৎস্য প্রজেক্ট ও গবাদি পশুর খামার। বিগত তিন বছর ধরে কার্যক্রম শুরু করে এখন শেষ পর্যায়ে। জমি ক্রয়, পরিচর্যা ও মাছের পোনা ছাড়তে দেড় কোটি টাকার মত খরচ করেছেন। গবাদি পশু ক্রয় ও আনুষ্টানিকভাবে লাভের মুখ দেখতে আরো ১ কোটি টাকার মত খরচ হবে। তারপরও থমকে যেতে রাজি নয় যুবলীগ নেতা মোঃ আজম। তার সৎ কর্মকান্ড এগিয়ে নিতে সংশিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আজম বলেন, আমার পুরো পরিবার বাংলাদেশ আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও সোনার বাংলা গড়ে তুলতে অংশিদার হতে চাই। যার ধারাবাহিকতায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ৪একর জমি ক্রয় করে পিতার নাম অনুসারে রমিজ আহমদ মৎস্য ও ডেইরি ফার্ম নামকরণ করে কার্যক্রম শুরু করলাম। তিন বছর ধরে ওই জমি পরিচর্যা করে ৫টি পুকুর খনন করলাম। তার পাশে একটি গরু রাখার গোয়াল ঘর একটি উন্নত জাতের ছাগলের ঘর তৈরি করলাম।
গুরু আর ছাগল ক্রয় করতে না পারলেও জমি ক্রয়, পুকুর খনন ও মাছের পোন ছাড়তে এখন পর্যন্ত দেড় কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পেকুয়া উপজেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা বেনজির আহমদ সাহেব বেশ কয়েকবার আমার মৎস্য প্রজেক্ট পরিদর্শন করে সন্তোস প্রকাশ করেছেন। সর্বশেষ তিনি পরিদর্শন করে আমার মৎস্য প্রজেক্টে প্রত্যায়ন পত্র দিয়েছে। কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য উৎসাহ প্রদান করেছেন।
এছাড়াও স্থানীয় বেশ কয়েকজন যুবক ও অসহায় মহিলার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তারা ওখান থেকে আয় করে সংসার চালাচ্ছেন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে আজ এতটুকু আসতে পেরেছি। তাদের নেতৃত্বে ওখানে হাস, মুরগী, উন্নত জাতের কবুতর পালন করা হবে। ইতোমধ্যে পুকুরের পাড়ে ফলফলাদির গাছ রোপন করা হয়েছে। ১বছর পর ওখান থেকেও আয়ের উৎস বের হবে।
তিনি আরো বলেন, আর্থিক যা সঞ্চয় ছিল তার সব ব্যয় করে ফেলেছি। বাকি কাজ করতে সহযোগিতা দরকার। আমার জানামতে সরকারের পক্ষ থেকে মৎস্য চাষি ও গবাদি পশু পালনের জন্য আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তার প্রতি অনুরোধ জানাব সফল একটি কর্মসংস্থানের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য।
সরেজমিন দেখা গেছে, পাঁচটি পুকুরের মধ্যে তিনটি পুকুরে মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে। দুইটি পুকুর পরিচর্যা অবস্থায় রয়েছে। ১৪ জন স্থানীয় লোক কাজ করছেন। পুকুর পাড়ের বেশ কয়েকটি স্থানে হরেক রকমের ফলফলাদির গাছ রোপন করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে বিশাল আকারে গবাদি পশুর জন্য গোয়াল ঘর ও ছাগল পালনের জন্য পৃথক ঘর। যেখানে অল্প কয়েকদিন পর কার্যক্রম শুরু হবে। সুন্দর ও মনোরমভাবে খামারটি তৈরি করায় এলাকাবাসীও সন্তোস প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় যুবক ইসমাঈল, জাহেদুল ইসলাম, আকাশসহ আরো বেশ কয়েকজন বলেন, তিনি আ’লীগের রাজনীতি করলেও তার উদ্দেশ্য নিজে স্বাবলম্বী হওয়া এবং এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। আমরা তার কাজ থেকে দেখে নিজেরা নিজ কর্মসংস্থান গড়ার উদ্যোগ গ্রহণ করার চেষ্টায় আছি। বেকার না থেকে অন্যান্যদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
পেকুয়া মৎস্য কর্মকর্তা বেনজির আহমদ বলেন, এলাকার যুবক আজমের নেতৃত্বে রমিজ আহমদ মৎস্য ও ডেইরি ফার্ম খুব সুন্দরভাবে গড়ে তুলা হয়েছে। আমিও বেশ কয়েকবার পরিদর্শন করে কাজের অগ্রগতি দেখেছি। আমাদের দপ্তর থেকে সাধ্যমত সহযোগিতা করা হবে।
Posted ১০:৩৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৫ মার্চ ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta