নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(১৪ জুলাই) :: পেকুয়ায় ভিডিও বার্তায় বিয়ের তথ্য ফাঁস করল সেই কলেজ ছাত্রী। অপহৃত নন প্রেমিক জুটির মধ্যে বিয়ে হয়েছে। পেকুয়ায় কলেজ ছাত্রী অপহরণ অত:পর মামলার ঘটনা স্পষ্ট হয়েছে। চলতি বছরের ১২ জুন পেকুয়ায় এক কলেজ ছাত্রী উধাও হয়েছে। সদর ইউনিয়নের মইয়াদিয়া গ্রামে প্রেমিক জুটি চম্পটের এ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। উধাও হয়ে যাওয়া মেয়েটির নাম জন্নাতুল নাঈমা মুন্নী (১৯)। মেয়েটি পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান উপকুলীয় কলেজের এইচ,এস,সি ২য় বর্ষের ছাত্রী।
সুত্র জানায়, জন্নাতুল নাঈমা মুন্নী ও কলেজের একই বর্ষের ছাত্র মইয়াদিয়া গ্রামের জহির আলমের ছেলে হুমায়ুনের মধ্যে মন দেয়া নেয়া হয়। গভীর প্রেমের সুত্রপাত হয়েছে প্রেমিক জুটির মধ্যে। চুপিসরে আড়াই বছর প্রেমের সম্পর্ককে বাস্তব রুপ দিতে প্রেমিক জুটি বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ দু’জনের সম্পর্ক ও মনের ভাবের বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে চাউর হয়। দু’জনই বিয়ের জন্য অনুপুযুক্ত হওয়ায় বিপত্তি তৈরী হয় প্রেমিক জুটি পরিবারের মধ্যে। তারা যে কোন অবস্থায় এ দুজনের মধ্যে দূরত্ব তৈরীর প্রচেষ্টা চালায়। তবে প্রবাদ আছে প্রেম জাত কুল মানেনা। মানেনা বয়স। স্বামী স্ত্রী হিসেবে বাস্তব রুপ দিতে বিয়ের মত কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেও প্রেমিক জুটি দ্বিধা করেননি।
গত ১২ জুন জিয়াউর রহমান কলেজের ছাত্রী জন্নাতুল নাঈমা মুন্নী তার হবু বর হুমায়ুনকে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয়। এ দিকে প্রেমের সম্পর্ককে মেনে নেয়নি মেয়ের পিতা একই এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তি আলী হোসেন। হুমায়ুন ও মুন্নী দু’জনই রক্তের বাঁধন। এরা আপন চাচাতো ভাই বোন। তবে ধন ও বৈভব ভিত্তির মধ্যে অনেক তফাৎ। আলী হোসেন অট্টালিকা দালানের মালিক। আর হুমায়ুনের পিতা জহির আলম একজন দরিদ্র শ্রেনীর মানুষ। আপন ভাতিজা হলেও সম্পদ ও অর্থ বিত্ত না থাকায় মেয়েকে কোন অবস্থায় শপে দিতে চাননি পিতা। এর সুত্র ধরে মুন্নীর পিতা পেকুয়া থানায় একটি মামলা রুজু করে। মামলায় মেয়ের প্রেমিক হুমায়ুনকে প্রধান আসামী ছাড়াও আরও তিনজনকে আসামী করে। দুই ও তিন নং আসামী হুমায়ুনের নিকট আত্মীয়। আলমগীর হুমায়ুনের ভগ্নিপতি। এ ছাড়া রিসাদ ও আলমগীর মামলার বাদীরও আপন ভাতিজা।
স্থানীয়রা জানান, পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে মামলার বাদী আলী হোসেন ও আলমগীর রিসাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। আপন ভাতিজা হলেও মূলত প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অপহরণ মামলায় দু’জনকে আসামী করে। গত কয়েক দিন আগে আলী হোসেন ও কয়েকজন বহিরাগত লোক নিয়ে পেকুয়া বাজার থেকে হুমায়ুনের ভগ্নিপতি আলমগীরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। টমটম নিয়ে সড়কে দেখতে পেয়ে তাকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছে। এ দিকে ভিডিও বার্তা প্রকাশ হয়েছে। প্রেরিত ভিডিও বার্তায় পেকুয়া থানায় রুজুকৃত মামলার ভিকটিম ও কলেজ ছাত্রী জন্নাতুল নাঈমা মুন্নী বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তার ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
বক্তব্যে জন্নাতুল নাঈমা মুন্নী জানান, আমাকে অপহরণ করা হয়নি। আমি স্বেচ্ছায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। হুমায়ুন ও আমার প্রেমের সম্পর্ক তিন বছর। তবে আমার পিতা এ সম্পর্ক মেনে নেননি। আমাকে একজন মাদক সেবী পাত্রের সাথে বিবাহ দিতে চাপ প্রয়োগ করছিল। আমি ওই ছেলের সাথে বিয়েতে সম্মত হয়নি। আমি আমার পছন্দের প্রেমিককে নিয়ে বিবাহ করেছি। আলমগীর ও রিসাদ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মূলত আমার পিতার সাথে ওদের জায়গা জমির বিরোধ রয়েছে। কাল হয়েছে জায়গা জমির বিরোধ। আমি একজন সাবালক নারী। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি আনুগত্য পোষন করে মুসলিম বিবাহ রীতি অনুসরণ করে হুমায়ুনকে নিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। আমাকে নিয়ে রং ছিটানোর অবকাশ আমি প্রত্যাখ্যান করছি।
Posted ৬:১৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta