মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

পেকুয়ায় হামলা ও দাঙ্গা সৃষ্টির অভিযোগে ৫১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রবিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২১
184 ভিউ
পেকুয়ায় হামলা ও দাঙ্গা সৃষ্টির অভিযোগে ৫১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মো: ফারুক,পেকুয়া :: কুমিল্লার একটি মন্দিরের দুর্গায় পবিত্র কোরআন রাখার কথিত অভিযোগ এনে তার প্রতিবাদে কক্সবাজারের পেকুয়ায় দুর্গাপূজা চলাকালীন সময়ে উৎশৃঙ্খল জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুইটি কেন্দ্রীয় মন্দিরের গেইট ভাংচুর করে পুড়িয়ে দেয়া ও অস্ত্র সজ্জিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর পরিকল্পিত হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) পেকুয়া থানার এসআই মোঃ খায়ের উদ্দিন ভুঁইয়া বাদী করে বিএনপি-জামায়াতের ১১ নেতাসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫শ জনকে বিবাদী করে মামলাটি রুজু করেন ওসি শেখ মুহাম্মদ আলী।

মামলার আসামীরা হলেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি সদর ইউপির চেয়ারম্যান এম বাহাদুর শাহ, সদর পশ্চিম জোন বিএনপির আহ্বায়ক সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এম শাহ নেওয়াজ আজাদ, বিএনপি নেতা হেনাউল ইসলাম চৌধুরী বাবুল, উপজেলা জামায়াতের শীর্ষ নেতা সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুজ্জামান মঞ্জু, জেলা শিবিরের সাবেক সভাপতি মগনামা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল মোস্তফা, বিএনপি নেতা সরওয়ার আলম, উপজেলা যুবদলের সভাপতি কামরান জাদিদ মুুকুট, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফরহাদ হোছাইন, উপজেলা যুবদলের সহসভাপতি মনির উদ্দিন শাকিল, উপজেলা যুবদলের যুগ্ন-সম্পাদক সদর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সাজ্জাদ হোসেন ও সদর পশ্চিম জোন যুবদলের সভাপতি ব্যবসায়ী আবছার উদ্দিন মানিক।

এছাড়াও পেকুয়া সদর মিয়া পাড়ার বাসিন্দা আশরাফ মিয়া, পেকুয়া বাজারের ব্যবসায়ী আবদু রহিম বাদশা, বারবাকিয়া পূর্ব জালিয়াকাটার বাসিন্দা কবির হোসেন, সবজীবন পাড়ার মোঃ আরফান, সদর শেখের কিল্লা ঘোনার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মোঃ আব্বাছ ও ভোলাইয়্যাঘোনার খলিল।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত বুধবার পেকুয়ার বিশ্বাস পাড়া ও শীল পাড়ায় দুর্গাপূজা চলাকালে সঙ্গিয় ফোর্স নিয়ে ডিউটিরত ছিলেন। এরই মাঝে কুমিল্লার একটি মন্দিরে পবিত্র কোরআন রাখার কথিত অভিযোগ এনে মিছিল শুরু করে। মামলার বিবাদীদের নিভৃত করার চেষ্টা করলেও তারা অধিক ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের উপর হামলা করে বেশ কয়েকজনকে আহত করে। এক পর্যায়ে মন্দিরের সামনে দেয়া গেইট ভাংচুর করার পর পুড়িয়ে দেয়। ওই ঘটনার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পূর্বিতা চাকমার নির্দেশে ৫০ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

জানা গেছে, ওই ঘটনা চলমান অবস্থায় ডিসি কক্সবাজার, পুলিশ সুপার, ইউএনও পেকুয়া ও সার্কেল চকরিয়া-পেকুয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। একই সময়ে বারবাকিয়া, শিলখালী ও মগনামায়ও হামলার শিকার হয় সনাতন ধর্মের লোকজন।
এক পর্যায়ে পেকুয়া থানা পুলিশ, বিজিবি আর র‍্যাবের অব্যাহত অভিযানে উৎশৃঙ্খল জনতা সরে পড়ে। শান্ত হয়ে উঠে পেকুয়ার পরিবেশ।

এছাড়াও উৎশৃঙ্খল জনতা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের বাসভবন লক্ষ্য করে হামলা ও ভাংচুর চালায়। তাৎক্ষনিকভাবে দলীয় নেতাকর্মীরা এক প্রতিবাদ সভায় এঘটনায় দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান।

হামলা ও ভাংচুরের পর তাৎক্ষনিক ফেসবুক পোষ্টে এক প্রতিক্রিয়ায় আবুল কাশেম বলেছিলেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম বাহাদুর শাহ ও যুবদলের সভাপতি কামরান জাদিদ মুকুটের নেতৃত্বে হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান।

উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের ফেসবুক পোষ্টের পরপরই অপর এক ফেসবুক পোষ্টে পেকুয়া উপজেলা যুবদলের সভাপতি কামরান জাদিদ মুকুট বলেন, পেকুয়ার সনাতন ধর্মের সকল লোকদের সাথে আমার ভাল সম্পর্ক। মন্দিরের গেইট পুড়িয়ে দেয়া ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমি যেমন ওই ঘটনায় জড়িত ছিলাম না ঠিক তেমনি আমার দলীয় কোন লোক জড়িত ছিলনা। ওই ঘটনার পর আমার পরিচালিত জেনারেল হাসপাতাল ও ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান গ্রীণবার্ড রেস্টুরেন্ট ভাংচুর করে ক্ষতি করা হয়। আসল অপরাধীদের আড়াল করতে নির্বাচনী ইস্যু নিয়ে আমাদের মামলার আসামী করা হয়েছে। আশা করি প্রশাসন সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে নির্দোষ ব্যক্তিদের মামলা থেকে অব্যাহিত দিবে।

মামলার আসামী শাহনেওয়াজ আজাদ বলেন, মিছিল হবে এমন কোন তথ্য আমার কাছে ছিলনা। যখন শুনলাম উত্তেজনা অবস্থায় মিছিল হচ্ছে তখন পেকুয়া সদর ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হিসাবে আমার দায়িত্ব ছিল উত্তেজিত লোকদের বুঝিয়ে শান্ত করা। এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখা। ওখানেই একটি পক্ষ আমার উপর হামলা চালালো। এ সময় একই ঘটনায় পুলিশের উপরও হামলা চালিয়ে আহত করে। তারপরও মামলার আসামী হলাম। আশা করি প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিবেন।

পেকুয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সদর ইউপির চেয়ারম্যান এম বাহাদুর শাহ বলেন, আমি গ্রামের একটি দোকানে বসে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলছিলাম। ওই সময় পেকুয়া থানার ওসি ও সেকেন্ড অফিসার আমাকে পৃথকভাবে ফোন দিয়ে বলে, মিছিল হচ্ছে পরিবেশ অশান্তি হতে পারে তাই আসতে হবে। আমি দ্রুত ব্রাক অফিস সংলগ্ন সড়কে চলে আসি। ওই সময় ওসিসহ একদল পুলিশ ফোর্স আমি শীল পাড়ার দুর্গাপূজার জন্য দেয়া গেইটের সামনে চলে আসি। ওই সময় উৎশৃঙ্খল উত্তেজিত গেইট ভাংচুর করলে পুলিশ ও শাহনেওয়াজ মেম্বারসহ আমি তাদেরকে বুঝিয়ে পেকুয়া বাজারস্থ ইসলামী ব্যাংকের সামনে নিয়ে আসি। ওখানেই শাহনেওয়াজ মেম্বারের উপর হামলা হয়। আহত অবস্থায় শাহনেওয়াজ মেম্বার আমাকে বলে, আপনি চলে যান না হলে একটি পক্ষ গুলি করে মেরে ফেলবে। তাৎক্ষনিকভাবে আমি ডিসি সড়ক হয়ে চলে আসি। সেখানেই আমাকে কেন মামলার আসামী করলো তা আমি জানিনা।

এবিষয়ে মামলার বাদী মোঃ খায়ের উদ্দিন ভুঁইয়া ও পুলিশ পরিদর্শক শেখ মুহাম্মদ আলীর মোঠোফোনে কল দিয়েও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

184 ভিউ

Posted ৪:২২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com