কক্সবাংলা ডটকম(২১ সেপ্টেম্বর) :: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিধন্য হোটেল সায়মন। পাকিস্তান আমলের সেই হোটেল সায়মন এখন সমুদ্রের কুল ঘেঁষে ‘সায়মন বীচ রিসোর্ট’ নামে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আস্থাশীল পর্যটন সেবী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরোনো ঐতিহ্য সমুন্নত রেখেছে। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শরণার্থী শিবির রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত আইএনজিও ও জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থার অধিকাংশ বিদেশি কর্মকর্তা সায়মনেই নিরাপদে অবস্থান করছেন।
পর্যটন সেবার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় আচার-অনুষ্ঠান ও রাজনৈতিক চেতনার প্রতিফলনও লালন করছে সায়মন কর্তৃপক্ষ। এরই অংশ হিসেবে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে হোটেলে ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’ স্থাপন করেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের শুরুতে কলাতলী বীচস্থ সায়মন বীচ রিসোর্টে কর্ণারটির অস্থায়ী প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন সায়মনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহবুবুর রহমান।
১৯৬৯ সালে হোটেল সায়মনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে আয়োজিত ক্যান্ডেল লাইট ডিনার ও তৎকালীন সময়ে সৈকত এলাকা পরির্দশনের ছবিসহ একাধিক ছবি প্রদর্শনের জন্য বঙ্গবন্ধু কর্ণারে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সায়মনের এমডি মাহবুবুর রহমান বলেন, “ষাটের দশকে কক্সবাজারে পর্যটন সেবায় পথচলা শুরু করে হোটেল সায়মন। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি যখনই কক্সবাজারে এসেছেন তখনি বাহারছড়ার ঝাউতলাস্থ হোটের সায়মনে অবস্থান করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর পর তার দুই মেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহেনাও আমাদের (সায়মনের) অতিথি হয়ে এসেছেন। তাই বঙ্গবন্ধু পরিবার হোটেল সায়মনের অবিচ্ছেদ্য অংশ”।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দীর্ঘ ৫০ বছরের পথচলায় এমপি-মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নানা পদে আদিষ্ট হয়ে দেশের সেবা করেছেন সায়মনের স্বত্বাধিকারী মোশারফ হোসেন।
“সেই ষাটের দশকের ধারাবাহিকতায় আমরা কক্সবাজারকে বিশ্ব পর্যটনের সাথে সংযুক্ত করতে সৈকতের কলাতলী পয়েন্টে অর্ধযুগ আগে পাঁচতারকা মানের সায়মন বীচ রিসোর্টের যাত্রা করি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় উন্নত পর্যটন শিল্প বিকাশে সায়মন পরিবার কাজ করে যাচ্ছে”।
বাহারছড়া ঝাউতলাস্থ পুরনো সায়মন এরিয়ায় নবনির্মিত সায়মন হেরিটেজ ভবন এলাকায় একটি স্থায়ী অত্যাধুনিক ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’ করা হচ্ছে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর সায়মনে অবস্থানকালীন সময়সহ কিছু দুর্লভ আলোকচিত্র স্থাপন করে পর্যটক ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য উন্মুক্ত করার কাজ চলছে, এমনটি জানিয়েছেন সায়মন এমডি মাহবুব।
সূত্র জানায়, ১১ তলা বিশিষ্ট সায়মন বীচ রিসোর্টে আবাসন কক্ষ রয়েছে ২৪৫টি। নানা ক্যাটাগরির অত্যাধুনিক শয়ন কক্ষ থেকে সৈকতের ঢেউ উপভোগ করা যায়। ৫ম তলায় বিশেষভাবে স্থাপন করা সুইমিং পুলে নামলে মনে হবে সমুদ্রের জলরাশির সাথে সমন্বয় করে সাঁতার কাটা হচ্ছে। পুলের পাশে রয়েছে খাবারের নানা আয়োজন। রয়েছে রাজকীয় ঢংয়ে রেস্টুরেন্ট, সুপরিসর হলরুম, অত্যাধুনিক বার, গ্রাউন্ড ফ্লোরে রয়েছে সুপরিসর নিজস্ব পার্কিং ও ইবাদত স্থান। পাশেই বসানো হয়েছে নিজস্ব বর্জ্য শোধনাগার। প্রশিক্ষিত কর্মীদের নিয়ে হোটেলে অবস্থানকারী পর্যটকদের নিশ্চিত করা হয় বিশ্বমানের পর্যটন সেবা।
উল্লেখ্য, পর্যটন সেবার পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্বও সুচারুরূপে পালন করে সায়মন পরিবার। সায়মনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীসহ জাতীয় শোক দিবস ও রাষ্ট্রীয় নানা দিবসে এতিমদের মাঝে খাদ্য বিতরণসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়।
Posted ৬:০২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta