বুধবার ২৭শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ২৭শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বরইতলী-ফাইতং ইউপি থেকে একজনের নামে দুইটি মৃত্যু সনদ, বের হলো থলের বিড়াল

মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি ২০২১
2005 ভিউ
বরইতলী-ফাইতং ইউপি থেকে একজনের নামে দুইটি মৃত্যু সনদ, বের হলো থলের বিড়াল

এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া :: চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হিন্দুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রমনী মোহন দে’র ছেলে মুক্তিযোদ্ধা বিরণ চন্দ্র দে মারা গেছেন ২০১৭ সালের ৭ জুন। পারিবারিক প্রয়োজনে তাঁর পরিবার ১৭ সালের ১৭ জুন স্থানীয় বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিরণ চন্দ্র দে’র নামে একটি মৃত্যু সনদও নিয়েছেন। সেখানে স্বাক্ষর করেছেন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার।

বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যু সনদটি নেয়ার ঠিক একমাস পর অর্থাৎ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই পরিবার সদস্যরা পাশের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একই ব্যক্তির নামে নতুন একটি মৃত্যু সনদ তুলেছেন। অবশ্য ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যু সনদে মুক্তিযোদ্ধা বিরণ চন্দ্র দে নামের পরিবর্তে লেখা হয়েছে ‘কিরণ কান্তি দে প্রকাশ বিরণ’।

সেখানে মুক্তিযোদ্ধা লেখা হয়নি। আর এই সনদপত্রে স্বাক্ষর দিয়েছেন ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন। বিরণ চন্দ্র দে’র জন্মস্থান চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হিন্দুপাড়া গ্রামে হলেও ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যু সনদে লেখা হয়েছে, তাঁর বাড়ি ফাইতংয়ের খুরপাইনঝিরি এলাকায়।

প্রয়াত বিরণ চন্দ্র দে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের হিন্দুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হলেও কেন তাকে পাশের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের বাসিন্দা দেখিয়ে মৃত্যু সনদ নেয়া হয়েছে তাঁর গোমরফাঁস করেছেন দিপুল কান্তি দে (৪৫) নামের একজন ভুক্তভোগী। দিপুলের বাড়ি ফাইতং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের খুরপাইন ঝিড়ি এলাকার মৃত ভোলা মোহন দে’র ছেলে।

ভুক্তভোগী দিপুল কান্তি দে অভিযোগ করেছেন, মুক্তিযোদ্ধা বিরণ চন্দ্র দে মারা গেলে তাঁর ছেলে ছোটন কান্তি দে, বিধান চন্দ্র দে ও মটন কান্তি দে কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তাঁদের বাবার নাম পরিবর্তন করে ফাইতং ইউনিয়নের বাসিন্দা সেজে আমি ও আমার ভাই ভগিরত কান্তি দে নামীয় ফাইতং মৌজার জি হোল্ডিং ২৩৬/১৫৪ আন্দরদাগের পাঁচ একর পাহাড়ি জায়গা দখলে মেতে উঠেছে।

জায়গার মালিক দিপুল কান্তি দে বলেন, আমাদের ভোগদলীয় উল্লেখিত পাঁচ একর জায়গা আগে আমাদের বাবা ভোলা মোহন দে’র নামীয় ছিল। তিনি মারা গেলে আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বান্দরবানের জেলা প্রশাসনের ভুমি শাখা সমান বন্টনে উল্লেখিত পাঁচ একর জায়গা আমি ও আমার বড়ভাই ভগিরত কান্তি দে’র নামে নামজারী করে দেন। সেই থেকে উল্লেখিত জমিতে আমরা দীর্ঘ ৫০বছর ধরে শান্তিপুর্ণভাবে ভোগদখলে আছি।

ভুক্তভোগী দিপুল কান্তি দে অভিযোগ তুলেছেন, আমাদের জায়গার পাশে কিরণ কান্তি দে নামের একব্যক্তির বেশকিছু জায়গা ছিল। মুলত ওই ব্যক্তির জায়গাসমুহ দখলের উদ্দেশ্যে বিরণ কান্তি দে’র ছেলে ছোটন ও বিধান কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তাদের বাবার নাম পরিবর্তন করে বিরণ কান্তি দে’র স্থলে কিরণ কান্তি দে প্রকাশ বিরণ নামে ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মৃত্যু সনদ নিয়ে ভুয়া কাগজপত্র সৃজনের মাধ্যমে কিরণ চন্দ্রের পাশাপাশি আমাদের জায়গাও দখলের অপচেষ্ঠা চালাচ্ছে।

এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর বান্দরবানের জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আমাদের উল্লেখিত জায়গার বিপরীতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি অপর মামলা (নং ১৩৬/১৯) দায়ের করি। সেখানে বিরণ চন্দ্রের ছেলে ছোটন কান্তি দে, বিধান চন্দ্র দে, মটন কান্তি দে এবং তাদের সহযোগি প্রদীপ কান্তি দে ও বিভিষণ কান্তি দেকে আসামি করা হয়। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারধীন।

ভুক্তভোগী দিপুল কান্তি দে বলেন, জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দায়েরকৃত মামলাটি বিচারধীন থাকলেও বিবাদি ছোটন কান্তি দে এবং তাঁর সহযোগিরা পেশিশক্তিতে বলিয়ান হয়ে আমাদের উল্লেখিত জায়গা দখলে হামলার প্রস্তুতি নেন। এতে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সর্বশেষ গত ডিসেম্বর মাসে লামা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারার আবেদন জানিয়ে একটি ননজিআর মামলা (৭০/২০) দায়ের করি। এরই আলোকে গত ৯ ডিসেম্বর শুনানী শেষে আদালতের বিচারক মামলার শুনানী শেষে উল্লেখিত জায়গায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় লামা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

জায়গার মালিক দিপুল কান্তি দে অভিযোগ করেছেন, সর্বশেষ আদালতের নির্দেশনার আলোকে আমাদের উল্লেখিত জায়গা নজরদারি করতে লামা থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়ায় অভিযুক্তরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। এরই জেরে অভিযুক্তরা বর্তমানে জায়গা দখলে হামলার হুমকির পাশাপাশি আমাকে এবং আমার পরিবার সদস্যদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রাণি করার অপচেষ্ঠা চালাচ্ছে। এ অবস্থায় দখলবাজ চক্রের কবল থেকে আমাদের বৈধ জায়গা রক্ষা এবং অযথা হয়রাণি থেকে রেখাই পেতে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

একজন ব্যক্তির নামে দুইটি ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যু সনদ নেয়ার ঘটনায় প্রশ্ন তুলেছেন বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন মহল। তাদের দাবি, প্রয়াত বিরণ চন্দ্র দে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর পরিবার সরকারি সবধরণের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। সেখানে কেন আসল পরিচয় গোপন করে তাকে সাধারণ পরিচয় দিয়ে ছেলেরা অন্য ইউনিয়নের বাসিন্দা দেখিয়ে ভিন্ন নামে মৃত্যু সনদ নিয়েছেন তা বোধগম্য হচ্ছেনা। নিশ্চয় এখানে তাঁর পরিবার সদস্যদের কুমতলব আছে।

 

 

2005 ভিউ

Posted ১২:৩৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com