কক্সবাংলা সম্পাদকীয়(২৬ জুলাই) :: শুভ উদ্যোগ। যুগান্তকারীও বলা যায়। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে পরনির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজস্ব যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফেসবুকের বিকল্প নিজস্ব সামাজিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাঙালী কায়দায় এর নামও দেয়া হয়েছে ‘যোগাযোগ’। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো শুরু করেছে অনেক আগে থেকেই। বাংলাদেশও শরিক হচ্ছে এই কাতারে। এই উদ্যোগে আবারও প্রমাণিত হচ্ছে, স্বপ্নবাজ বাঙালী শুধু স্বপ্ন দেখেই শেষ করে না, স্বপ্ন পূরণের দিকেও এগিয়ে যায় দৃঢ়চিত্তে।
ক্ষমতা গ্রহণের আগে বিরোধী দলের রাজনীতি করার সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এর কোন বিকল্প নেই। ক্ষমতার বাইরে থাকার সময়ই তিনি প্রণয়ন করেছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা। নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিল তার অঙ্গীকারের কথা। সে সময় অনেকেই এই চিন্তাকে বাঁকা চোখে দেখেছিলেন। সভা-সমাবেশে হাসি-ঠাট্টাও করতে দেখা গেছে। ’৯৬ সালে ক্ষমতায় গিয়ে শেখ হাসিনা শুরু করেছিলেন তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ।
প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন খুব সহজ ছিল না। ‘তথ্য পাচার হয়ে যাবে’ এই অজুহাতে আমরা সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হতে পারিনি। এই মানসিকতার নীতি নির্ধারকের দেশে ডিজিটাল কর্মসূচী বাস্তবায়ন কতটা কঠিন, তা সহজেই অনুমেয়। এসব প্রতিক‚লতা কাটিয়ে শেখ হাসিনা তার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়েছেন। অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে তিনি আজ সফল। সত্যিকার অর্থে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল এখন মানুষ ভোগ করছে। প্রধানমন্ত্রীর এই বন্ধুর পথের সহযাত্রী ছিলেন তার সুযোগ্য পুত্র কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয়। আজ আমরা ‘লালফিতার দৌরাত্ম্য’ কাটিয়ে ‘অনলাইন দফতর’ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। ঘরে ঘরে জনপ্রিয় করতে পেরেছি ই-কমার্স।
উন্নত বিশ্বের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে এখন আমরা নিজস্ব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি গোটা বিশ্বের সঙ্গে। অনেক এ্যাপসে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দিতে পেরেছি সামাজিক সেবা। শেখ হাসিনা সরকারের সর্বশেষ উদ্যোগ সামাজিক প্ল্যাটফর্ম ‘যোগাযোগ’। এর মাধ্যমে দেশের উদ্যোক্তারা তথ্য, উপাত্ত ও যোগাযোগের জন্য নিজেদের মধ্যে একটি নিজস্ব অনলাইন মার্কেট প্লেস ও গ্রæপ তৈরি করতে পারবে। বিদেশ নির্ভর হতে হবে না উদ্যোক্তাদের।
ইতোমধ্যে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে জুম এর বিকল্প ‘বৈঠক’ প্ল্যাটফর্ম এবং করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’ এ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। নিজস্ব যোগাযোগের জন্য হোয়াটস এ্যাপের বিকল্প হিসেবে আলাপন নামেরও একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে। তার দেয়া তথ্যমতে ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি সেক্টরে ২০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছে সরকার। এর মধ্যে সফলতার সঙ্গে ১৫ লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হয়েছে।
তথ্য প্রযুক্তি রফতানি করে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয় করা সম্ভব হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারের এসব কর্মযজ্ঞের হাত ধরে আজ বাঙালী ২০৪১ সালের আগেই একটি উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।
Posted ২:৩৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta