শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বাংলাদেশের রাজনীতি পরিস্থিতি হঠাৎ উত্তপ্ত হওয়ার নেপথ্যে

রবিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২০
303 ভিউ
বাংলাদেশের রাজনীতি পরিস্থিতি হঠাৎ উত্তপ্ত হওয়ার নেপথ্যে

কক্সবাংলা ডটকম(১৫ নভেম্বর) :: বাংলাদেশের রাজনীতির মূল কেন্দ্র এখন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে ঘিরেই এখন আবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশের গোটা রাজনীতি। বিরোধী দলগুলো যেমন চায় শেখ হাসিনাকে সরাতে। শুধুমাত্র শেখ হাসিনা সরে গেলেই তাদের জন্য যেন পথের কাটা অপসারিত হয়। আর অন্যদিকে আওয়ামী লীগ এবং সরকার পুরোপুরিভাবে শেখ হাসিনা কেন্দ্রিক। দলের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য নেতা কর্মীরা যেমন শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে থাকেন, তেমনি সরকারের সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই।

আর এই বিবেচনা থেকেই সাম্প্রতিক রাজনিতিক পরিস্থিতে এখন প্রধান বিষয় হিসেবে শেখ হাসিনা কি করবেন । হঠাৎ করেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। মাঠের রাজনীতি যত না বড় হয়েছে তার চেয়ে বেশি উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে স্যোশাল মিডিয়াতে। বিশেষ করে বিএনপি-জামাত পন্থী কিছু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইউটিউবে বিদেশে বসে এক ধরণের অপপ্রচার করছে। সে অপপ্রচারগুলো এখন লাগামহীন এবং মাত্রাহীন ছাড়া হয়ে গেছে। আর এটির পাশাপাশি রাজপথে নতুন করে আন্দোলনের জন্য হুমকি দিচ্ছে বিএনপি। বিএনপি শুধু হুমকি দেয়নি, গত বৃহস্পতিবার পুলিশের নাকের ডগায় ৬ টি স্থানে ১১টি বাসে আগুল লাগিয়ে তারা জানান দিয়েছে যে তারা আসছে।

এ সময় প্রশাসনের সঙ্গে পেশাজীবীদের নতুন করে বিরোধ তৈরি হয়েছে এবং প্রকৌশলী, চিকিৎসক ও কৃষিবিদরা আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার হুমকি দিচ্ছে। প্রশাসনের মধ্যে অস্থিরতা এবং একধরণের অস্বস্তি কাজ করছে। প্রশাসনের দলীয় করন এবং যোগ্যতার নিরিখে পদোন্নতি হচ্ছে না বলে কেউ কেউ অভিযোগ করছেন। এমন অনেককে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। যারা মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা ধারণ করেন না। যোগ্যতার মাপকাঠিতেও তারা পদোন্নতি যোগ্যোতা সম্পন্ন নন। কিন্তু তার পরেও প্রশাসনে তাদের পদন্নতি হচ্ছে। একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশাসনে পদোন্নতি ও ভাল পোস্টিং হচ্ছে এরকম অভিযোগ উঠেছে।

যারা যখন ক্ষমতায় থাকছেন তারা তাদের নিজেদের পছন্দের লোকজনকে গুরুত্বপূর্ণ যায়গাগুলোতে বসাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এস আই আকবরের ঘটনা, ওসি প্রদীপের ঘটনার প্রেক্ষাপটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে এক ধরণের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে, এক ধরণের হতাশা তৈরি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে এক ধরণের গা ছাড়া ভাব লক্ষ্যকরা যাচ্ছে। যেটি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য উদ্বেগজনক বলে কেউ কেউ মনে করছেন। সামাজিক অসন্তোষ বেড়ে গেছে। মানুষের মধ্যে অভাব অনটন দানা বেধে উঠছে। অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দ্রব্যমুল্যের উর্ধগতির এরকম পরিস্থিতে অনেকে চাকরি হারিয়ে গ্রামে যাচ্ছেন, সেখানেও তারা ভাল নেই।

অভিবাসন সঙ্কট নতুন রুপ ধারণ করেছে। এই অভিবাসন সঙ্কটের ফলে যারা দীর্ঘদিন বিদেশে কাজ করে এখন চাকরীচ্যুত হয়ে দেশে অবস্থান করছেন তাদেরকে পুনর্বাসন কিভাবে করা হবে? এবং তাদের জীবন কিভাবে যাপন করবেন? সেটি এক বড় সমস্যার হিসেবে আমাদের সামনে এসে উপস্থিত হয়েছে। আর এসব কিছুর মধ্যে একটি যোগসূত্র খোঁজা হচ্ছে, সরকার টানা ১২ বছর দেশ পরিচালনা করার পর কি চাপের মুখে পড়লো? সরকারের কি জনপ্রিয়তা কমছে? সরকারের বিরুদ্ধে কি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে? পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ ঘটনাগুলো ঘটছে? এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নেই । তবে সব প্রশ্নের উত্তরের জন্যই সকলে তাকিয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি করবেন? তিনি এই সঙ্কটের কি সমাধান করবেন? সেটি হলো এখন দেখার বিষয়।

কি হচ্ছে ডিসেম্বরে?

সরকার এবং বিরোধী দল উভয়েই বলছে ডিসেম্বর মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । এই ডিসেম্বরে মাসকে সতর্ক থাকতে হবে, আওয়ামী লীগ বলছে শুধু ডিসেম্বর নয় মার্চ মাস পর্যন্ত নানারকম ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে সরকারকে। আর বিএনপির পক্ষ থেকে একাধিক নেতা বলছেন যে, সরকার নাজুক অবস্থায় চলে গেছে। এ অবস্থায় ডিসেম্বরে কিছু একটা গঠবে। কি গঠবে? সে সম্পর্কে বিএনপির নেতারা কোন কিছু বলেনি। ডিসেম্বর মাসকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানারকম জল্পনা-কল্পনা চলছে। জনগনের মধ্যেও এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে।

আর এর সবকিছুই সূত্রপাত হয়েছে গত ১২ নভেম্বর থেকে। ওই দিন, দিনে দুপুরে রাজধানীর ৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১১ টি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। বাসে আগুন দেয়ার পরপরই সরকার তৎপর হয়েছে। একাধিক মামলায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা সকলেই বিএনপি বিভিন্ন স্তরের নেতা, আরো কয়েকজন গ্রেপ্তারের অপেক্ষায় রয়েছেন বলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সূত্রে জানা গেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সুস্পষ্ট ভাবে এ ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছেন। তারা যে সন্ত্রাসের রাজনীতি পথে আবার হাটছে সেটি আবার উল্লেখ করেছেন। এই সমস্ত উত্তাপ-উত্তেজনা এবং টানাপড়েনের মধ্যে আলোচনায় আসছে ডিসেম্বর মাস। ডিসেম্বর মাসে কি ঘটতে পারে তা নিয়ে নানারকম জল্পনা-কল্পনা চলছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডিসেম্বর মাসে অনেকগুলো ঘটনাই ঘটতে পারে। এটি শুধু রাজনৈতিক নয়, আমাদের স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানা রকম পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হতে পারে সরকারকে। ডিসেম্বর মাসে যে ঘটনাগুলো ঘটতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অনুমান করছেন তার মধ্যে রয়েছে:-

১। সন্ত্রাস-সহিংসতা:

১২ নভেম্বর বাসে আগুনের ঘটনাটি ছিল একটি টেস্ট কেস, একটি ছোট্ট ঘটনা। ডিসেম্বর মাসে বড় ধরনের সন্ত্রাস এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারও এই আশংকা উড়িয়ে দিচ্ছে না। তারা মনে করছে যে, সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এবং বিব্রতকর পরিস্থিতি দেখার জন্য এরকম একটি চক্রান্ত চলছে। এই চক্রান্তের মূল লক্ষ্য হলো সারা দেশে একটি বড় ধরনের অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করা।

২। গুম-খুন এবং বড় ধরনের নাশকতা:

যেহেতু সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আবার সংগঠিত হচ্ছে। সেহেতু আবার নতুন করে দেশে গুম খুন এবং বড় ধরনের নাশকতা, বড় ধরনের স্থাপনায় আক্রমণ ইত্যাদির ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেটার জন্য টার্গেট করা হয়েছে ডিসেম্বর মাস। জামাত শিবিরের কাছে ডিসেম্বর মাসটা অত্যন্ত বেদনাবহ মাস। কারণ এ মাসে তারা পরাজিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কাছে, মুক্তিযুদ্ধের কাছে। বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করেছিল । আর তাই ডিসেম্বর মাস এলেই বিএনপি-জামাত জোট নানা ষড়যন্ত্র করে এবং প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য সচেষ্ট হয়। এই কারনেই এবার ডিসেম্বরও ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

৩। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারঃ

নভেম্বর মাস জুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপিপন্থী কিছু অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা কুৎসা এবং মিথ্যাচার করছে, নানা রকম অপপ্রচার করছে। এ ধরনের অপপ্রচার গুলো ডিসেম্বর মাসে আরো বাড়তে পারে। সেনাবাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নানারকম বিষদগার করে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার চেষ্টা করা হতে পারে। এখন যেটি শুরু হয়েছে সেটি ডিসেম্বর মাসে আরো ব্যাপক বিস্তৃত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

৪। করোনা পরিস্থিতি:

ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশে জাকিয়ে শীত বসলেই করোনা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই আশঙ্কা থেকেই সরকার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ডিসেম্বর মাস অনেকেই মনে করছে যে, বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার দুটোই বেড়ে যেতে পারে। আর এটি যদি বেড়ে যায় তাহলে সরকারকে এদিকেই নজর দিতে হবে।

৫। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি:

করোনা সংক্রমণ বাড়ুলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নেতিবাচক হয়ে উঠতে পারে। একদিকে বিদেশে রপ্তানি কমে যেতে পারে। অন্যদিকে বাংলাদেশের যে অভ্যন্তরীণ বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির দাম আরো বাড়তে পারে। সবকিছু মিলে একটা অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হতে পারে । আর এই সব কিছুকেই একত্রিত করে একটি মহল সরকার পতনের জন্য অন্য পথ বেছে নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছে যে, এ ধরনের ষড়যন্ত্র আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সবসময় হয়েছে। আর এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগকে এগিয়ে যেতে হবে।

303 ভিউ

Posted ২:৫৮ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২০

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com