কক্সবাংলা ডটকম(৩ সেপ্টেম্বর) :: বিএনপি আন্দোলনের জন্য আবার প্রস্তুত হচ্ছে। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার এক সভায় বলেছেন নেতাকর্মীদের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপির নেতারাও এখন রাজপথে নামতে চায়, আন্দোলন করতে চায়।
কিন্তু বিএনপি`র একাধিক নেতাকর্মী বিশেষ করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, তারা মনে করছেন আন্দোলনের পথে প্রধান বাধা হলো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কার লোক এটি তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না।
বিএনপির শীর্ষ নেতা বলেছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে যেভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিয়ে গিয়েছিল তাতে স্পষ্ট হয়েছে যে সরকারের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের সম্পর্ক রয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিভিন্ন সময় সরকারকে সমালোচনা করে কথা বলেন বটে কিন্তু সরকারের সঙ্গে তার গোপন সম্পর্কের কথা কারোই অজানা নয়।
বিভিন্ন সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সরকারের কথাবার্তাও হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছোট ভাই স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি। তার সঙ্গে সরকারের অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তাছাড়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে একাধিক মন্ত্রী বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়।
বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মন্ত্রীর কাছে তদবির করেন বলেও জানা গেছে। একদিকে সরকারের পতন ঘটানোর কথা বলছেন, অন্যদিকে তিনি সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলছেন। এই দ্বৈত অবস্থান নিয়ে আন্দোলন হবে না এমনটি মনে করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য। তিনি বলেছেন যে, দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে সমস্ত কর্মকাণ্ড করেছেন তার সবকিছুই আওয়ামী লীগের পক্ষে গেছে।
তিনি আন্দোলনের কথা বলে আন্দোলন করেননি। তার চিকিৎসার টাকা দিয়েছে সরকার। তিনি বিভিন্ন সময়ে যখন নেতাকর্মীরা রাজপথে জোরালো আন্দোলনের কথা বলা বলেছেন, তিনি তাদেরকে থামিয়ে দিয়েছেন। তিনি একাধিক মামলার আসামি হলেও তার মামলাগুলো সচল থাকে না। সেই মামলাগুলো সবসময় নিশ্চল হয়ে পড়ে। তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর নাটকীয় ভাবে মুক্তি পান। এসব কিছুই প্রমাণ করে যে, সরকারের সাথে তার ভাল সম্পর্ক আছে।
তার কারণেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ছাড়াই বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনে গেছে এবং ওই নির্বাচনে ভরাডুবির পর যখন বিএনপি নেতাকর্মীরা মুখিয়ে ছিল যে একটি বড় আন্দোলনের জন্য তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কোন আন্দোলন করেননি। তিনি তারেক জিয়ার সাথে গোপন আঁতাত করে যে ৫জন নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপি তাদেরকে সংসদে পাঠিয়েছেন। অথচ তিনি নিজে সংসদে যাননি।
বিএনপির অনেক নেতাই বলেন, বিএনপি যদি সংসদে যাবে তাহলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরেরও সংসদে যাওয়া উচিত ছিল এবং সেখানে গিয়ে কথা বলা উচিত ছিল। দলের মহাসচিব যদি সংসদে না দেন তাহলে সেই সংসদে অন্য নেতাদের যেয়ে লাভ কি, তারা সংসদে কোনো ভূমিকাই পালন করতে পারছেন না। ফলে বিএনপি`র ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেফতার এবং খালেদা জিয়ার বিশেষ বিবেচনায় মুক্তির বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাত আছে বলে বিএনপির অনেক নেতা মনে করছেন।
আর সে কারণেই বিএনপি নেতারা মনে করেন যে, বিএনপিকে যদি একটি বড় ধরনের সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে হয় তাহলে ঘরে আগে ঠিক করতে হবে এবং ঘরের ভিতর যারা সরকারের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে তাদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ ঘর না ঠিক করে আন্দোলনে গেলে সেই আন্দোলনে কোনো লাভ হবে না।
কারণ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অতটুকুই আন্দোলন করবেন বলে বিএনপি নেতারা মনে করেন যতটুকু করলে সরকারের লাভ হবে এবং এরকম একটি আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি সরকারের ঘরে আর কি তুলে দিতে চান সেটি নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। তাই মুখে যতই বিএনপি আন্দোলনের কথা বলুক না কেন মির্জা ফখরুলকে অবিশ্বাসের কারণে শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের কোন আন্দোলনে হয়তো যেতে রাজি নয় বিএনপি এখনই।
Posted ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta