কক্সবাংলা ডটকম(২৬ নভেম্বর) :: দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির বর্তমান কার্মকাণ্ড নিয়ে খুশি হতে পারছেন না লন্ডনে থাকা তারেক জিয়া। এতে তিনি বিএনপির একটি অংশের নেতাদের দায়ী করছেন।
বিশেষ করে উপ-নির্বাচনগুলোতে বিএনপির প্রার্থীদের ভরাডুবির বিষয়ে তারেক রহমানের প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি দায়িত্বশীল নেতারা। এই অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে দলীয় ফোরামে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বিএনটির কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, এমনিতেই আমাদের দল অনেকদিন ক্ষমতার বাইরে অন্যদিকে সাংগঠনিক দুর্বলাতা এবং দলীয় কোন্দালের কারণে কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় লন্ডনে অবস্থানরত তারেক জিয়া দুর থেকে যে নির্দেশনা দিচ্ছেন সেটা বাস্তবায়ন করাটা অনেক কঠিন হয়ে পড়ছে।
এই অবস্থায় দলের একটি অংশ রাজনৈতিক চাপ এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের সাথে সমঝোতা করছে। ফলে যেসব নেতারা দলের জন্য সক্রিয় কাজ করছেন তাদের একটি অংশের পক্ষে বড় ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করাটা দুরূহ বহয়ে পড়েছে।
বিএনপির বর্তমান অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি সাথে জামায়াতের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কারণে বহির্বিশ্বের সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে না।
এই অবস্থায় দলের একটি অংশ জামায়াতের সাথে রাজনৈতি সম্পর্ক ছিন্ন করার পক্ষে থাকলেও একটি অংশ জামায়াতের সঙ্গে চলো নীতিতে আগাচ্ছে। এতে করে জামায়াতের কালিমা বিএনপির কাঁধে ভর করার কারণে সরকার বিরোধী আন্দোলনের ডাক দিলেও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করছে না।
অন্যদিকে জামায়াতের সম্পৃক্ততার অযুহাতে জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের তকমা দিয়ে বিএনপিকে কঠোর হস্তে দমন করছে সরকার। ফলে দলটি এখন কোন দিকে, কোন নীতি নিয়ে আগাবে সেই বিষয়টা নিয়েও ধোয়াশা রয়েছে বলে জানান বিশ্লেষকরা।
নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা বলে আসছে সরকারের নানামুখি চাপের কারণে তারা মাঠে দাঁড়াতে পারছে না। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন অতীতের কোনো সরকাই বিরোধী দলকে মাঠে দাঁড়ানোর সুযোগ দেয়নি, সুযোগ বিরোধী দলকেই করে নিতে হয়। আর এজন্য সময়োপযোগী এবং জনসম্পৃক্ত ইস্যু নিয়ে মাঠে নামতে হয়।
কিন্তু বিএনপি গতদিনে এমন কোনো ইস্যু নিয়ে মাঠে নামতে পারেনি যে ইস্যুতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ এবং সম্মতি ছিলো। বিএনপি মাঠে নেমেছিলো তাদের দলীয় ইস্যু নিয়ে, ফলে জনগণ তাদের সঙ্গ দেয়নি। ফলে রাস্তায় গাড়ি পুড়িয়ে জ্বালাও পোড়াও করে আন্দলনে খ্যান্ত দিয়েছে দলটি। এরপর দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠ ছিলো নিরুত্তাপ।
বিএনপি ভেতরে ভেতরে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েও কোনো সফলতা পায়নি। অন্যদিকে একের পর এক উপ-নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে বিএনপির প্রার্থীর ভরাডুবি হচ্ছে। এতে করে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। এক্ষেত্রে নেতাদের সমন্বহীনতাকেই দায়ি করছেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীরা। অন্যদিকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সিনিয়র নেতাদের কার্যক্রমে অসন্তোষ্ট হয়ে দিন দিন হতাশ হয়ে পড়ছে। আর এই বিষয়টি দৃশ্যমান হয়েছে ঢাকা-১৮ এবং সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপ-নির্বাচনে।
ঢাকা-১৮ আসনের স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ দলের পক্ষে সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা তাদের কোনো নির্দেশনা দেয়নি এমনকি নির্বাচনের দিন কোন কেন্দ্রে কে দায়িত্ব পালন করবে সেই বিষয়েও কোনো নির্দেশনা ছিলো না।
অন্যদিকে মনোয়নয় এবং কমিটির বাণিজ্যের অভিযোগতো আছেই। এছাড়া বিভিন্ন জেলার সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্তরা কোনো ধরনের কার্যক্রম না করেই সামাজিক মাধ্যমে ছবি পোষ্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও সেই বিষয়ে তদারকির কেউ নেই। ফলে বিএনপি দলীয় কার্যক্রমে এখন এক ধরনের সমন্বহীনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এই অবস্থায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া লন্ডনে থেকে কিছু নেতাদের নির্দেশনা দিলেও দলের একটা অংশ বাদ পড়ছে সেই নির্দেশনায় থেকে। এই অবস্থায় বিএনপির মধ্যে চরম সমন্বহীনতা চলছে বলে জানিয়েছে রাজনৈতিক বিএনপি সংশ্লিষ্টরা।
এই অবস্থায় বিএনপি নেতাদের একটি অংশ এখন ক্ষমাতসীনদের সঙ্গে সমঝোতা করে ব্যবসায়ী হয়ে বিএনপি বড় কোনো কর্মসূচিতে জনসমাগম করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এতে করে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক জিয়া এসব নেতাদের উপরে ক্ষিপ্ত বলে বলে জানা গেছে।
Posted ১২:১৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta