কক্সবাংলা সম্পাদকীয়(৩ নভেম্বর) :: সড়কে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি, নৈরাজ্য, হয়রানিসহ নানান অব্যবস্থাপনা দেখছি প্রতিনিয়ত। সড়কে অব্যবস্থাপনার করুণ পরিণতির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। জননিরাপত্তার স্বার্থে এই নৈরাজ্য চলতে দেয়া যায় না।
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করায় সড়ক-মহাসড়ক এমনকি রাজধানীজুড়ে বিশৃঙ্খলা বেড়েছে।
বিদ্যুৎচালিত তিন চাকার যানগুলো অটো, ইজিবাইকসহ নানা নামে পরিচিত। শারীরিক পরিশ্রম না হওয়ায় দেশে প্যাডেল রিকশার বিকল্প হিসেবে চালকদের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা।
কিন্তু প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনায় পড়ছে কম গতির এসব হালকা যান। এ অবস্থায় বিভিন্ন প্রধান সড়কে এসব যান চলাচল বন্ধের দাবি উঠেছে বারবার।
অটোরিকশা বা ব্যাটারিচালিত রিকশা রাস্তায় চলবে কি চলবে না এ নিয়ে নানা আলোচনা মূলধারার মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং জনপরিসরে বেশ আলোচিত হয়েছে।
এর পক্ষে এবং বিপক্ষে বেশ বিতর্ক হয়েছে, তবে আপাতদৃষ্টিতে এসব অটোরিকশা বন্ধের কোনো পদক্ষেপ দেখি না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে সড়কে শৃঙ্খলা ছিল না।
ওই সময় সংশ্লিষ্ট সব সরকারি প্রতিষ্ঠান সক্রিয় না থাকার কারণে ফিটনেসবিহীন, নিবন্ধনের মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন দাপিয়ে বেড়িয়েছে। এখনো কিন্তু কম নয়। নিষিদ্ধ হলেও মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ভটভটি, অটোরিকশা, ব্যাটারি রিকশা যেমন ইচ্ছা চলছে।
মহাসড়কে যাতে তিন চাকার যানবাহন না চলে সে বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সে নির্দেশনা কখনোই অনুসরণ করা হয় না।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় এসব নিষিদ্ধ যানবাহন মহাসড়কে চলাচল করে। আর তিন চাকার যান মহাসড়কে চলাচলের সুযোগ দেয়ার বিনিময়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা ঘুষ গ্রহণ করে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এর বাইরে বিভিন্ন এলাকার স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীও মহাসড়কে এসব যান চলাচলের সুযোগ দেয়ার জন্য প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে থাকে। এভাবে নানা চক্রের স্বার্থের বলি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
কম দূরত্বে চলাচলের জন্য মহাসড়কে পৃথক লেন না থাকা ও উপযুক্ত যানবাহন না থাকার কারণে সাধারণ যাত্রীরাও ঝুঁকি নিয়ে এসব যানবাহনে চড়তে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতিনিয়ত সড়কে দুর্ঘটনার খবর আমরা পাচ্ছি।
বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু একটি জাতীয় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানের জন্য সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানো এবং দুর্ঘটনাকেন্দ্রিক অপরাধের বিচার ও শাস্তি প্রদানের জন্য একটি কার্যকর ও ফলপ্রসূ আইনের প্রত্যাশা অনেক পুরনো।
কিন্তু কোনো সরকার এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়েছে বলে মনে হয় না। সড়ক দুর্ঘটনা কেন ঘটে? কী কী কারণে এত বেশি দুর্ঘটনা, কী কী পদক্ষেপ নিলে দুর্ঘটনার হার কমানো সম্ভব- এর সবই বহু আলোচিত।
আমরা মনে করি, নতুন আইন বাস্তবায়ন করতে হলে মূলে হাত দিতে হবে। বিআরটিএ স্বচ্ছ হলে সড়ক-মহাসড়কে নৈরাজ্য প্রায় কমে আসবে।
Posted ২:২৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta