শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ভারতীয় নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে Project 15B

মঙ্গলবার, ০৯ নভেম্বর ২০২১
277 ভিউ
ভারতীয় নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে Project 15B

কক্সবাংলা ডটকম(৮ নভেম্বর) :: প্রজেক্ট ১৫বি-র (Project 15B) অধীনে প্রথম স্টেলথ গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ারের (Stealth Guided Missile Destroyers) ডেলিভারি পেয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী (Indian Navy)।

‘আইএনএস বিশাখাপত্তনম’ (INS Visakhapatnam) নামে ওয়াই- ১২৭০৪ যুদ্ধ জাহাজটিতে ৭৫ শতাংশই দেশীয় যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছে। আর এই সাফল্য আত্মনির্ভর ভারতের (Aatmanirbhar Bharat) পথে দেশকে অনেকটাই এগিয়ে দেবে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে ভারত মহাসাগরের গুরুত্ব বেড়েছে এবং এই অঞ্চলের প্রধান নিরাপত্তা প্রদানকারী হওয়ার বড় স্বার্থ ভারতেরও রয়েছে। তাই নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন এই জাহাজটি ভারতের নৌবাহিনীর শক্তি বাড়াবে, এটা বলাই যায়।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক (Defence Ministry) এক বিবৃতিতে বলেছে, বিশাখাপত্তনম জাহাজটির হস্তান্তর ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছরের অঙ্গ হিসেবে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ অভিযানের অংশ হিসেবে ভারত সরকার এবং ভারতের নৌবাহিনীর একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। কোভিড জনিত অতিমারি সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় এই ধরনের যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণের ফলে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করবে।

‘আইএনএস বিশাখাপত্তনম’-এর বৈশিষ্ট্য

২০১১ সালে ভারতীয় নৌসেনার আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে সবুজ সঙ্কেত পেয়েছিল “প্রজেক্ট ১৫বি”। এই প্রকল্পের আওতায় চারটি স্টেল্থ গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রথমটি আনুষ্ঠানিক ভাবে নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির পর নামকরণ করা হয়েছে আইএনএস বিশাখাপত্তনম। এটি হল প্রোজেক্ট ১৫বি স্টেলথ গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ারের প্রধান জাহাজ। অর্থাৎ বিশাখাপত্তনম ক্লাসের আরও তিনটি ডেস্ট্রয়ার পাবে নৌবাহিনী। এই তিন জাহাজের নাম দেওয়া হবে– আইএনএস মর্মুগাও, আইএনএস ইম্ফল ও আইএনএস সুরাত।

এই তিন জাহাজের মধ্যে প্রথম দু’টি বেসিন ট্রায়াল চলছে। শেষেরটা নির্মাণ পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে যে, বর্তমানে ভারতীয় নৌসেনার প্রধান স্টেল্থ গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার কলকাতা ক্লাসের (Kolkata Class Destroyers) উন্নত ভার্সন হিসেবেই তৈরি করা হয়েছে এই নতুন যুদ্ধজাহাজগুলি। জাহাজের নকশা তৈরি করেছে ভারতীয় নৌবাহিনীর অধীন ডিরেক্টোরেট অফ নেভাল ডিজাইন। জাহাজটি তৈরি করেছে মুম্বইয়ের মেসার্স মাজগাঁও ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড (Mazagon Dock Shipbuilders Ltd)।

প্রথম জাহাজটির মূল পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছিল ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে। এর নকশায় হুল ফর্ম, প্রপালসন মেশিনারি, মেনি প্লাটফর্ম ইক্যুইপমেন্ট এবং মেজর উইপনস ও সেন্সরের ব্যবস্থা রাখা রয়েছে। এই যুদ্ধজাহাজটি ১৬৩ মিটার দীর্ঘ এবং এর পুরো ওজন ক্ষমতা ৭ হাজার ৪০০ টন।

জাহাজটির সর্বোচ্চ গতি ৩০ নটিক্যাল। জাহাজে একসঙ্গে ৫০ জন অফিসার এবং ২৫০ জন নাবিক-সহ ৩৫০ ক্রুর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এই জাহাজটি নির্মাণে ৭৫ শতাংশই দেশীয় যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছে। ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (DRDO) এর অধীনে ডিফেন্স মেটালার্জিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি (DMRL) দ্বারা তৈরি DMR-249A গ্রেডের ইস্পাত দিয়ে জাহাজটি তৈরি করা হয়েছে।

এই যুদ্ধজাহাজে কী কী রয়েছে?

‘আইএনএস বিশাখাপত্তনম’-এ রয়েছে মিডিয়াম রেঞ্জের সারফেস টু এয়ার মিসাইলস (Medium Range Surface-to-Air Missiles), যেটি তৈরি করেছে ভারত ইলেকট্রনিকস্ লিমিটেড, ব্যাঙ্গালোর। রয়েছে ব্রহ্মস সারফেস টু সারফেস মিসাইল (BrahMos Surface-to-Surface Missiles), এটি তৈরি করেছে ব্রহ্মস অ্যারোস্পেস। এ ছাড়াও রয়েছে টর্পেডো টিউব লঞ্চারস (Indigenous Torpedo Tube Launchers), যা তৈরি করেছে লারসেন এন্ড টুব্রো। রয়েছে অ্যান্টি-সাবমেরিন ইন্ডিজেনাস রকেট লঞ্চারস (Anti-Submarine Indigenous Rocket Launchers) ও ৭৬ মিলিমিটার সুপার রেপিড গান মাউন্ট (76mm Super Rapid Gun Mount), এটি তৈরি করেছে ভারত হেভি ইলেক্ট্রাইক্যালস লিমিটেড।

প্রজেক্ট ১৫বি-র অধীনে নির্মিত হওয়া জাহাজগুলি দু’টি মাল্টিরোল হেলিকপ্টারও (যেমন সি কিং বা এইচএল ধ্রুব হেলিকপ্টার) বহন করতে পারে। নজরদারি রাডার এবং মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা-সহ অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সেন্সর ইনস্টল করা আছে। উপকূলে, সমুদ্রে এবং আকাশে দূরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে সক্ষম এই যুদ্ধজাহাজ। ‘প্রজেক্ট ১৫বি’-শ্রেণির জাহাজগুলির নকশা কলকাতা ক্লাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি হলেও, এতে অনেক আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। সব চেয়ে বড় পরিবর্তন হল, এই জাহাজের স্টেল্থ বৈশিষ্ট্যকে আরও উন্নত করা হয়েছে।

অধিক মাত্রায় অটোমেশন প্রযুক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যাতে জাহাজগুলির আয়ু আরও বাড়বে এবং সমুদ্রে দীর্ঘ সময় থাকতে পারবে। জাহাজের নকশা এমন ভাবে করা হয়েছে, যাতে শত্রুর রাডারে ধরা পড়া কঠিন হবে। কারণ, বাইরের দিকের পুরোটাই রেডার-ট্রান্সপারেট ফিটিং দিতে তৈরি। এই জাহাজ চারটি গ্যাস টারবাইনে চলে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, অত্যাধুনিক অস্ত্রসম্ভার এবং সেন্সরের সাহায্যে এই আইএনএস বিশাখাপত্তনম গোত্রীয় জাহাজগুলি বিশ্বের অন্যতম উন্নত গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার।

প্রজেক্ট ১৫বি কী?

চিনা (China) নৌবাহিনীর শক্তির কথা মাথায় রেখে ২০১১ সালে ভারতীয় নৌসেনার আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে সবুজ সঙ্কেত পেয়েছিল ‘প্রজেক্ট ১৫বি’। এই প্রকল্পের আওতায় চারটি স্টেল্থ গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে ভারতীয় নৌসেনার প্রধান স্টেল্থ গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার কলকাতা ক্লাসের উন্নত ভার্সন হিসেবেই তৈরি করা হয়েছে এই নতুন যুদ্ধজাহাজগুলি। এই শ্রেণিতে মোট চারটি স্টেল্থ গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার তৈরি হচ্ছে। চারটি ডেস্ট্রয়ার নির্মাণের খরচ দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।

সম্প্রতি, দ্বিতীয় দফার মহড়ার জন্য সমুদ্রে নামে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতের প্রথম বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত (INS Vikrant)। আগামী বছরের অগাস্টে ভারতীয় নৌবাহিনীতে (Indian Navy) অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিক্রান্তের।

৪০ হাজার টন ওজনের ভারতে নির্মিত সব চেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী অগাস্ট মাসে প্রথম সমুদ্র মহড়া সম্পন্ন করেছে। আইএনএস বিক্রান্তে ১,৭০০ বেশি সেনা এবং অফিসারের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে মহিলা অফিসারদের থাকার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। এই রণতরীর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২৮ নট (প্রায় ৫২ কিলোমিটার)। এর রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৯০ মিটারেরও বেশি।

প্রজেক্ট ১৫বি সমুদ্র নিরাপত্তায় ভারতের কৌশলগত দক্ষতা বাড়াবে। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চিনের শক্তিশালী নৌবাহিনী রয়েছে। চিন এখন বিশ্বের বৃহত্তম নৌবাহিনীর অধিকারী। ভারতীয় নৌবাহিনীর কমান্ডে যেখানে ২৮৫ জাহাজ রয়েছে, সেখানে বিপরীতে চিনের হাতে রয়েছে ৭৭৭টি জাহাজ। ডেস্ট্রয়ারের দিক দিয়ে দেখলেও চিন এগিয়ে। ভারতের নৌবাহিনীর হাতে বর্তমানে ১০টি ডেস্ট্রয়ার রয়েছে। আর চিনের রয়েছে ৫০টি।

একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে চিন ১৩২টি যুদ্ধ জাহাজ তৈরি করেছে। অন্য দিকে এই সময়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (USA) ৬৮টি জাহাজ নির্মাণ করে। একই সময়ে ভারত ৪৮টি জাহাজ নির্মাণ করেছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, চিনের মোট প্রতিরক্ষা বাজেটের ৫৫ শতাংশ ব্যয় হয় নৌবাহিনীর জন্য।

277 ভিউ

Posted ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৯ নভেম্বর ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com