কক্সবাংলা ডটকম :: মৃত নদীর ফসিল খুঁজে পেয়েছিল পারসিভিয়ারেন্স। বহু যুগ আগে জেজেরো ক্রেটারে বড় বড় নদী বয়ে যেত বলে অনুমান করেছিলেন নাসার বিজ্ঞানীরা। জল মানেই জীবনের ছোঁয়া।
তাই এখন মঙ্গলের (Mars) এবড়ো খেবড়ো জেজেরো ক্রেটারেই ঠাঁই নিয়েছে নাসার রোভার। এখান থেকেই নুড়ি-পাথর, মাটি কুড়িয়ে টিউবে ভরছে। আর তা করতে গিয়েই চমকটা এসেছে। মঙ্গলের মাটিতে পরতে পরতে জড়িয়ে আশে রহস্য।
সেই রহস্যেরই খোঁজ করতে পৃথিবী থেকে পাঠানো হয়েছে পারসিভিয়ারেন্স রোভারকে। সে তার বিশাল রোবোটিক হাত দিয়ে মঙ্গলের মাটি খামচে টিউবে ভরছে। এই টিউব আসবে পৃথিবীতে। আপাতত দুটি টিউব ভরা হয়েছে। তাতে দুটি ছোট আকারের পাথর ভরেছে রোভার।
প্রজেক্ট সায়েন্টিস্ট কেন ফার্লে বলছেন, ৬ ও ৮ সেপ্টেম্বর দুটি পাথর (মার্সিয়ান রক) কুড়িয়ে তার ছবি ও রাসায়নিক উপাদানের প্রাথমিক তথ্য পৃথিবীতে পাঠিয়েছে পারসিভিয়ারেন্স। পাথর দুটি লম্বায় ৬ সেন্টিমিটারের মতো, পরিধিতে পেন্সিলের থেকে সামান্য চওড়া। গবেষক কেন বলছেন, এই দুটি স্যাম্পেল দেখেই চোখ চকচক করছে বিজ্ঞানীদের।
বোঝা গেছে দুটি পাথরই বহু যুগ আগে জলের সংস্পর্শে এসেছিল। তার চিহ্ন রয়েছে। নাসার ভূপদার্থ বিজ্ঞানী কেটি স্ট্যাক বলছেন, মাটির নীচের জলের সংস্পর্শে এসেছিল পাথরগুলি। দুটি পাথরই আগ্নেয়গিরির লাভা থেকে তৈরি।
এদের রাসায়নিক উপাদান বিশ্লেষণ করে মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা সে ব্যাপারে আরও বিশদে জানা যাবে। ছ’টা চাকা নিয়ে মঙ্গলের লাল মাটিতে তরতরিয়ে ছুটে চলেছে নাসার পারসিভিয়ারেন্স রোভার। জেজেরো ক্রেটারে নামার পর থেকে তার আর এক মুহূর্ত বিশ্রামের সময় নেই।
এই জেজেরো ক্রেটারেই কোটি কোটি বছর আগে বিলীন হয়ে গেছে বড় বড় নদী। মৃত নদীর ফসিল আর গভীর গিরিখাতের চিহ্ন বইছে এই গহ্বর, মঙ্গলের দুর্গমতম স্থানগুলির মধ্যে একটি।
১৮.৩৮ ডিগ্রি উত্তর ও ৭৭.৫৮ ডিগ্রি পূর্বে অবস্থিত এই ক্রেটার। মনে করা হয় এই ক্রেটারের বয়স প্রায় ৩৫০ কোটি বছর। ক্রেটারের চারপাশের পাথুরে জমি, গিরিখাতের ছবি পাঠিয়েছে রোভার। ৪৯ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই গহ্বর বিরাট একটা বাটির মতো। এই ক্রেটারকে বলা হয় মঙ্গলের ডেল্টা।
মনে করা হয় এখানে একসময় বড় বড় নদী বয়ে যেত। ক্রেটারের মাটিতেও জলের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলে। আর যেখানে জল, সেখানে প্রাণের জন্ম হওয়া স্বাভাবিক। কোটি কোটি বছর আগে যখন নদীরা বিলুপ্ত হয়ে যায়নি, তখন এখানে আনুবীক্ষণিক জীবদের জন্ম হয়েছিল বলেই মনে করা হয়। পারসিভিয়ারেন্স এই ক্রেটারে ঘুরে ঘুরেই সেই হারিয়ে যাওয়া প্রাণের খোঁজ করছে।
Posted ১২:৪০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta