কক্সবাংলা ডটকম :: এই বিশ্বের বাইরে আরও কোনও জায়গায় প্রাণের সঞ্চার রয়েছে কি না, তা নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে বহু ধরনের কৌতূহল রয়েছে। এই নিয়ে বহু যুগ ধরে বিজ্ঞানীরা যে গবেষণা করছেন, তার অন্যকতম ভরকেন্দ্র মঙ্গলগ্রহ।
মহাবিশ্বের অন্দরে মঙ্গলে জলের অস্তিত্বের সূত্র ধরে সেই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে কি না, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা চরম জল্পনায় রয়েছেন। কারণ যে গ্রহে জল রয়েছে সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
সেই পরিস্থিতিতে এবার মঙ্গলের বুক থেকে এক নতুন রহস্যময় সিগন্যাল ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা।
এদিকে, জানা যাচ্ছে মঙ্গল গ্রহ থেকে একটি বিশেষ রহস্যময় ব়্যাডার সিগন্যাল আসতে শুরু করেছে। এই ব়্যাডারে কোন সিগন্যাল রয়েছে, তা নিয়ে রয়েছে জল্পনা। বহু বিজ্ঞানীর মতে, এই সমস্ক সিগন্যালে মঙ্গলে কোনও বড় জলাশয়ের অস্তিত্বের কথা বলা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, মঙ্গলে কোনও বড় লেক জাতীয় কোনও বিষয় রয়েছে , তারই গোপন সন্ধান ওই ব়্যাডার দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে রহস্যের বড় দিক হল, এই জলাশয়গুলি আপনাআপনি জল থেকে উঠে আসেনি। বহু বিজ্ঞানীর মতে কাদা থেকে কোনওভাবে জলের সঞ্চার সেই লেকগুলিতে হলেও হতে পারে। তবে গোটা বিষয়টি আপাতত জল্পনা স্তরে।
এদিকে, জানা গিয়েছে, মঙ্গলগ্রহে জল ছাড়াও অন্য কিছু রয়েছে কি না, তা নিয়ে বহুস্তরে জল্পনা রয়েছে। গত এক মাসে এই প্রসঙ্গ নিয়ে পর পর ৩ টি গবেষণা পত্র জমা হয়েছে। সেখানে মঙ্গলগ্রহণ থেকে আসা এই বিরল রহস্যময় সিগন্যাল নিয়ে বহু তথ্য দেওয়া হয়েছে। বহু ধরনের বক্তব্য উঠে আসছে। অনেকেই বলছে, একটা সময় মঙ্গলে বড় জলাশয় ছিল, তবে তা শুকিয়ে যেতে শুরু করে। এবিষয়ে ২০১৮ সালে ইতালির বিজ্ঞানী রবার্টো ওরোসাইয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলে সাবসার্ফেস লেক রয়েছে। মঙ্গলের দক্ষিণ প্রান্তে আইসক্যাপের নিচে রয়েছে এই ধরনে লেক। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির তরফে আসা তথ্য বিশ্লেষণ করে এমনই ঘটনার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে বলে খবর। তবে এঁদের মতে, নতুন সিগন্যাল জলেরই একটি পরিস্থিতির বর্ণনা দিচ্ছে মঙ্গলগ্রহ থেকে।
বহু বিশেষজ্ঞের মতে, মঙ্গলের অন্দরে জল বিশেষ একটি পরিস্থিতিতে রয়েছে। মার্কিন মহাকাশ বিজ্ঞান সংস্থা নাসার প্রপালসন ল্যাাবরেটারির গবেষণা অনুযায়ী, মঙ্গলে তাপমাত্রার যা পরিস্থিতি তাতে কিছুতেই এই লেকগুলিতে জল জলীয় পরিস্থিতিতে থাকতে পারবে না। প্রবল ঠান্ডার মধ্যে সম্ভবত সেখানে জল বরফ অবস্থায় রয়েছে বলে বিশ্বাস অনেকের। বিজ্ঞানী আদিত্য আর খুল্লার ও জেফরি প্লটের গবেষণা পত্রে গত ১৫ বছরের ৪৪ হাজার ব়্যাডার সিগন্যালের উল্লেখ রয়েছে। যা মঙ্গলগ্রহ থেকে এসেছে। বহু সিগন্যালই সেখানে ভূভাগের কাছাকাছি এলাকা থেকে এসেছে। ফলে তার থেকে এঁদের ধারনা যে জল মঙ্গলের অন্দরে লিকুইড অবস্থায় নেই।
যে বিভিন্ন গবেষণাপত্রে মঙ্গলে জলের সঞ্চার থাকার কথা বলা হয়েছে, সেখানে একাধিক এমন গবেষণা পত্রও রয়েছে যেখানে মনে করা হচ্ছে রহস্যময় সিগন্যাল দিয়ে অন্য কিছুর বার্তা পাঠানো হচ্ছে। সম্ভাব্য বার্তার তালিকায় কাদা মাটির উল্লেখ করেছেন বহু বিজ্ঞানী। বহু বিজ্ঞানীর ধারণা মঙ্গলগ্রহ জুড়ে বহু জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে কাদা। যা নিঃসন্দেহে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দাবি বলে মনে করা হচ্ছে।
মঙ্গল থেকে প্রাপ্ত বহু স্মেকটিক নমুনার তথ্য বিশ্লেষণ করছেন বিজ্ঞানীরা। সেখানে দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু এমন পাথরের নমুনা পাওয়া গিয়েছে যা বহু বছর আগে সম্ভবত নিজের মধ্য়ে জলের অস্তিত্ব বহন করেছে। মনে করা হচ্ছে লিকুইড স্তরের জল থেকেই ওই পাথরগুলি তৈরি হয়েছে মঙ্গলের বুকে। এবিষয়ে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে লিকুইড নাইট্রোজেনকে বরফে পরিণত করার চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীরা। এই তাপমাত্রা মঙ্গলের দক্ষিণ পোলে রয়েছে। একবার বরফাঙ্কে যাওয়ার পর যে অস্তিত্ব উঠে আসে ওই নাইট্রোজেনের , তা ব়্য়াডার অবজারভেশনের সঙ্গে হুবহু মিলে যায় বলে জানা যায়।
Posted ৮:১৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ আগস্ট ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta