কক্সবাংলা ডটকম :: ব্ল্যাক হোল (Black Hole)। মহাকাশের এক অতিকায় বিস্ময়। এতদিন জানা ছিল কৃষ্ণ গহ্বরের হাঁ মুখে ঢুকলে আর নিস্তার নেই কারও। এমনকী আলোও (Light) সেখানে সেঁধোলে হারিয়ে যায়। ফলে তার পিছনে আর কিছুই দৃশ্যমান হয় না। কিন্তু অবশেষে জানা গেল, একথা ঠিক নয়।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা ব্ল্যাক হোলের পিছনে আলোর হদিশ পেয়েছেন। আর এর ফলে ফের প্রমাণিত হল বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের (Albert Einstein) মণীষা। একশো বছর আগেই তিনি এমনটাই বলে গিয়েছিলেন।
আইনস্টাইনের অনুমান ছিল, ব্ল্যাক হোলের মহাকর্ষীয় টান এত বেশি যে তা সরলরৈখিক গতিতে চলতে থাকা আলোর গতিপথকেও বেঁকিয়ে দিতে পারে! ব্ল্যাক হোল আলোকে শুষে নেয় না। বলা যায় তাকে ফাঁদে ফেলে। অবশেষে প্রত্যক্ষ প্রমাণ মিলল এমন দাবির। ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে জানা যাচ্ছে বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক এক পর্যবেক্ষণের কথা।
প্রায় ৮০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অন্য এক ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত এক অতিকায় ব্ল্যাক হোল থেকে উজ্জ্বল এক্স রে নির্গত হতে দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। এই নয়া আবিষ্কার ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে এতদিনের ধারণায় বদল আনতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গবেষণাপত্রটির অন্যতম লেখক স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড্যান উইলকিন্স জানিয়েছেন, ‘‘ব্ল্যাক হোলের ভিতরে আলো প্রবেশ করলে তা আর ফিরে আসে না। তাই আমরা কিছুই দেখতে পাই না। আসলে আমরা যে আলোকে আর দেখতে পাই না তার কারণ ব্ল্যাক হোল স্থানকে মুচড়ে দিয়ে আলোকে বেঁকিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে নিজের চারপাশে চৌম্বক ক্ষেত্রও মুচড়ে দেয়।’’
তবে আলোকে যে ব্ল্যাক হোল বেঁকিয়ে দেয় তার প্রমাণ আগেই মিলেছিল। কিন্তু এই প্রথম বিজ্ঞানীরা সেই ঘটনাকে প্রত্যক্ষ করলেন এক অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে। তবে সচেতন ভাবে নয়, কার্যত আচমকাই গবেষক দলের নজরে আসে ওই এক্স রে বিচ্ছুরণ। আর তা থেকেই ধরা পড়ল ব্ল্যাক হোলের ওই কাণ্ড।
এবার ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির সহায়তায় উন্নত প্রযুক্তির টেলিস্কোপ ব্যবহার করে করা হবে বিস্তর গবেষণা। নতুন এ গবেষণায় দেখা হবে আলো কৃষ্ণ গহ্বরে প্রবেশ করার পর কীভাবে বেঁকে যায়। এর আশপাশে থাকা ‘করোনা’ নামক আলোকরশ্মি নিয়েও কাজ করবেন তাঁরা।
Posted ১:২২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta