কক্সবাংলা ডটকম :: পৃথিবীর বাইরে নতুন এক পৃথিবী খোঁজার নেশা মানুষের বহুকালের। এই অনুসন্ধিত্সা থেকেই শুরু মঙ্গলের সন্ধান। মঙ্গল হল সূর্য থেকে চতুর্থ দূরবর্তী গ্রহ এবং বুধের পরেই সৌরজগতের দ্বিতীয়-ক্ষুদ্রতম গ্রহ। পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের গ্রহও। ইংরেজি ভাষায় মঙ্গল গ্রহ রোমান পুরাণের যুদ্ধদেবতা মার্সের নাম বহন করে এবং প্রায়শই এই গ্রহটিকে “লাল গ্রহ” নামে অভিহিত করা হয়। আবার প্রাচীন সুমেরীয়রা মঙ্গল গ্রহকে যুদ্ধ ও প্লেগের দেবতা নিরগাল হিসেবে গণ্য করত।
মঙ্গল একটি শিলাময় গ্রহ এবং এর বায়ুমণ্ডল ঘনত্বহীন। ১৬১০ সালে গ্যালিলিও গ্যালিলেই প্রথম ব্যক্তি যিনি দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে মঙ্গল গ্রহ পর্যবেক্ষণ করেন। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৪৭ কোটি মাইল দূরের এই গ্রহে পৃথিবীর প্রথম চোখ পড়ে অবশ্য ১৯৬০ সালে। তারপর থেকেই চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা-অভিযান।
এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি মনুষ্যবিহীন নভোযান পাঠিয়ে মঙ্গল গ্রহে অনুসন্ধান চালানোও হয়েছে। খুঁজছে প্রাণের অস্তিত্ব। স্বপ্ন দেখছে নতুন বসতি স্থাপনের। বিজ্ঞানীর কীভাবে বাসযোগ্য করে তুলবেন সৌরজগতের এ নতুন গ্রহ, এ নিয়ে চলছে নিরন্তর প্রচেষ্টা। আগামী এক দশকের মধ্যেই মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর তোড়জোড় চলছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার নতুন মহাকাশযান ‘পারসিভিয়ারেন্স রোভার’ লালগ্রহের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করে।
প্রায় ৯ বছর ধরে মঙ্গলের মাটিতে থাকবে ‘পারসিভিয়ারেন্স’। সেখানে ৩০ ধরনের পাথর এবং মাটির নমুনা সংগ্রহ করবে সে। এরপর ২০৩০ সাল নাগাদ ফের পৃথিবীতে ফিরে আসবে। রোভার ফিরে এলে খুলে যেতে পারে মনুষ্য বসতির আরেক নতুন দিগন্ত, এমন আশা নাসার বিজ্ঞানীদের। আমরা সবাই জানি, মঙ্গলে পৌঁছানো বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আপনি যদি এখনকার রকেটচালিত যানে যেতে চান, তবে সময় লাগবে নয় মাস।
আর মঙ্গলে নাসা যে মনুষ্যবিহীন মহাকাশযান পাঠিয়েছে সেগুলো পৌঁছতে ১২৮ দিন থেকে ৩৩৩ দিন সময় নিয়েছে। এদিকে ২০২৩ সাল নাগাদ মঙ্গল অভিযানের প্রতিশ্রতি দিয়েছে নেদারল্যান্ডসের কোম্পানি ‘মার্স ওয়ান’। সেই লক্ষ্যে তারা টিকেটও বিক্রি শুরু করে। যদিও এ নিয়ে নানা বিতর্ক ও সমালোচনার জন্ম নেয়, এ সত্ত্বেও দুই লাখের বেশি মানুষ তাতে সাড়া দেয়। থেমে নেই মার্কিন রকেট নির্মাণ ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানও। তারা বিশেষ এক ধরনের ইঞ্জিন তৈরির কাজ শুরু করেছে।
এতে চড়ে মানুষ মাত্র ৩৯ দিনেই মঙ্গলপৃষ্ঠে পৌঁছাতে পারবে, এমন দাবি গবেষকদের। এতসব বিশ্লেষণ, প্রচেষ্টা, পরিকল্পনা সবই তো গেল। তো, সেখানে গেলে মানুষ সর্বোচ্চ কতদিন টিকতে পারবে, ভেবেছেন? এর উত্তরে মার্কিন গবেষকরা বলেন, মঙ্গলগ্রহের প্রতিকূল পরিবেশ ও সেখানে তৈরি করা অবকাঠামো বিবেচনায় নিলেও মাত্র ৬৮ দিন পর থেকেই ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে পড়তে হবে মানুষকে! এ থেকে উত্তোরণেনর পথ কী, সেটাই এখন দেখার পালা!
Posted ৪:৩০ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২০ অক্টোবর ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta