মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প যুগের অবসান,প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন বাইডেন : সুফল পেতে পারে বাংলাদেশ

বুধবার, ২০ জানুয়ারি ২০২১
305 ভিউ
যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প যুগের অবসান,প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন বাইডেন : সুফল পেতে পারে বাংলাদেশ

কক্সবাংলা ডটকম(২০ জানুয়ারী) :: করোনা মহামারীর তাণ্ডবের মাঝেই ৪৬তম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথগ্রহণ করলেন জো বিডেন (Joe Biden)। পাশাপাশি প্রথম কোনো নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কামালা হ্যারিস।

স্থানীয় সময় বুধবার (২০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে দশটায় ক্যাপিটল হিলের চত্বরে তাদের অভিষেক অনুষ্ঠান শুরু হয়। শপথ বাক্য পাঠ করতে বেগুনি রঙের ব্লেজার পরে মঞ্চে আসেন কামালা হ্যারিস। তাকে শপথ পড়ান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সোনিয়া সোটোমায়র।

এর মধ্যে দিয়ে মার্কিন ইতিহাসে প্রথম নারী, প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী এবং দক্ষিণ এশীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন তিনি কামালা। শপথ গ্রহণের পর তাকে প্রথম শুভেচ্ছা জানান তার স্বামী তার ডগ এমহফ।

শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা, বিল ক্লিন্টন সহ বিশিষ্টরা। জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন লেডি গাগা (Lady Gaga)। তাঁদের শপথগ্রহণ সময় অভূতপূর্ব বেশ কিছু জিনিস দেখা গেল যা আগে কখনও হয়নি। যার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য হল ক্যাপিটল হিলের ন্যাশনাল মলে দর্শকের অনুপস্থিতি। এর আগে প্রতিবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান যাতে সাধারণ দর্শক দেখতে পারেন, তার জন্য প্রায় দু’লক্ষ টিকিট বিক্রি হয়। এবার কোভিডের ধাক্কায় তা হয়নি। বরং সেই জায়গাটা ভরানো হয়েছে লক্ষ-লক্ষ আমেরিকান পতাকা দিয়ে।

এর আগে প্রখ্যাত মার্কিন সংগীত শিল্পী লেডি গাগার কণ্ঠে পরিবেশিত হয় আমেরিকার জাতীয় সংগীত।

এরপরই মঞ্চে আসেন মার্কিন আরেক সংগীত শিল্পী জেনিফার লোপেজ। তার পারফর্ম শেষ হওয়ার মাত্রই অপেক্ষার অবসানের পালা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী জো বাইডেনকে শপথ পড়ান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্ট। সংবিধানের অনুসারে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার প্রতিশ্রুতি দেন বাইডেন।

এবারই প্রথম বিডেন এবং হ্যারিসের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পূর্ণ শক্তি মোতায়েন করেছে ন্যাশনাল গার্ড। অন্যান্য বার ন্যাশনাল গার্ডের হাজার দশেক নিরাপত্তারক্ষী প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণে হাজির থাকেন। কিন্ত, এবার ২৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ডকেই হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

অন্যান্যবার শপথগ্রহণের পরে হোয়াইট হাউস চত্বরে প্যারেড করেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁকে দেখার জন্য রাস্তায় ভিড় করেন হাজার হাজার আমেরিকানও। কিন্ত, এবার তাও হয়নি না। বিডেনের প্যারেডে দর্শক সমাগম নিষিদ্ধ ছিল।

নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েই রাজনৈতিক উগ্রবাদ, শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য এমনকি ঘরোয়া সন্ত্রাসবাদের শেকড় উপরে ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন জো বাইডেন। একইসঙ্গে নতুন করে শুরুর ডাক দিয়ে মার্কিন রাজনীতিতে যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন।

শপথ নিয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘আমি সকল মার্কিনিদের প্রেসিডেন্ট। বেশ লম্বা সময় ধরেই বক্তব্য রাখেন সদ্য শপথ নেয়া ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তার কণ্ঠে ছিল জাতীয় ঐক্যের ডাক। ক্যাপিটল হিলকে পবিত্র ভূমি উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, কিছু উগ্র জনতা কদিন আগেও সহিংসতা চালিয়ে আমেরিকার ভিত্তিকে কাঁপিয়ে দেয়া চেষ্টা করেছিল। তবে তা সম্ভব হয়নি। আমেরিকাকে নতুন করে গড়ে তুলতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’

বিশেষ করে মার্কিন রাজনীতিতে যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করার আহ্বান জানান তিনি। একের অপরের কথা শোনা এবং সবার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দেখানোর কথাও বলেন বাইডেন।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিসের অভিষেক মার্কিন সমাজ ও সাংস্কৃতিক মানসে পরিবর্তনের পরিচায়ক উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘আজকের এ সময় সব সংকট মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের মুহূর্ত। ঐক্যই এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র। যারা আমাকে ভোট দিয়েছে, আর যারা দেননি সবার জন্যই সমান লড়াই চালিয়ে যাব।’

এতো দূর আসার পেছনে মার্কিনিদের সহযোগিতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সবাইকে বক্তব্য শেষ করেন বাইডেন।

বাইডেনের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর মঞ্চে পারফর্ম করেন মার্কিন কবি আমন্ডা গোরম্যান।

বাইডেনের জন্য মার্কিন রাজনীতির চূড়ায় পৌঁছানোর এই পথ মোটেও সহজ ছিল না। তিনবারের চেষ্টায় এই সাফল্য ধরা দিয়েছে তার হাতে। ১৯৮৭ এবং ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বাইডেন। দু’বারই ব্যর্থ হন। কিন্তু ২০২০ সালে আর নিরাশা নয়, ধরা দিয়েছে বহুল প্রত্যাশিত সেই সফলতা। বিপুল ভোটে জিতে ট্রাম্পের হাত থেকে কেড়ে নিয়েছেন হোয়াইট হাউসের নিয়ন্ত্রণ। আয়োজন নির্বিঘ্ন করতে মোতায়েন রয়েছে ২৫ হাজার সেনা সদস্য।

বাইডেনের নীতির সুফল পেতে পারে বাংলাদেশ

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকারের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরালো হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ। অভিযোগ রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশ তেমন গুরুত্ব পায় না। তবে জো বাইডেনের সম্ভাব্য নীতিগুলোর সুফল বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশিরা পেতে পারেন।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসনের অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হলে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এর সুফল পাবে। বাইডেন প্রশাসন বিশ্ব ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারলে বাংলাদেশও তা থেকে উপকৃত হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, বাইডেনের তুলনামূলক উদার ও মানবিক অভিবাসন নীতিতে যুক্তরাষ্ট্রে ‘অনিয়মিত’ বাংলাদেশিরা ‘নিয়মিত’ অভিবাসী হওয়ার সুযোগ পেতে পারেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসন ট্রাম্প প্রশাসনের চেয়ে সোচ্চার হবে এবং এ সংকটের কার্যকর সমাধানে ভূমিকা রাখবে বলেও বিভিন্ন মহলে আশা আছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সরকারিভাবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাওয়ার প্রত্যাশা জানাতে পারে। তবে বিষয়টি খুব সহজ না-ও হতে পারে।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারও বলেছেন, সম্পর্ক আরো জোরালো হওয়া ছাড়া আর কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা তিনি দেখছেন না। তবে নতুন প্রশাসন কেমন নীতি গ্রহণ করবে, সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মিলার।

তিনি বলেন, বাইডেনের মন্ত্রিসভায় পরিচিত অনেকেই জায়গা পেতে চলেছেন। তাঁদের অনেকেরই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় সত্যিকারের মনোযোগ রয়েছে।

বাইডেন প্রশাসন ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) এগিয়ে নেবে কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমার তেমনটাই মনে হয়। এটা কোন নামে ডাকা হচ্ছে, কিভাবে পুনরায় ব্র্যান্ডিং করা হবে—সেসব কোনো বিষয় না। যুক্তরাষ্ট্রের নজর থাকবে এই অঞ্চলে শক্তিশালী হওয়ার।’

ওয়াশিংটনভিত্তিক নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান উইড্রো উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ সহযোগী মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, ‘বাইডেন প্রশাসনের কাছেও বাংলাদেশ বিশেষ গুরুত্ব পাবে না। তবে বাইডেন প্রশাসন অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইস্যুতে গুরুত্ব দিতে পারে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টি থাকবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাইডেন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরালে বাংলাদেশ পরোক্ষভাবে এর সুফল পাবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারিত হতে পারে।

305 ভিউ

Posted ১১:৪৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২০ জানুয়ারি ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com